রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১১:৫৭:১০

১১ জনকে খালাসের রায় বহাল

১১ জনকে খালাসের রায় বহাল

নিউজ ডেস্ক : শ্রমিক লীগ নেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে খালাস করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দেন।

ফলে ওই ১১ আসামির কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের তিন আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এস এম শাহজাহান।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, খালাস পাওয়া এই ১১ আসামি এখন কারাগার থেকে বের হতে পারবেন।

আদেশের পর এস এম শাহজাহান বলেন, আদালত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ায়নি। খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনে ‘নো অর্ডার’ হয়েছে। ফলে খালাসপ্রাপ্তদের মুক্তিতে বাধা নেই।

হাই কোর্টে খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- ফয়সাল, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির, খোকন, আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর ও মনির।

এদের মধ্যে নিম্ন আদালতের রায়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। আপিলের রায়ে গত ১৫ জুন তাদের খালাস দেয় হাই কোর্ট। ১১ আসামিকে খালাস করে দেয়া হাইকোর্টের রায় ১৪ জুলাই পর্যান্ত স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সে অনুযায়ী আজ শুনানির জন্য নির্ধারিত দিন ধার্য ছিল।

গত ১৫ জুন আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।

অপরদিকে ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু, মাহবুবুর রহমান, কানা হাফিজ, সোহাগ ও শহিদুল ইসলাম শিপু।

যাবজ্জীবন প্রাপ্ত ৮ আসামি হলেন- মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ আহমদ হোসেন মজনু, আনোয়ার হোসেন আনু, বড় রতন, ছোট জাহাঙ্গীর, আব্দুস সালাম, মশিউর মিশু। অন্যদেরকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। তার সঙ্গে খুন হন ওমর ফারুক রতন নামে আরেকজন।

আহসান উল্লাহ মাস্টার ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে টঙ্গী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি গাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুর পর এখন তার ছেলে জাহিদ আহসান রাসেল ওই আসনের সংসদ সদস্য। ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে এই মামলায় ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ জন এবং আসামিপক্ষে দুজন সাক্ষ্য দেন।

এই মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, খালাস পান অন্য দুজন।
১৭ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে