মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:২০:০৫

যে কারণে অঝোরে কাঁদলেন জাফর ইকবাল

যে কারণে অঝোরে কাঁদলেন জাফর ইকবাল

নিউজ ডেস্ক : গণজাগরণ মঞ্চকর্মী সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ শাহরিয়ার মজুমদারের জন্য অঝরে কাঁদলেন লেখক ও অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আমাদের তো কমনসেন্স আছে। যে মানুষ আত্মহত্যা করবে, সে কি তার মোবাইল চার্জে রেখে যাবে, তার ল্যাপটপ কি চালু থাকবে? এটা যদি সত্যি আত্মহত্যা হয় আমরা মেনে নেব, কিন্তু সে তো আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। শাহরিয়ারের এ ঘটনা আত্মহত্যার সঙ্গে মেলাতে পারি না। সে কেন আত্মহত্যা করল তা জানার অধিকার আমাদের আছে। অনলাইনে শাহরিয়ারের সঙ্গে আমার একটা ছবি দেখলাম। আজ আমি বেঁচে আছি, কিন্তু সে নেই। অথচ প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে আমারই আগে যাওয়ার কথা ছিল।
 
এটুকু বলতেই গলা ভারী হয়ে আসে কথাসাহিত্যিক ও শাবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের। তখন তার চোখের আকাশে ছলছল করছিল জলে ভরা মেঘ।
 
সোমবার দুপুরে শাবি ক্যাম্পাসে শাহরিয়ার মজুমদারের জন্য আয়োজিত শোকসভায় জাফর ইকবাল তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এক সময় প্রিয় ছাত্রের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন দেশের জনপ্রিয় এই লেখক।
 
সোমবার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের ব্যানারে ক্যাম্পাসে শাহরিয়ারের মজুমদারের জন্য শোক মিছিল ও শোকসভার আয়োজন করা হয়।
 
শোকসভায় জাফর ইকবাল বলেন, এত উৎসাহী, সব বিষয়ে আগ্রহী একটা ছেলে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। তিনি শাহরিয়ারের মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনের জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানান।
 
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও অনেক ছাত্রছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। আমরা গিয়েছি, শিক্ষার্থীদের কোলে করে নামিয়েছি। এ অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। যেহেতু আত্মহত্যায় কাউন্সিলিং অথবা এ ধরনের সংগঠনের সঙ্গে প্রফেসর ইয়াসমীন এবং আমি নিজেও জড়িত। মানুষ আত্মহত্যা করার আগে কী করে থাকে এবং তার মানসিক অবস্থা কী হয়- সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। কোনোভাবেই আমি শাহরিয়ারের ঘটনাটি আত্মহত্যার সঙ্গে মিলাতে পারি না।
 
সহযোগী অধ্যাপক ফারুক উদ্দিনের সঞ্চালনায় শোকসভায় অন্যদের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, অধ্যাপক ড. ইউনুছ, শাবির সাবেক শিক্ষার্থী শমসের রাসেল, সহকারী অধ্যাপক মোস্তফা কামাল মাসুদ, সহপাঠী রেজা প্রমুখ।
 
শোকসভায় অন্যান্য শিক্ষকও শাহরিয়ারের মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
 
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আখালিয়ার সুরমা আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর রোডের একটি মেস বাসা থেকে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ছাত্র শহারিয়ার মজুমদারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে