মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই, ২০১৬, ০৭:২৭:১৮

গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলা, মূলহোতা কে?

গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলা, মূলহোতা কে?

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে এ যাবৎকালের ভয়াবহ হামলার মূলহোতা কে- এ নিয়েই সরব আলোচনা।  এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না দেশসহ বিশ্ববাসী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মূলহোতাকে খুঁজে বের করতে মাঠে রয়েছে।  নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর ৬ সদস্যকে সন্দেহ করছে পুলিশ।

হামলার তদন্তে নিয়োজিত এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রয়টার্সের খবরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গিদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ওই ৬ জনকেই মূলহোতা মনে করা হচ্ছে।

গুলশান হামলার মামলায় তাদের আসামি দেখানো হয়েছে।  ওই ছয়জনের খোঁজে মঙ্গলবার অভিযান পরিচালিত হওয়ার কথাও জানিয়েছে পুলিশ।

গুলশানের হামলার ঘটনায় জেএমবির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে শুরু থেকেই সন্দেহ করে আসছে পুলিশ। তদন্তের সঙ্গে জড়িত ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম রয়টার্সকে বলেন, জেএমবির ছয় সদস্যকে এ মামলায় অভিযুক্ত দেখানো হয়েছে।  তারা ঘটনার মূলহোতা হতে পারে।  তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরজুড়ে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে জেএমবির জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।  সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ক্লু পাওয়ার আশায় ১৩০ জনেরও বেশি জেএমবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।  

তিনি বলেন, তবে জানি না, হামলার পেছনে মূলহোতা কে বা কারা।  শুধু এটুকুই জানি, রেস্টুরেন্টে হামলার জন্য এসব তরুণদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।  এক্ষেত্রে কোনো বিদেশি গোষ্ঠীর সংযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যারাতে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।  গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনায় ডিবির সহকারী (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন নিহত হন।

হামলাকারীরা রাতেই দেশি-বিদেশিসহ ২০ জনকে গলা কেটে হত্যা করে।

শনিবার সকালে রেস্টুরেন্টটিতে কমান্ডো অভিযান চালানো হয়।  অভিযানে ৬ হামলাকারী নিহত হয় বলে আইএসপিআইআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

আর্টিজানের মালিকের দাবি, ৬ জনের একজন সাইফুল চৌধুরী।  তিনি আর্টিজানের কুক ছিলেন। এরই মধ্যে বাকি ৫ হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে।

তারা হলেন নিবরাস ইসলাম, রোহান ইমতিয়াজ, মীর সামিহ মোবাশ্বির, খায়রুল ইসলাম পায়েল এবং শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।  আত্মীয় ও পরিচিতজনরা তাদের ছবি দেখে শনাক্ত করেন।

৫ হামলাকারীর প্রত্যেকেই বেশ কিছুদিন আগে বাসা ছেড়ে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।  এদের তিনজন রাজধানীর বিভিন্ন নামিদামি স্কুল-কলেজে পড়েছে বলে তাদেরই বন্ধুরা দাবি করেছে।

এদের মধ্যে দুজন মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো।  তাদের দুজনের একজন নিবরাস ইসলাম।  নিবরাস খুব একটা ধার্মিকও ছিল না।
 
এদিকে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে যারা হামলা চালিয়েছে তারা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ অভিযোগ করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গুলশানে হামলা চালিয়ে যারা দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন সময় যে সকল জঙ্গি কর্মকাণ্ড ইতোপূর্বে সংঘটিত হয়েছে এ ঘটনা তারই অনুবৃত্তিক্রমে ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, কিছু জঙ্গি সংগঠন তাদের হীন স্বার্থ কায়েমের জন্য শিক্ষিত কোমলমতী তরুণ ও যুবকদের ধর্মের নামে বিপথঘামী করেছে এবং তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
৫ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে