শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬, ০২:৫৮:৫০

‘নিহত ১৩২ জনের ৯৫% আওয়ামী লীগের’

‘নিহত ১৩২ জনের ৯৫% আওয়ামী লীগের’

নিউজ ডেস্ক : সদ্য সমাপ্ত নবম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ছয় ধাপে সংঘর্ষে নিহত ১৩২ জনের ৯৫ শতাংশই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচনে ১৩২ জন মানুষের প্রাণ গেল, হাজার হাজার লোক আহত হল। এদের ৯৫ শতাংশই আওয়ামী লীগেরই। তাহলে এই নির্বাচনের দরকারটা কী ছিল? সরকারের উদ্দেশে এমন প্রশ্নও ছুড়ে দেন তিনি।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে মারাত্মক রাজনৈতিক অপরাধ করেছে। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও দেশে আজ গণতন্ত্র ও রাজনীতি নেই। এর চেয়ে বড় বিষাদময় ঘটনা আর কী হতে পারে? পঁচাত্তর সালে সংবিধান থেকে গণতন্ত্র পুরোপুরি তুলে নিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে সংবিধানে গণতন্ত্র আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই।

তিনি বলেন, আগে গণতন্ত্র তুলে নিয়ে একদলীয় শাসন আর এখন গণতন্ত্রের কথা সংবিধানে রেখে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য আরো বেশি ভয়াবহ। কারণ, কাগজে-কলমে গণতন্ত্র আছে অথচ বাস্তবে তা নেই।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বিগত সংসদ নির্বাচনে পাঁচ কোটি ভোটারের প্রয়োজন পড়েনি। ১৫৩টি আসনে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। মন্ত্রিসভার সবাই অনির্বাচিত। এই সরকার শুধু সংসদকেই দুর্বল ও অকার্যকর করেনি, সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকেই তারা ধ্বংস করেছে।’

জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা মওদুদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকায় জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের উত্থান হচ্ছে। আমরা জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদকে ঘৃণা করি। মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, খ্রিস্টান ধর্মযাজকসহ ইতোমধ্যে ২৭টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, কিন্তু এই সরকার এখন পর্যন্ত একটি ঘটনারও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি। অথচ সরকার নাকি জঙ্গিবাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। কিন্তু তাদের কাজকর্মে সেটা দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং বলা যায়, জঙ্গি দমনে সরকারের সততার অভাব রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের একার পক্ষে পুলিশ ও র‌্যাব দিয়ে জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদ দমন করা সম্ভব নয়। কারণ, র‌্যাব-পুলিশের জনবল সীমিত। এটা কেবল গণতান্ত্রিক অংশিদারিত্বমূলক সরকারের পক্ষেই সম্ভব। কিন্তু বর্তমান সরকার অংশিদারিত্বমূলক নয়।’

জঙ্গিবাদ দমনে সরকারকে একটি প্লাটফর্ম তৈরির আহ্বান জানিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমন করতে হলে সরকারকে দু’টি কাজ করতে হবে। একটি হলো জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা, দ্বিতীয়টি হলো জাতীয় ঐক্যের প্লাটফর্ম তৈরি করা। এটি করতে পারলে বিএনপিও সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’

শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএসপিপির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নেতা ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
১৭ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে