শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৬, ০৪:১৯:১০

সাদা রঙের প্রাইভেটকার ঘিরে রহস্য

সাদা রঙের প্রাইভেটকার ঘিরে রহস্য

আতাউর রহমান: গুলশানে হলি আর্টিসানে রক্তাক্ত হামলার পর পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল ও আশপাশের সড়ক থেকে বিভিন্ন ধরনের ১৩টি গাড়ি ও ১১টি বাইসাইকেল জব্দ করে। এ গাড়িগুলোর মালিক কারা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও। তদন্ত সংস্থার সঙ্গে কোনো মালিকও যোগাযোগ করেননি। এসব গাড়ির কোনোটি হামলাকারী জঙ্গিরা বা তাদের সহযোগীরা ব্যবহার করেছিল কি-না তা যাচাই করছে তদন্ত সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি)। এর মধ্যে সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকার ঘিরে দেখা দিয়েছে রহস্য।

এ ছাড়া হামলার আগে গাড়িগুলোর গতিবিধি জানতে হলি আর্টিসানমুখী গুলশানের বিভিন্ন সড়কের শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও বিশ্লেষণ করছে তদন্ত সংস্থা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জব্দ করা গাড়িগুলোর মধ্যে সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকার দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। এর নম্বরপ্লেটটি পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। মূলত এ গাড়িটি নিয়ে সন্দেহ করছে পুলিশ। ওই গাড়িটি কমান্ডো অভিযানের সময় সাঁজোয়া যানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, না জঙ্গিদেরস ছোড়া গ্রেনেডে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে, তা যাচাই করা হচ্ছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান প্রতিহত করতে জঙ্গিরা গাড়ির ভেতরে কোনো শক্তিশালী বোমা পুঁতে রেখেছিল কি-না তাও তদন্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া কালো রঙের একটি প্রাইভেটকারও ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় জব্দ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, হামলার কিছুক্ষণ আগে ওই রেস্তোরাঁয় একটি প্রাডো জিপ গাড়ি প্রবেশ করে। গাড়িটি বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই রেস্তোরাঁয় গুলির শব্দ পাওয়া যায়। আদৌ এ ধরনের কোনো গাড়ি ঢুকেছিল কি-না, প্রত্যক্ষর্শীদের বিবরণ ঠিক থাকলে সে গাড়িটি কোথায়? তারও অনুসন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।

চাঞ্চল্যকর ওই মামলার তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা সিটির ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, রেস্তোরাঁটির সামনে থেকে জব্দ করা অনেক গাড়িই হয়তো ভিকটিমদের। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মালিকই গাড়ি ফিরে পেতে যোগাযোগ করেননি। এ জন্য এগুলোর মালিকানা যাচাই করতে বিআরটিএর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। গাড়িগুলোর কোনোটি জঙ্গি বা তাদের সহযোগীদের বহনে ব্যবহৃত হয়েছিল কি-না তাও তদন্ত করা হচ্ছে।

সিটির এ কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে জব্দ করা বেশ কিছু আলামত পরীক্ষার জন্য সিআইডির ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলামত বিদেশের কোনো ল্যাবে পরীক্ষার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে জঙ্গিরা হেঁটে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কোনো গাড়ি দিয়ে রেস্তোরাঁর সামনে বা আশপাশের সড়কে নামিয়ে দেওয়া হয়। মূলত সে গাড়িটি চিহ্নিত করতেই তদন্ত শুরু হয়েছে।


তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন সময় জঙ্গিদের বাইসাইকেল চালিয়ে হামলা চালানোর তথ্য রয়েছে। হলি আর্টিসানের হামলায় জঙ্গিরা এ ধরনের কোনো বাইসাইকেল ব্যবহার করেছে কি-না, তাও তদন্তের আওতায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অনেক বিদেশি স্বল্প দূরত্বে গুলশান এলাকায় বাইসাইকেলে চলাচল করেন। রেস্তোরাঁর কর্মীদেরও সাইকেল থাকতে পারে। তবে এখনও কেউ মালিকানা দাবি না করায় সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রয়োজনে বাইসাইকেলগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষাও করা হতে পারে।-সমকাল

১৬ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে