ঢাকা : একাত্তরে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর একটি আবদার, তা হলো রিভিউ আবেদন শুনানির প্রস্তুতির জন্য দুই মাসের সময় চেয়েছেন তিনি। এ জন্য আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল ২৫ জুলাই সোমবার রিভিউ আবেদনের শুনানি হবে।
মীর কাসেমের মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে সোমবারের কার্যিতালিকায় ৬৩ নাম্বারে রাখা হয়েছে। কার্যতালিকায় শুনানি মুলতবির জন্য আসামিপক্ষের সময় আবেদনের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
মীর কাসেমের ছেলে ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেম জানিয়েছেন, শুনানির প্রস্তুতির জন্য দুই মাসের সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। অন্য বিচারপতিরা হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
এর আগে গত ২১ জুন আসামি পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। গত ১৯ জুন ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মীর কাসেম আলী।
নিয়মানুযায়ী মীর কাসেমের এ আবেদনটি নিষ্পত্তি হলেই বহু মীর কাসেম আলীর এ মামলায় ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করবে সরকার। জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা মীর কাসেম আলীর দণ্ড কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা থাকবে না।
জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের পর মীর কাসেম ছিলেন আলবদর বাহিনীর তৃতীয় প্রধান নেতা।
ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ৮ মার্চ ৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেমের আপিল খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
অন্য বিচারপতিরা হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দুই অভিযোগে মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড এবং আট অভিযোগে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
গত ৮ মার্চ আপিলের রায়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধে তার বিরুদ্ধে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদকে খুনের দায়ে এক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় অভিযোগে ৫৮ বছর কারাদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়েছে।
গত ৬ জুন মীর কাসেম আলীর ২৪৪ পৃষ্ঠার ফাঁসির পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। নিয়মানুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম আলী।
১৯ জুন ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মীর কাসেম আলী। আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে। ২৫ জুলাই রিভিউ শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
রিভিউ আবেদনে রায় বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির কাছে অপরাধ স্বীকার করে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারবে মীর কাসেম আলী। প্রাণ ভিক্ষার প্রার্থনার পর রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করা না করার ওপর সিদ্ধান্ত হবে।
তবে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা নাকচ করলে আসামির দণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না। মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরে মাত্র একটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
২৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম