নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলাকারী নিহত দুই জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজ ও মীর সাবিহ মোবাশ্বিরের বাবা তাদের সন্তানের কর্মকাণ্ডের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
এই দুই জঙ্গি হামলায় অংশ নেয়ার আগে দীর্ঘদিন নিখোঁজ ছিল। তাদের নামে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডিও করা হয়েছিল।
ঘটনার পরদিনই জঙ্গিদের কয়েকজনের পরিচয় প্রকাশিত হয়।
জানা গেছে, রোহান ইমতিয়াজের বাবা ইমতিয়াজ খান বাবুল ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ক্রীড়া ও পাঠাগার সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি সেক্রেটারিও।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে ইমতিয়াজ খান বাবুল বলেন, আমি একজন ব্যর্থ বাবা। আমার ছেলের কর্মকাণ্ডের জন্যে আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি তার লাশ আনতেও যাইনি।
অন্যদিকে মোবাশ্বিরের বাবা মীর হায়াত কবীর সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ও আমার ছেলে হতে পারে না। আমি যদি জানতাম ও সেখানে যাচ্ছে, তবে জীবন দিয়ে হলেও তাকে থামাতাম।
একটি টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানির এক্সিকিউটিভ হায়াত কবীর। তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
মুসলিম পরিবারের সন্তান সামিহ সবসময় ধর্মের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল। পরিবার কখনো তার ধর্মবিশ্বাসকে নিরুৎসাহিত করতো না। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করা ছেলে যেন ইসলামের ব্যাপারে বিকৃত ধারণা না পায় সে ব্যাপারে তার বাবার সচেতনতাও ছিল। সেজন্যে তিনি সামিহকে পবিত্র কোরআনের ইংরেজি সংস্করণও দিয়েছিলেন।
২৯ ফেব্রুয়ারি সামিহ মোবাশ্বির নিখোঁজ হওয়ার পর গুলশান থানায় জিডি করেছিল তার পরিবার।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যারাতে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনায় ডিবির সহকারী (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন নিহত হন।
হামলাকারীরা রাতেই দেশি-বিদেশিসহ ২০ জনকে গলা কেটে হত্যা করে।
শনিবার সকালে রেস্টুরেন্টটিতে কমান্ডো অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৬ হামলাকারী নিহত হয় বলে আইএসপিআইআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
আর্টিজানের মালিকের দাবি, ৬ জনের একজন সাইফুল চৌধুরী। তিনি আর্টিজানের কুক ছিলেন। এরই মধ্যে বাকি ৫ হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে।
তারা হলেন নিবরাস ইসলাম, রোহান ইমতিয়াজ, মীর সামিহ মোবাশ্বির, খায়রুল ইসলাম পায়েল এবং শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। আত্মীয় ও পরিচিতজনরা তাদের ছবি দেখে শনাক্ত করেন।
৫ হামলাকারীর প্রত্যেকেই বেশ কিছুদিন আগে বাসা ছেড়ে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। এদের তিনজন রাজধানীর বিভিন্ন নামিদামি স্কুল-কলেজে পড়েছে বলে তাদেরই বন্ধুরা দাবি করেছে।
এদের মধ্যে দুজন মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। তাদের দুজনের একজন নিবরাস ইসলাম। নিবরাস খুব একটা ধার্মিকও ছিল না।
৫ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম