বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০২:২৬:৫৬

বর্ষবরণে নজিরবিহীন নিরাপত্তাবলয়

বর্ষবরণে নজিরবিহীন নিরাপত্তাবলয়

আহমদুল হাসান আসিক : পহেলা বৈশাখে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রমনার বটমূল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরসহ রাজধানীর ৭০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকছে চার স্তরের বাড়তি নিরাপত্তা। রাজধানীতে মোতায়েন করা হচ্ছে পুলিশ-র‌্যাবের ১৯ হাজার সদস্য। এবারই প্রথম বখাটে, চোর-ছিনতাইকারীদের ধরতে আলাদা টিম গঠন করেছে ডিএমপি। প্রথমবারের মতো মাঠে নামছে ডিএমপির ডগ স্কোয়াড 'কে-৯'। নববর্ষ উৎসবের নিরাপত্তা নিয়ে কয়েক দিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। গতকাল বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ডিএমপির সব পর্যায়ের কর্মকর্তারাও নিরাপত্তা আয়োজনের অংশ হিসেবে মাঠে থাকবেন। নববর্ষ ঘিরে যাতে কেউ ষড়যন্ত্র করতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আজ বুধবার রমনা বটমূল ও এর আশপাশে ডগ স্কোয়াডের মহড়া দেওয়ার কথা রয়েছে। নিরাপত্তা পরিকল্পনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, বিএনসিসি এবং বিভিন্ন সংগঠনকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। অনুষ্ঠান উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে একটি সমন্বিত নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হচ্ছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার নিরাপত্তায় থাকছে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস (সোয়াত)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশের ১৯টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও তিনটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান ও আগতদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হবে।

ডিএমপির একটি সূত্র বলছে, এ বছর দৃশ্যমান নিরাপত্তার ওপর অনেক বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কোনো হুমকি না থাকলেও নগরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গত বছরের বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে টিএসসিতে যৌন হয়রানির ঘটনা ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিরাপত্তায় এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও এক বছরেও ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা যায়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নজিরবিহীন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতেই পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে আরোপ করা হয়েছে কিছু বিধিনিষেধ।

পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারক করছে ডিএমপির এমন একটি সূত্র জানায়, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার অধিকসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ছোট-বড় সব অনুষ্ঠানস্থলেই পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা ও নাশকতা এড়াতে বিকেল ৫টার পর উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রায় মুখোশ পরে অংশ নেওয়ার ওপর আগেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ডিএমপি।

এদিকে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রমনা বটমূলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসে তিনি বলেন, সব ধরনের ঝুঁকি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো রমনা বটমূল সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। তা ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হেলিকপ্টার টহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যবেক্ষণ করা হবে।-সমকাল
১৩এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/অন্তু/এএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে