সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬, ০১:১৭:২১

বাংলাদশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি

বাংলাদশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা লুটের পর বিশ্বের অন্যান্য ব্যাংকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সারা বিশ্বের প্রায় ৩,০০০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমবায় সংস্থা সুইফট। তাদের সাইবার নিরাপত্তা সুপরিশগুলো মেনে চলার জন্য সদস্য ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানানোর পরিকল্পনা করছে।

সুইফটের একজন মুখপাত্র রবিবার আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানিয়েছেন। সুইফট জানিয়েছে, আজ সোমবার তারা ব্যাংকগুলোকে তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পুর্ননিরীক্ষণ করার জন্য লিখিতভাবে সতর্ক করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লুটের ঘটনার প্রেক্ষিতে অভ্যন্তনীণ নিরাপত্তার ব্যাপারে জোর দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে ফোন দেয়াও শুরু করবে সুইফট বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র।

ব্রাসেলস ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সুইফটের মুখপাত্র বলেন, গ্রাহকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুর্ননিরীক্ষণে উৎসাহিত করা ও যেখানে প্রয়োজন সেখানে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করাই এখন আমাদের কাছে অগ্রগণ্য।

গত মাসের শুরুর দিকে অজ্ঞাত হ্যাকাররা সাইবার হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংকের একাউন্ট থেকে ৮০০ কোটি টাকা ফিলিপাইনের কয়েকটি একাউন্টে সরিয়ে নেয়। এ যাবৎ কালের ইতিহাসে সাইবার হামলা চালিয়ে অর্থ লুটের ঘটনার মধ্যে এটি অন্যতম।

এখন পর্যন্ত সুইফট এ হামলার ব্যাপারে খুব বেশি কিছু না বললেও এই ঘটনাটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির কারণে ঘটেছে বলে তারা ইঙ্গিত দিয়েছে।

পূর্বে হ্যাকারদের হামলা থেকে সুরক্ষার জন্য গ্রাহকদের যেসব নিরাপত্তা জনিত পরামর্শ দেয়া হয়েছিল সুইফট তার একটি সামারি তৈরি করছে বলে মুখপাত্র জানিয়েছেন।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা গত বুধবার একটি অভ্যন্তরীণ গোপন তদন্ত রিপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, হ্যাকাররা ব্যাংকের নেটওয়ার্ক পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সুইফট মেসেজের গোপন কোড চুরি করেছে এবং ‘সংবেদনশীল’ ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারে হামলা চালিয়ে লেনদেন সম্পন্ন করেছে।

তদন্তকারীরা আরো জানিয়েছে, হ্যাকাররা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও টার্গেট করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাকের নিয়োগকৃত ফায়ারআই ও ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্স তদন্ত করে এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে তদন্তকারীরা হ্যাকারদের নাম বা টার্গেটকৃত অন্য প্রতিষ্ঠানের নাম জানাতে পারেনি। কিন্তু এই হ্যাকাররাই অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করেছে তা নিশ্চিতভাবেই জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দু’টি।

গতসপ্তাহে বাংলাদেশে ব্যাংকে দাখিলকৃত রিপোর্টে ফায়ারআই জানিয়েছে, একই হ্যাকাররা অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও টার্গেট করেছে এবং অর্থ হাতিয়ে নেয়ার লক্ষ্যেই সুসংগঠিত হামলা চালাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বা ফায়ার আই কর্তৃপক্ষ তদন্ত রিপোর্টের ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হয়নি। তদন্ত রিপোর্টটির বিস্তারিত বিবরণ প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গে।
২১ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে