জাতীয় ডেস্ক: রাজধানীর ভিআইপি এলাকা গুলাশান-২ এর ৭৯ নাম্বার রোডে অবস্থিত হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার ঘটনাটি বিশ্ববাসীর মনে দাগ কেটেছে। সেদিন (শুক্রবার) রাত পৌনে ৯টার দিকে হামলা চালায় জঙ্গিরা। পরের দিন (শনিবার) সকালে অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে জীবিত এবং ২০ মৃতদেহ উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।
নিউইয়র্ক টাইমস-কে জিম্মি দশার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন রেস্টুরেন্টটির রাঁধুনী সুমীর বরাই। যিনি নিজেও বাথরুমে জিম্মিদশায় ছিলেন। তাকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার বিষয়ে সুমীর জানান, বন্দুকধারীরা জিম্মিদের প্রথমে গুলি করে এবং পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে বলে জানিয়েছেন সুমীর। বিদেশিদের একের পর এক হত্যা করলেও বন্দুকধারীরা বেকারির স্টাফ ও সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি বলে দাবি করেন সুমীর।
গভীর রাতের দিকে বন্দুকধারীরা অন্যান্য জিম্মিদের চা এবং কফি পরিবেশন করতে বলে। আর রাত সাড়ে তিনটার দিকে মুসলমান জিম্মিদের জন্য সেহেরিতে মাছ এবং চিংড়ি পরিবেশনের আদেশ দেয়।
বন্দুকধারীদের একেবারে কাছ থেকে দেখা ও তাদের সাথে কথোপকথনের অভিজ্ঞতা থেকে সুমীর বরাই বলেন, তারা খুবই শিক্ষিত এবং স্মার্ট। তাদেরকে দেখে কেউ মনে করবে না যে, তারা এমন একটা কাজ করতে পারে। সূর্যাস্তের আগে বন্দুকধারীরা বন্দীদের নিয়মিত নামাজ আদায় ও কোরআন পাঠ করতে বলে।
ভয়ঙ্কর সেই রাতের এক পর্যায়ে সুমীর বরাইসহ সাত আটজনকে বন্দুকধারীরা ওই ওয়াশরুমেই তালাবদ্ধ করে রাখে। সেসময়ই প্রথমবারের মতো সুমীর বাইরে থাকা তার আত্মীয়ের কাছে বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে মেসেজ পাঠান। উত্তরে তার ওই আত্মীয় জানান, ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও কোনো অভিযান পরিচালনা করছে না।
সুমীর তখন ওই আত্মীয়কে তার অন্যান্য সহকর্মীদের নাম ও তার নিজের অবস্থান জানায়, যাতে তার সহকর্মীদের অবস্থান নিরাপত্তা বাহিনীকে জানায় এবং ওয়াশরুমের দেয়াল ভেঙে তাদের উদ্ধার করতে পারে।
৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর