এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এবার উঠে এল আন্তর্জাতিক যোগসূত্র। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাদিকে হত্যার পর মূল খুনিদের সীমান্ত পার হতে সহায়তা করায় ভারতের মেঘালয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন মেঘালয় রাজ্যের বাসিন্দা পুত্তি এবং তার স্বামী। মূলত এই দম্পতিই বাংলাদেশি খুনিদের ভারতীয় ভূখণ্ডে আশ্রয় ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
তদন্তে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল ও আলমগীর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে ফিলিপ ও সঞ্জয় নামের দুই ব্যক্তির মাধ্যমে তারা মেঘালয়ে পৌঁছান। এরপর পুত্তি ও তার স্বামী খুনিদের নিজেদের জিম্মায় নেন এবং সামি নামের এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের সহায়তায় তাদের মেঘালয়ের ‘পুরা’ নামক একটি দুর্গম শহরে নিরাপদে পৌঁছে দেন। ডিএমপি এবং মেঘালয় পুলিশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক তথ্যের আদান-প্রদানের ভিত্তিতে এই দম্পতিকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি ব্লু-প্রিন্ট বা নিখুঁত পরিকল্পনা। খুনিরা ঢাকা থেকে সিএনজি ও প্রাইভেটকার বদলে হালুয়াঘাট সীমান্তে যায়। সীমান্ত পার হওয়ার পর ভারতীয় ভূখণ্ডে আগে থেকেই তাদের জন্য ‘রিসিভিং টিম’ অপেক্ষা করছিল। পুত্তি এবং তার স্বামী মূলত সেই রিসিভিং টিমের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। পুলিশ সন্দেহ করছে, আসামিরা অবৈধ পথে সীমান্ত পার হওয়ায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করা কঠিন ছিল, তবে ভারতীয় এই দম্পতিকে আটকের ফলে খুনিদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওসমান হাদি। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত দেশে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৬ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ডিএমপি জানিয়েছে, মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। একইসাথে ভারতে পালিয়ে থাকা মূল খুনিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।