এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ভূমি মালিকদের জন্য স্বস্তির খবর এসেছে। এখন থেকে জমি সংক্রান্ত একাধিক জটিল সমস্যা সমাধানে আর আলাদা করে আদালতে মামলা করতে হবে না। ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন অনুযায়ী, মাত্র একটি আবেদন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলেই জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের মাধ্যমে জমির পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো ভূমি মালিকের কাছে যদি মালিকানা প্রমাণের জন্য অন্তত একটি বৈধ দলিল থাকে—যেমন দলিল, খতিয়ান, বাটোয়ারা দলিল বা খাজনার রসিদ—তাহলে তিনি সরাসরি ডিসি অফিসে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যাচাইয়ের পর জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই ব্যবস্থার আওতায় প্রথমত, জোরপূর্বক জমি দখলের ঘটনায় আদালতে না গিয়েই প্রতিকার চাওয়া যাবে। অভিযোগ পেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরেজমিন তদন্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমির দখল ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেবেন। দ্বিতীয়ত, ওয়ারিশি সম্পত্তি নিয়ে অনিয়ম বা বাটোয়ারা ছাড়া জমি দখলের অভিযোগও ডিসি অফিসে জানানো যাবে। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ ছাড়া ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ভুলক্রমে সরকারি খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। সার্ভেয়ারের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে খতিয়ানের ভুল সংশোধন করা হবে। একইভাবে, জনসাধারণের চলাচলের কোনো রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলে এবং বিকল্প পথ না থাকলে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সেই রাস্তা আবার চালু করার ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
অন্যদিকে, অনুমতি ছাড়া খাল খনন বা জমি ভরাট করে অন্যের জমির ক্ষতি করা হলে সেটির বিরুদ্ধেও ডিসি অফিসে অভিযোগ করা যাবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিসি অফিসে আবেদন করতে হলে একটি লিখিত আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদনের সঙ্গে জমির সংশ্লিষ্ট দলিল, খতিয়ান, খাজনার রসিদ বা বাটোয়ারা দলিলের কপি যুক্ত করতে হবে। প্রাথমিক যাচাই শেষে জেলা প্রশাসন প্রয়োজন অনুযায়ী তদন্ত ও শুনানির আয়োজন করবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইন থাকলেও বাস্তবে সব জেলায় এই সেবার কার্যকারিতা একরকম নয়। অনেক জায়গায় এটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে, কিন্তু জনবল ও অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এখনো বড় বাধা।
ভূমি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—জমি সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যায় আগে অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলা উচিত। পাশাপাশি নিজের জমির সব বৈধ কাগজপত্র গুছিয়ে রেখে নির্ধারিত নিয়মে ডিসি অফিসে আবেদন করলে দ্রুত সমাধান পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।