ঢাকা : বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বিভিন্ন অঞ্চলে পুরোহিতরা পূজা-পার্বণ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ অবস্থায় হিন্দু সম্প্রদায় দেশে নিরাপদবোধ মনে করছে না।
তারা বলেন, অত্যাচার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সংখ্যালঘুরা দলে দলে দেশ ত্যাগের কথা ভাবছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অল্পদিনের মধ্যে হিন্দু শূন্য হয়ে যাবে দেশ। প্রধানমন্ত্রী, চেয়ারের দিকে না তাকিয়ে আমাদের বাঁচান।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট। গুপ্তহত্যার সব তথ্য আমার কাছে আছে। আমরাও বিশ্বাস করি, সব তথ্য আপনার কাছে আছে।
এতে বলা হয়, খুনি গ্রেফতার ও শাস্তির বিধান না হওয়ায় এবং খুনি চক্রের মূলোৎপাটন না হওয়ায় জনগণ বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছে যে, সরকার ইচ্ছা করেই খুনি চক্রের মূলোৎপাটন করছে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।
এ সময় জোটের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অজন্ত কুমার, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো স্থানে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশত্যাগে বাধ্যকরণ, হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ধর্মান্তকরণ, মঠ মন্দির প্রতিমা ভাঙচুর করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দু পুরোহিতদের ওপর ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, দেশে খুনি ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এ চিরুনি অভিযানের মধ্যেও খুন হচ্ছে। দেশের হিন্দু সম্প্রদায় মনে করে পুলিশ বাহিনীর সক্ষমতা আছে, কিন্তু সরকারের সদিচ্ছা নেই।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনস্বরুপ বলেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল অজুহাতে নয়, প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিন। ক্ষমতায় টিকে থাকা আর ক্ষমতায় বসার লড়াইয়ে সাধারণ জনগণের জীবন আজ ওষ্ঠাগত।
এসময় সংখ্যালঘু হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুানালে এনে শাস্তির বিধান, সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য ৬০টি আসন সংরক্ষণ ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন ও সমহারে মন্ত্রী নিয়োগের দাবি জানান তিনি।
আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে এ দাবি মানা না হলে ১৫ সেপ্টেম্বর সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেন গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।
১৭ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম