শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬, ১২:১৯:৩৪

এসপি বাবুলকে ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এসপি বাবুলকে ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে বনশ্রীর শ্বশুরালয় থেকে 'নিয়ে যাওয়ার' পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার কয়েকজন আসামির সামনে মুখোমুখি করে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না বিষয়টি শিগগিরই জানা যাবে।'

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে রাজধানীর বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে এসপি বাবুল আক্তারকে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে রাতেই তাকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য (শনিবার) জানান, এসপি বাবুল আক্তারের 'গ্রেফতার' বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। তাকে চট্টগ্রামেও আনা হয়নি।

বাবুল আক্তারকে কেন আটক করা হবে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, অন্য কোনো সংস্থা বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিলেও নিতে পারে। কিন্তু মিতু হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্তকারী হিসেবে আমরা বলতে পারি- এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।

মিতু হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামের পুলিশের হাতে আটক আছেন বাবুলের দুই সোর্সসহ ৬ ব্যক্তি। তাদের মুখোমুখি করে বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে দাবি সূত্রের।

সর্বশেষ মিতু হত্যায় সরাসরি জড়িত সন্দেহে আবু মুছা (৪৫) ও এহতেশামুল হক ভোলা (৩৮) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ভোলার একজন সন্ত্রাসী ছিলেন। এখন তিনি ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা।

আবু মুছা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। অনেক সময় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেন। তার বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার রানীহাট এলাকায়। এসপি বাবুল আক্তারের হাতে একবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে দু'জনই বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন।

উল্লেখ্য, ঢাকায় পুলিশ সদরদফতরে সংযুক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে গত ৫ জুন চট্টগ্রামে তাদের বাসার কাছে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে দুই শিশু ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় শ্বশুর বাড়িতে থাকছিলেন এসপি বাবুল আক্তার। তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পুলিশের ওসি হিসেবে অবসরে যান। বাবা আবদুল ওয়াদদু মিয়াও পুলিশে চাকরি করেছেন।

মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'গতকাল শুক্রবার রাত ১টার দিকে তাদের বনশ্রীর বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যান খিলগাঁও থানার ওসি মঈনুল হোসেন ও মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন।'

তিনি বলেন, 'আইজি সাহেব দেখা করতে বলেছেন বলে বাবুলকে ওরা নিয়ে গেল। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারছি না। যারা নিয়ে গেল তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।'

মিতু হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় যে মামলা হয়েছে, বাবুল আক্তার নিজেই তার বাদী। সে কারণে প্রায়ই তাকে নিজের দায়িত্বের বাইরেও পুলিশের কার্যালয়ে যেতে হতো বলে জানান শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।

তিনি আরও বলেন, 'আগেও ও রাতে গেছে। কিন্তু যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে এমন হয়নি। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না কেন? ফোন বাজছে, ধরছে না কেন? বাসায় দুই বাচ্চা কাঁদছে, মা তো আর নেই।'

তবে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে রামপুরা থানার ওসি (তদন্ত) সফিকুল ইসলাম জানান, তিনিও বিষয়টি শুনেছেন। তবে নিশ্চিত করে বলার মতো কোনো তথ্য তার কাছে নেই।

মিতু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই)। তবে মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যদিও সবগুলো সংস্থা মিলে এখনও তেমন কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।-যুগান্তর
২৫ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে