বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬, ০৯:২৭:৪৬

‘মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফজরের নামাজ আদায় করে পোশাক পরিবর্তন করে জঙ্গিরা’

 ‘মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফজরের নামাজ আদায় করে পোশাক পরিবর্তন করে জঙ্গিরা’

ঢাকা : মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফজরের নামাজ আদায় করে পোশাক পরিবর্তন করে নেয় জঙ্গিরা।  নামাজের পর সাধারণ পোশাক বদলে কালো পাঞ্জাবি পরেন তারা।   ওই প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনাস্থল সংলগ্ন আরেকটি ভবন থেকে সারারাত বারবার জঙ্গিদের পর্যবেক্ষণ করছিলেন বলে জানা গেছে।

রাজধানীর কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িতে মঙ্গলবার রাতে চলাকালীন অভিযানের এক প্রত্যক্ষদর্শী এমন তথ্য জানিয়েছেন।  

৫ নম্বর রোডের ৫১ নম্বর বাড়ির জঙ্গি আস্তানার খুব কাছের একটি বাড়ির ৬ তলায় অবস্থান করছিলেন তিনি।  তিনিসহ কয়েকজন প্রতিবেশী ওই জঙ্গিদের পাঁচ তলার ফ্ল্যাটের বারান্দায় দেখতে পান।

জঙ্গিরা বেশ কয়েকবার বারান্দায় আসেন এবং ফজরের নামাজ পর্যন্ত ওই বারান্দার দরজাটি খোলা ছিল বলে জানান ওই ব্যক্তি।  

তিনি জানান, রাতে জঙ্গিদের পরনে ছিল সাধারণ পোশাক।  তাদের কাছে পিস্তল ও ছোরা ছিল।  আমি তাদের ঘরের ভেতর কিছু পোড়াতে দেখি।  সেগুলো টাকা ছিল বলে পরে জানতে পেরেছি।  ফজরের আযানের পর যুবকরা তাদের পোশাক বদলে ফেলে এবং কালো পাঞ্জাবি পরে।

ওই ব্যক্তি জানান, পরে তারা নামাজ পড়ে এবং বারান্দার দরজাটি বন্ধ করে দেয়।  এরপর আমি আর কিছু দেখতে পাইনি।  

তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রধান বাগদাদির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে।  তিনি পুলিশের সাথে জঙ্গিদের কথোপকথনের একটি অডিও ধারণ করেন, যা থেকে জানা যায় তারা তাদের তথাকথিত খলিফা আবু বকর আল-বাগদাদির অনুগত।  ডেই স্টারের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাত দেড়টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন জাহাজবাড়িটি ঘিরে ফেলে জঙ্গিরা পাঁচ তলার বারান্দায় এসে পুলিশের উদ্দেশ্যে চিৎকার করতে থাকে।  এলাকাবাসীর কাছে বাড়িটি ‘জাহাজবাড়ি’ নামে পরিচিত হলেও বাড়িটির প্রকৃত নাম ‘তাজ মঞ্জিল’।

অডিওতে, আমরা আমাদের খলিফা আবু বকর আল বাগদাদির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছি।  আমরা তার কথা শুনবো।  সুখে দুঃখে আমরা সবসময় তার সাথেই আছি।  ইনশাআল্লাহ।  আল্লাহু আকবার!

তবে ধারণকৃত অডিওটির বেশির ভাগই এত বেশি কোলাহলপূর্ণ ছিল যে, তা বুঝতে অসুবিধা হয়।  যিনি অডিওটি ধারণ করেন তিনি আলোক-স্বল্পতার জন্য ভিডিও ধারণ করতে পারেননি বলে জানান।

মধ্যরাতে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে জাহাজবাড়িতে মারাত্মক কিছু ঘটছে বলে প্রতিবেশীরা আন্দাজ করতে পারেন।  বিস্ফোরণের পর কিছু গুলির শব্দ পাওয়া যায় এবং এর কিছুক্ষণ পর সেখানে নীরবতা নেমে আসে।

জঙ্গিরা বলতে থাকে, তোমাদের বুলেট-প্রুফ জ্যাকেটের প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু আমাদের তা দরকার নেই।  কেননা আমরা আল্লাহর সৈনিক।  যদি সাহস থাকে বুলেট-প্রুফ জ্যাকেট খুলে সামনে আসো।  আমরা শহীদ হব এবং বেহেশতে যাব, কোনো কিছুর পরোয়া করি না আমরা।
২৭ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে