কিশোরগঞ্জ: নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ শহর থেকে গ্রামান্তরে। তামান্না ইসলাম (১৯) নামের এক কিশোরী মেয়েটির মনেও এসেছিল ঈদ আনন্দ। কিন্তু তার ঈদটা মাটি হয়ে গেল। ঈদ আনন্দ করবে বলে এসেই সমবয়সীদের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন তামান্না। কয়েকজনকে নিয়ে বিলে গোসল করতেও নামেন। শেষে বিলের পানিতে তলিয়ে যায় তামান্নার ঈদ আনন্দ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর মহল্লার একটি বিল থেকে তামান্নার মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
তামান্নার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার হাটাব গ্রামে। বাবা রফিকুল ইসলাম ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নারায়ণগঞ্জ শাখায় বিক্রয় কর্মকর্তা। তামান্না নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নানা বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর মহল্লায়।
নানা বাড়িতে ঈদ করবেন বলে আগের দিন বুধবার বাবা রফিক, মা মিতা বেগম, দুই ভাই তাছিন ও তাহসানের সঙ্গে তামান্নাও এসেছিলেন। আজ বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে সমবয়সী কয়েকজনকে নিয়ে বাড়ির কাছের একটি বিলের পানিতে গোসল করতে নামেন তামান্না। গোসল করার একপর্যায়ে দুটি শিশুকে পানিতে তলিয়ে যেতে দেখে বাঁচাতে এগিয়ে যান। একপর্যায়ে তামান্না নিজেই পানিতে তলিয়ে যায়। শিশু দুটিকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও নিজের জীবন বাঁচাতে পারেনি সে।
তামান্নার মৃতদেহকে ঘিরে জগন্নাথপুর মহল্লায় শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিল নানা বাড়িতে ঈদ করতে এসে লাশ হয়ে যাওয়ার আফসোস। বাবা ও মা এ কথা বলেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
তামান্নার মামি মাহমুদা বেগম জানায়, তামান্না পড়াশোনায় ছিল বেশ ভালো। তামান্না পিএসসি ও জেএসসিতে বৃত্তি এবং এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছিল। বাবার বাড়িতে তামান্নাকে সমাহিত করা হবে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
২৫ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ