মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬, ১১:০৭:০১

হাসপাতালে যেভাবে কাটল এসপি বাবুলের ঈদ

হাসপাতালে যেভাবে কাটল এসপি বাবুলের ঈদ

ওমর ফারুক : প্রতিবছর পরিবার নিয়ে স্বচ্ছন্দেই ঈদ উদ্‌যাপন করে এসেছেন এসপি বাবুল আক্তার। কখনো ঢাকায় শ্বশুরবাড়ি, কখনো নিজের মা-বাবার সঙ্গে মাগুরায়। আবার কখনো বা কর্মস্থল চট্টগ্রাম অঞ্চলে। কিন্তু স্ত্রী খুন হওয়ার পর ঈদ আনন্দ তো দূরের কথা, স্বাভাবিক জীবন যাপনও তাঁর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির নির্মম পরিহাসের মতো এবার ঈদ কেটেছে তাঁর হাসপাতালে। তিনি নিজে সুস্থ থাকলেও তাঁর একমাত্র ছেলে আখতার মাহমুদ মাহির মা হারানোর ঘটনায় মুষড়ে পড়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে রাজধানীর একটি হাসপাতালে। ঈদের দিনও ছেলেকে নিয়ে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন হাসপাতালে।

শ্বশুরবাড়ি সূত্রে জানা যায়, বাবুল আক্তারের আট বছরের ছেলে আখতার মাহমুদ মাহির মায়ের ওপর নৃশংসতা নিজে সামনে থেকে দেখেছে। এরপর থেকে সে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। সারাক্ষণ মায়ের কথা জিজ্ঞেস করে। ঘুমাতে চায় না। এ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়। তার সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে, কোন কথা বলা যাবে আর কোনটা যাবে না, এমনকি খাওয়া-দাওয়া নিয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে মাহির। তবে বাসায় কোনো আত্মীয় বা বাইরের মানুষ এসে তাকে মায়ের কথা মনে করিয়ে দিলেই সে মাকে খুঁজে অস্থির হয়ে যায়। কারো সঙ্গে কথা বলতে চায় না। বাসার এ রুম ও রুমে খুঁজতে থাকে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে। তাকে প্রায়ই হাসপাতালে নেওয়া হয় চিকিৎসকের কাছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈদুল ফিতরের দুই দিন আগে থেকে মাহির তার মাকে খুব বেশি খোঁজাখুঁজি শুরু করে। মায়ের জন্য অস্বাভাবিক আচরণও করতে থাকে। সেই সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াও প্রায় বন্ধ করে দেয়। এর আগে তাঁর শ্বশুরের পরিবারের পক্ষ থেকে মাহিরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঈদের ছুটিতে বাবুল আক্তার নিজেই তার শিশুসন্তানকে নিয়ে গেছেন হাসপাতালে।

ঈদের দিন ও এর পরও তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেছেন বাবুল আক্তার—এমনটিই জানালেন তাঁর শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মাহির এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এ কারণে তাকে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। দোয়া করবেন যেন শিশুটি তার জীবনের সেই বিভীষিকা ভুলে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।’

পারিবারিক সূত্র জানায়, ছেলের জন্য তার মা পছন্দ অনুযায়ী নতুন পোশাক কিনে দিতেন প্রতিবারই। এবারই প্রথম মাকে ছাড়া ঈদ করায় তার মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে বাবুল আক্তারের সাড়ে চার বছরের মেয়ে তাবাসসুম তাসনিম টাপুর তেমন কিছু বুঝে না। মাকে খুঁজলেও সে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। তার নানার পরিবার শিশু দুটিকে ভালো রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

জানা গেছে, সন্তানদের কষ্ট দেখে বাবুল আক্তারও মুষড়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি। -কালের কণ্ঠ
১২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে