রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১০:২৬:০৭

চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল ৪ জঙ্গি, সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা!

চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল ৪ জঙ্গি, সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা!

নিউজ ডেস্ক : বর্তমান সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে গুলশান ও শোলাকিয়া হামলা চালানো হয়েছে। হলি আর্টিজান বেকারি অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে ১৭ বিদেশী হত্যার ঘটনায় আটক চার জঙ্গি পুলিশ ও র‌্যাবের কাছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দিয়েছে।

জঙ্গিরা স্বীকার করেছে, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তাদের জিহাদের নামে প্ররোচিত করা হয়েছে। তাদের বুঝানো হয়েছে কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে এ সরকারকে হটাতে হবে। এজন্য সরকারের ওপর বহির্বিশ্বের চাপ প্রয়োগ প্রয়োজন। আর তা করতে হলে বিদেশী নাগরিকের লাশ ফেলতে হবে। এজন্য তারা প্রথমে গুলশানের রেস্তোরাঁয় হামলা করে। আটক জঙ্গিদের মধ্যে বাইক হাসান ওরফে নজরুল, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব গান্ধী, রবিন ও শফিউল এসব তথ্য দিয়েছে।

এদিকে জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ডদের একজন চাকরিচ্যুত সেই মেজর জিয়াকে যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হতে পারে। দুই হামলার পেছনে জঙ্গিদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এমন তিন প্রবাসী বাংলাদেশী এবং একাধিক ব্যবসায়ীর নাম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জঙ্গিদের দেয়া সব তথ্য ভিডিও রেকর্ড করে রেখেছেন গোয়েন্দারা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার বলেন, আটক জঙ্গিদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তারা বলেছে, গুলশানে বিদেশী নাগরিক হত্যা করে সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনা ছিল। তিনি বলেন, তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, গুলশান ও শোলাকিয়া হামলা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ। জঙ্গিদের দেয়া তথ্যের সঙ্গে সরকারের গোয়েন্দা তথ্যের মিল আছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, আটক জঙ্গিদের মধ্যে শফিউল ইসলাম ওরফে শরিফুল এখন র‌্যাব হেফাজতে। আর বাকি তিনজন রয়েছে পুলিশের কাছে। র‌্যাব হেফাজতে শফিউল ও পুলিশের কাছে তিন জঙ্গি আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে প্রায় একই ধরনের তথ্য দিয়েছে। এদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ‘মাস্টারমাইন্ড’, অর্থদাতা, প্রশিক্ষক ও আশ্রয়দাতাদের কয়েকজনকে নজরবন্দি করা হয়েছে।

গোয়েন্দারা আশা করছেন, খুব শিগগিরই গুলশান ও শোলাকিয়া সংক্রান্ত হামলার নেপথ্যের সবাইকেই আইনের আওতায় আনা যাবে। গুলশান ও শোলাকিয়া ঘটনার আগে কারাবন্দি কয়েক জঙ্গির সঙ্গে হামলাকারীদের যোগাযোগের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গুলশান হামলায় বড় ধরনের বাজেট ছিল জঙ্গিদের। আটক জঙ্গিদের কাছে পাওয়া তথ্যে অর্থের জোগানদাতা হিসেবে প্রবাসী তিনজন বাংলাদেশীকে নজরদারির আওতায় আনার জন্য ওইসব দেশকে জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে এক ব্যবসায়ীর পাকিস্তানি কানেকশন রয়েছে।

আটক জঙ্গিদের দেয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে ফেরত উগ্রপন্থীদেরও একই পরিকল্পনা ছিল। তারাও দেশে এসে বড় ধরনের হামলা চালাত। তারা আরও স্বীকার করেছে, অনেকেই দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে এদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো।
আটক জঙ্গি শফিউল ইসলাম স্বীকার করেছে, গুলশানের হামলাকারী নিবরাসের সঙ্গে সে বেশ কিছুদিন ঝিনাইদহে ছিল। সেখানে তার সঙ্গে রায়হান, মিনহাজ্জ ও আবীরসহ সাতজন ছিল।

সে আরও জানায়, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে তাদের সাংগঠনিকভাবে তৎপর করা হচ্ছিল। নেপথ্যে যারা আছে তাদের কাছ থেকে প্রায় সে শুনত, এই সরকারের ওপর বহির্বিশ্বের চাপ বাড়াতে হবে। এজন্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একের পর এক হামলা চালাতে হবে। আটক অপর তিনজন জঙ্গি উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলায় অংশ নেয়। এদের কাছ থেকে পলাশ নামে আরও একজনের তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।

এদিকে জানা গেছে, শোলাকিয়ার হামলায় আটক আরেক জঙ্গি জাহিদুল ইসলাম তানিমের কাছ থেকে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। তানিম বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে।

গোয়েন্দারা বলছেন, তার ফেসবুকে ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের উগ্রবাদীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু পরিবার থেকে তানিম নির্দোষ বলে দাবি করা হয়েছে। -যুগান্তর
১৭ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে