বুধবার, ০৮ জুন, ২০১৬, ০৯:৫২:২২

সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বাবুল, ‘আম্মু’ বলে কাঁদছে ওরা দু’জন

সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বাবুল, ‘আম্মু’ বলে কাঁদছে ওরা দু’জন

নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুর খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়ায় বাবার বাড়িতে এখনো শোকের মাতম। স্ত্রীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবুল আক্তার সন্তানদের নিয়ে আছেন শ্বশুরবাড়িতেই। তিনি বারবার বিলাপ করে উঠছেন।

তাদের ছেলে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিশু আক্তার মাহমুদ মাহির (৫) কারো সঙ্গে কথা বলছে না। কিছু সময় পরপর শুধু ঢুকরে কেঁদে উঠছে। আর চার বছরের মেয়ে তাবাচ্ছুম তাজনীন বারবার মায়ের খোঁজ করছে। ‘আম্মু’ বলে কেঁদে উঠলে স্বজনরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে মিতুর স্বজনরা বলছেন, মাহিরের স্কুলের নামে মোবাইল ফোনে মিথ্যা ম্যাসেজ দিয়ে রোববার সকালে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে মিতুকে বাসা থেকে বের করা হয়। আগে যাওয়ার কারণে বডিগার্ডও তখন ছিল না। ফলে ওই ম্যাসেজটি খুনিরা পাঠিয়েছে বলেই দাবি স্বজনদের।

স্বজনরা জানান, মিতুর মরদেহ নিয়ে বাবুল আক্তার, তার দুই সন্তান মেরাদিয়ায় পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। বাড়িজুড়ে কান্নার রোল পড়ে এ সময়। দুইদিন পরও মেয়ারিদয়ার ওই বাসায় গিয়ে শোকাবহ সেই পরিবেশই দেখা গেছে। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় প্রায় অচেতন পড়ে আছেন বাবুল। মাঝে-মধ্যেই তিনি মিতুর নাম করে বিলাপ করে উঠছেন। মাহিরকে ঘিরে আছেন স্বজনরা। সে কারো সঙ্গে কথা বলতে চাইছে না। তার দুই চোখ ছলছল।

মিতুর ছোট বোন শায়লা মোশারফের কোলে থেকেও বারবার মার জন্য কাঁদছে তাবুসসুম। ‘আম্মু’ বলে কেঁদে উঠলে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার সান্ত্বনা দিচ্ছেন খালা। শায়লা কেঁদে বলেন, ‘দুই সন্তান ছিল আমার বোনের জানপ্রাণ। আমরা ওদের ক্যামনে বাঁচাবো?’
 
মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘শুনেছি মাহিরের স্কুলে থেকে মিথ্যা ম্যাসেজ দেয়া হয়েছিল তাকে (মিতু)। ওই ম্যাসেজে নির্ধারিত এক ঘণ্টা আগে মাহিরকে স্কুলে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। ওই ম্যাসেজ আর কোনো অভিভাবককে পাঠানো হয়নি। অন্যদিন একজন বডিগার্ড মাহিরকে বাসা থেকে নিয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের একঘণ্টা আগে যাওয়ার কথা থাকায় সেদিন তখনো বডিগার্ড আসেনি। কারা মিথ্যা ম্যাসেজ দিয়েছে তা বের করা দরকার।’

মিতুর মা শাহিদা আক্তার নীলা বিলাপ করে বলেন, ‘মা তোর সন্তানদের এখন কে দেখবে? আমি তো ওদের তোর মতো ভালোবাসা দিতে পারবো না মা। তুই তো চলে গেলি, আমরা তো বেঁচে থেকেও মরে গেছি মা। আমিও পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী ছিলাম। আমার তো এমন হলো না। তোর কেন এমন হলো?’ -বাংলামেইল
৮ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে