সোমবার, ০৪ জুলাই, ২০১৬, ০৪:৩৭:০২

গুলশানে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও রেহাই দেয়নি তরুণ ঘাতকরা

গুলশানে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও রেহাই দেয়নি তরুণ ঘাতকরা

নিউজ ডেস্ক : ঢাকায় বসবাসকারী বিদেশিদের বড় অংশ ফ্যাশন এবং বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত।  গত শুক্রবার রাতে যে ৯জন ইতালীয় নাগরিক জঙ্গিদের হাতে খুন হয়েছেন, তাদেরই কয়েকজন ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার বা পোশাক ব্যবসায়ী।

৩৩ বছর বয়সী সাইমনা মন্টি ছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।  দেখে না বোঝার কথা নয়।  সেই সাইমনা মন্টিকেও কুপিয়ে মেরেছে তরুণ ঘাতকরা।  এ তথ্য একটি গণমাধ্যমে জানা গেছে।

দক্ষিণ ইতালির ছোট্ট শহর ম্যাগলিয়ানো স্যাবিনো থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ঢাকা গিয়েছিলেন সাইমনা।  দীর্ঘ ছুটির পর চলতি সপ্তাহেই দেশে ফেরার পরিকল্পনা ছিল তার।

তার আগে কয়েকজন ইতালীয় বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে পরশু রাতে ‘হোলি আর্টিজান বেকারি’তে গিয়েছিলেন তিনি।  সাইমনার দাদা লুকা গির্জার যাজক।  

তার কথায়, ‘আমার বোনের শহিদ হওয়া এবং আমার পরিবারের যন্ত্রণা বিশ্বভ্রাতৃত্বকে আরো শক্তিশালী করবে।’

সাইমনার খবরে ভাইরাল ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া।  জনৈক বাংলাদেশি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ওরা রাক্ষস! একজন অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যা করল’!

ঢাকার এক ব্যবসায়ী লিখেছেন, ‘ইতালির নাগরিক সাইমনা কয়েকদিন আগেই আমাদের দপ্তরে এসেছিলেন।  আমাদের জিনিসপত্র কিনতেন তিনি। খুবই কষ্ট হচ্ছে’।

একটি ফ্যাশন ডিজাইনিং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৫২ বছর বয়সী নাদিয়া বেনেদেত্তি।  তার ভাইঝি জিউলিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের আর দেখা হবে না।  ফ্যাশন নিয়ে আলোচনাও হবে না।...

তিনি লিখেছেন, তবে ওদের (সন্ত্রাসবাদী) আর এমন হত্যালীলা চালাতে দেওয়া যাবে না।  ওরা যেন জিততে না পারে’।

নেপলসের বাসিন্দা তথা একটি পোশাক সংস্থার মালিক ক্লদিও কাপেল্লি (৪৫)।  পাঁচ বছর ধরে রয়েছেন ঢাকায়।  তার বোন বলেছেন, ‘আমরা স্তম্ভিত!’

ঘটনার রাতে মোট ১০ জন ইতালীয় বেকারিতে ছিলেন।  তাদের মধ্যে বেঁচে গিয়েছেন শুধু জিয়ান গ্যালিয়াজো বসেত্তি।  তবে মারা গেছেন তার স্ত্রী ক্লদিয়া মারিয়া দি’আন্তোনা।

গুলশানের সন্ত্রাসবাদী হামলায় মারা গেছেন সাতজন জাপানি নাগরিক।  জাপানের মুখ্য ক্যাবিনেট সচিব ইয়োশিহিদে সুগা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ এবং দু’জন মহিলা।

এক জাপানি নাগরিক গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে।  বাংলাদেশের সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, নিহত সাতজনের মধ্যে ছ’জনই জাপানের সাহায্যপ্রাপ্ত ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।  পরশু রাতে তারা একসঙ্গেই খেতে গিয়েছিলেন ওই বেকারিতে।

নিহত তিন বাংলাদেশির মধ্যে রয়েছেন ‘আর্ট প্রোমোটার’ ইশরাত আখন্দ।  শিল্পীদের স্বপ্ন নিয়ে কারবার করা ইশরাত পরিচিত মহলে বলতেন, প্রতিভাধর শিল্পীদের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুলে ধরতেই তার এ পেশায় আসা।

দু’দশকে প্রায় ২০০ জন শিল্পীকে পরিচিতি দিয়েছেন তিনি।  নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শিল্পপতি লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ হোসেন (২০) এবং আবিন্তা কবির (১৮)।  
৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে