মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬, ০৮:১৩:১৪

‘মরলে শহিদ, জান্নাতে গেলে হুরপরী’

‘মরলে শহিদ, জান্নাতে গেলে হুরপরী’

ঢাকা : রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গিদের স্লোগান ছিল- ‘মরলে শহিদ হবো, জান্নাতে গিয়ে হুর পরী পাব।  স্লোগান দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টাও করছিল তারা।  তারা পুলিশ ও সরকারকে উদ্দেশ করে গালিগালাজও করে।

সোমবার রাতভর যৌথবাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গি নিহত হন।  এ ঘটনায় আহত হয়ে আটক হয়েছেন একজন।  পালিয়ে গেছেন আরেকজন।

‘অপারেশন স্টোর্ম ২৬’ শুরুর আগে আজান দিয়ে ফজরের নামাজ পড়েছিল জঙ্গিরা।  এরপর ৫টা ৫১ মিনিটে শুরু হয় যৌথবাহিনীর অভিযান।  প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নিপ্পন গণমাধ্যমকে জানান, যৌথবাহিনীর অপারশেনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সহযোগিতা করেছে।

তিনি বলেন, জঙ্গিরা ইসলামী প্রজাতন্ত্র কায়েম, জুলুমবাজদের আস্তানা থাকবে না ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিল।  এসময় তারা পুলিশ ও সরকারকে উদ্দেশ করে গালিগালাজ করে।

মনিরুল ইসলাম নিপ্পন বলেন, শুরুতে তারা ভেতর থেকে বিস্ফোরণ ঘটায়।  আত্মরক্ষার্থে এসময় স্থানীয়দের সরিয়ে দেয় পুলিশ।  বারান্দা ও জানালা দিয়ে দেখা যায়, তারা ভেতরে আজান দিচ্ছিল।  ৮-৯ জন একসঙ্গে সম্ভবত ফজরের নামাজ আদায় করছিল।
বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযানে অংশ নেয়া এক সদস্য জানান।

তিনি জানান, জঙ্গিরা নিজেরা বলাবলি করছিল- মরলে শহিদ হবো, জান্নাতে গিয়ে হুর পাব। ঠিক তেমনিভাবে স্লোগান দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছিল তারা।

এদিকে মিরপুর বাংলা কলেজের ভুয়া পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখিয়ে কল্যাণপুরের ‘জাহাজ বাড়ি’র ওই বাসায় ওঠেছিল জঙ্গিরা।  ওই বাসা থেকে এ ধরনের বেশকিছু ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।  ওই বাসা থেকে রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞানের বেশকিছু বই এবং জিহাদি মতাদর্শের কয়েক বস্তা বইও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তারা।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, নিহত জঙ্গিদের সবাই সচ্ছল পরিবারের সন্তান বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২৬ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডের ৫ তলা ভবনে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হন।  জঙ্গিরা নিহত হওয়ার পর পুলিশ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে।

র‌্যাব-পুলিশের অন্তত এক হাজার সদস্য অভিযানে অংশ নেন।  সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভবন ও তার আশেপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়।  

কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে আটজনের পরিচয় মিলেছে।  অভিযানের সময় গুলিবিদ্ধ আটক যুবকই আটজনের পরিচয় জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশের একটি সূত্র।

নিহতরা হলেন রবিন, অভি, আতিক, সোহান, ইমরান, তাপস, ইকবাল ও সাব্বির।  তবে অপর আরেকজনের পরিচয় জানাতে পারেনি গুলিবিদ্ধ যুবক।

আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় সাংবাদিকদের জানান, হাসান (২০) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়।  রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযানের সময় রাজধানীর কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁচ নম্বর সড়কের জাহাজ বিল্ডিংয়ের চারতলা থেকে দুই যুবক লাফিয়ে পড়ে। পরে পুলিশের গুলিতে আহত হয় যুবক।
২৬ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে