সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬, ০৮:৪৬:৩৩

জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদৎবার্ষিকী আজ

জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদৎবার্ষিকী আজ

নিউজ ডেস্ক : দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী ও চক্রান্তকারী সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান।

জিয়াউর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার এক বার্তায় বলেন, শহীদ জিয়ার অম্লান আদর্শ, দর্শন ও কর্মসূচি আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং দেশীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির নিশ্চয়তা।

জাতির চরম দুঃসময়গুলোতে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন।’

তিনি বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তাঁর অনন্য কৃতিত্বের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। ৭১’ সালে জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা, ঠিক সেই মুহুর্তে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়ার কালূরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। ফলশ্রুতিতে দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এদেশ হানাদারমুক্ত হয়ে স্বাধীন দেশের মাটিতে বাংলাদেশের পতাকা উড্ডীন হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা ও অরাজকতার অমানিশার দুর্যোগের মুখে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশের সিপাহী-জনতার মিলিত শক্তির মিছিলে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করেন।’

‘উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আখ্যা থেকে খাদ্য রপ্তানীকারক দেশে পরিণত করেন। ব্যক্তিজীবনেও দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও সুবিধাবাদের কাছে আত্মসমর্পণকে তিনি ঘৃণা করতেন। তাঁর অন্তর্গত স্বচ্ছতা তাঁকে দিয়েছে এক অনন্য ঈর্ষণীয় উচ্চতা,’ বলেন তিনি।

এ বছর দিনটি উপলক্ষে বিএনপি ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সোমবার (৩০ মে) সকাল ৬টায় পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় প্রতাকা অর্ধনমিত ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ১০টায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের সিনিয়র নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। এছাড়া ওলামা দল কবরের পাশে দোয়া মাহফিল ও ড্যাব রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে।’

ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ৩০ মে, ৩১ মে ও ১ জুন তিন দিনব্যাপি নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিএনপি ছাড়াও ২০ দলীয় জোটের শরিক দল ও সমমনা সংগঠন দিনটি উপলক্ষে কর্মসূচি পালন করবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হওয়ার কিছুদিন পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর তিনি বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।

জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালে ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার বাগবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মনসুর রহমান একজন রসায়নবিদ হিসেবে কলকাতাতে সরকারি চাকরি করতেন। দেশবিভাগের পর (১৯৪৭) তার বাবা করাচি চলে যান। তখন জিয়া কলকাতা হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমি স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঐ স্কুল থেকে তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন এবং তারপর করাচিতে ডি জে কলেজে ভর্তি হন। তাঁর মায়ের নাম জাহানারা খাতুন।

৩০ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে