শনিবার, ০৯ জুলাই, ২০১৬, ০৪:২৮:২৭

মির কাসেমকে মুক্ত ও প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাই ছিল জঙ্গিদের লক্ষ্য : আনন্দবাজার

মির কাসেমকে মুক্ত ও প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাই ছিল জঙ্গিদের লক্ষ্য : আনন্দবাজার

নিউজ ডেস্ক : ফাঁসির আসামি জামাতে ইসলামি নেতা মির কাসেম আলিকে জেল থেকে মুক্ত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ছক করাটাও গুলশানের জঙ্গি হানার অন্যতম লক্ষ্য ছিল বলে বাংলাদেশ গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আনন্দবাজার।

আনন্দবাজারের রিপোর্টে বলা হয়, হলি আর্টিজান বেকারির জঙ্গি হামলা নিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি নয়াদিল্লিকে যে প্রাথমিক তথ্য দিয়েছে, তাতে এই সন্দেহের কথা জানানো হয়েছে। ঢাকার দাবি—পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ভারতীয় গোয়েন্দা এবং গুপ্তচর সংস্থাগুলি এখন সেই তথ্যের বিশ্লেষণ করছে বলে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সূত্র জানিয়েছে।

ওই রিপোর্টে জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই পাঁচ জঙ্গিকে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে দু’মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এর পরে চট্টগ্রাম হয়ে তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাইল্যান্ড থেকে এসেছিল জঙ্গিদের অস্ত্র। বিদেশিদের পণবন্দি করে মির কাসেম আলিকে মুক্ত করার পাশাপাশি সেনাদের বিদ্রোহে উস্কানি দেওয়াও উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গিদের।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বক্তব্য তুলে ধরে পত্রিকাটি জানায়, ‘ধনকুবের মির কাসেমকে মুক্ত করাটা লক্ষ্য হয়ে থাকতে পারে। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে এখন একমাত্র তার ফাঁসিই কার্যকর হওয়া বাকি। এই ফাঁসি আটকাতে নানা রকম চক্রান্ত চলছে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতাও তার অঙ্গ হতে পারে।’

আন্তর্জাতিক আদালতে নিজের বিচার প্রক্রিয়া চলার সময়ে মির কাসেম বিশ্বের নামী-দামি আইনজীবীদের নিয়োগ তো করেছিলেনই, বিচার বন্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রচারের জন্য বিপুল অর্থ নিয়োগ করে মার্কিন লবিস্টও নিয়োগ করেছিলেন। তার ফাঁসির রায়ের পরে পাকিস্তানের আইনসভায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। তুরস্ক সরকারও ফাঁসি রদ চেয়ে ঢাকার কাছে সরকারি ভাবে আবেদন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন বিদেশ দফতর থেকেও কাসেমের ফাঁসি রদ চেয়ে সওয়াল করা হয়েছিল।

এছাড়াও আনন্দবাজারের ওই রিপোর্টে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, বর্তমান সরকারকে ফেলে দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ছক হিসাবে জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা পৌঁছেছে। এই হামলার পিছনে সেই টাকাও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে।

বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজারের খবর, শুক্রবার রাতে জঙ্গি হানা চলার সময়ে করাচি এবং মধ্য এশিয়ার মধ্যে কয়েক হাজার ফোন কল গিয়েছে। পাশাপাশি দুবাই, সিরিয়া থেকেও ওই সময় ঢাকায় অজস্র ফোন এসেছে এবং গিয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দারা মনে করছেন, পণবন্দি অবস্থায় করাচি, আরব এবং ঢাকার মধ্যে অজস্র ফোনালাপ থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে কোন কোন দেশ এই ঘটনার নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে।

কলকাতার পত্রিকাটি জানায়, বাংলাদেশ যে তথ্য পাঠিয়েছে তা বিশ্লেষণ করছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীও গুলশান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পাকিস্তান যোগের ব্যাপারে একমত। জঙ্গিরা শেখ হাসিনার উপর প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টা করছে বলেও ভারতীয় গোয়েন্দারা জেনেছেন। এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘বাংলাদেশে আগুন জ্বললে আমাদেরও তার আঁচ পোয়াতে হবে। তাই সতর্ক থাকতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে।’ তিনি জানান, ঢাকাকে জঙ্গি দমনে সব রকম সহায়তা করা হবে।’  সূত্র : আনন্দবাজার

৯ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে