সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:০৩:০৫

নাজিম হত্যার কোনো ক্লু উদঘাটনের করতে পারেনি!

নাজিম হত্যার কোনো ক্লু উদঘাটনের করতে পারেনি!

নিউজ ডেস্ক : নাজিমউদ্দিন সামাদ হত্যাকাণ্ডের চার দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ক্লু উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনাস্থল রাজধানীর সূত্রাপুর হলেও এই হত্যা পরিকল্পনা ঢাকার বাইরে থেকে করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

মাত্র তিন মাস আগে ঢাকায় আসা নাজিমকে হত্যার পরিকল্পনা সিলেট থেকে হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। চাঞ্চল্যকর এই মামলার ক্লু উদঘাটন করতে সিলেট কেন্দ্রিক তদন্ত শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে নাজিমের বন্ধু ও ঘনিষ্ঠদের।

পুলিশ ও ডিবি সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের উগ্রপন্থি কিছু যুবককে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সিলেট থেকেই তাকে অনুসরণ শুরু করে দুর্বৃত্তরা। অথবা সিলেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। এসব ধারণাকে সামনে রেখেই তদন্ত করছেন তারা। তবে এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে এমন কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।

কেউ তাকে হুমকি দিয়েছিলেন কি-না তাও নিশ্চিত করতে পারেননি তার বন্ধু ও স্বজনরা। এ বিষয়ে তথ্য উদ্ধার করতে নাজিমের মোবালইফোন ও ফেসবুককে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। একইভাবে ইন্টানেটের বিভিন্ন সাইট পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমীর হামযা, দাওরাতুল খেলাফত, দাওরাতুল ইসলাম, আবু রুহানী, আল ফুরকান প্রভৃতি সাইটগুলো নজরদারি করা হচ্ছে।

সন্দেভাজন এসব সাইট ও ধর্মীয় উগ্রবাদীদের পর্যবেক্ষণ করেও এখন পর্যন্ত নাজিম হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সূত্রমতে, গোয়েন্দাদের ধারণা হত্যার পরিকল্পনা থেকে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত যোগাযোগের জন্য দুর্বৃত্তরা নতুন কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। নতুন কোনো অ্যাপস ব্যবহার করে থাকতে পারে।

এছাড়াও সিলেট ও ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এমন ধর্মীয় উগ্রবাদী যুবকদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। নাজিমের বিভিন্ন লেখা, এসব লেখার সূত্রপাত, এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছিল কি-না এসব বিষয়ে তদন্ত করছেন তারা।

সূত্রাপুরে যে স্থানে নাজিমকে হত্যা করা হয় ওই স্থানের আশপাশে কোন সিসি ক্যামেরা পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, যে কটা সিসি ক্যামেরা রয়েছে তা সড়ক পর্যন্ত ধারণ করতে পারে না। এখন নাজিমের ফেসবুক, ফোন ও বন্ধু-স্বজনদের বক্তব্য থেকে হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা করছেন তারা।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, সিলেটে তার বন্ধু-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখান থেকে ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা করছেন তারা। সেইসঙ্গে অন্যান্য বিষয়কেও তদন্তে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিন। সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, সিলেটে বড় হয়েছেন নাজিম। ঢাকায় এসেছেন মাত্র কয়েক মাস। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতেন সপ্তাহে তিন দিন। যে কারণে তদন্তে সিলেট ও সিলেটের বিভিন্ন ব্যক্তি, বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে নাজিমের সিলেটের কয়েক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার সম্পর্কে তথ্য নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, নাজিম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুলিশ, র‌্যাব ও ডিবি সমন্বয় করে এটি তদন্ত করছে। একই কায়দায় এর আগে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট জামিনে ও পলাতক থাকা জঙ্গিদের বিষয়ে তৎপর হয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্র্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মারুফ হোসেন সর্দার বলেন, তদন্তে সকল বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। জড়িতদের খুঁজে বের করতে প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

উল্লেখ্য, গত ৬ই এপ্রিল রাতে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের একরামপুরের ঋষিকেশ দাশ রোডে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে নাজিমউদ্দিনকে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন। নাজিমউদ্দিন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের টুকাভরাউট গ্রামের মৃত আবদুস সামাদের পুত্র। -সূত্র : মানবজমিন
১১ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে