বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬, ০১:৫২:১২

গুলশান হামলা মনিটরিং হয় মালয়েশিয়ায় বসে

গুলশান হামলা মনিটরিং হয় মালয়েশিয়ায় বসে

আবুল খায়ের: মালয়েশিয়ায় বসে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার মিশন মনিটরিং করেছেন বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের লন্ডন প্রবাসী এক নেতা। ওই নেতা জঙ্গিদের সঙ্গে সরাসরি টেলিফোনে কথা বলেছেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রের ভাষ্যমতে, আরো কয়েকজনের সঙ্গে তার আলাপচারিতার তথ্য পাওয়া গেছে। হামলার তিন দিন আগে ওই নেতার নেতৃত্বে আরও সাতজন লন্ডন থেকে মালয়েশিয়ায় গিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। এদের মধ্যে দেশি ও বিদেশি নাগরিক রয়েছেন।

হামলার ‘সফল মিশন’ শেষে ওই নেতা দলবল নিয়ে থাইল্যান্ড ঘুরে লন্ডন ফিরে যান। যাওয়ার আগে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি দু’জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন।

সূত্র মতে, এর আগেও ওই নেতা মালয়েশিয়ার মোনাস ভার্সিটিতে জঙ্গি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এদিকে গুলশানে হামলা চালানো জঙ্গিরা রাজধানীর মিরপুর ও গাইবান্ধার চরে দু’টি পৃথক আস্তানায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। সেখানে ওই পাঁচজন ছাড়াও বেশ কয়েকজন ছিল। তাদের মধ্যে কল্যানপুরের অভিযানে গুলিবিদ্ধ ও গ্রেফতার রিগ্যানও ছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।

তাছাড়া কল্যানপুরে পুলিশের অভিযানে নিহত শেজাদ রউফ ওরফে অর্ক ওরফে মরক্কোর খালাতো ভাই গুলশানে হামলার পরিকল্পনাকারীদের একজন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

সূত্র মতে শেজাদ রউফের সঙ্গে গুলশানে হামলায় নিহত নিব্রাস ইসলাম ও তাওসীফ হোসেনের ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ছিল। র্যাবের সংশোধিত নিখোঁজদের তালিকায় স্থান পাওয়া তাওসীফ দেশেই আছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা।

বিদেশ ঘুরে বেড়ানো এক খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে জঙ্গি দলে যোগ দেন শেজাদ। ওই খালাতো ভাই বেশ কয়েক মাস আগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। তার জামিনের জন্য একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা তদ্বির করেন বলে তদন্ত সূত্র জানায়।

গুলশান হামলার ব্যাপারে ফেব্রুয়ারিতে যে পরিকল্পনা বৈঠক হয়েছিল সেখানে ওই খালাতো ভাইও অংশ নিয়েছিলেন। বৈঠকে অংশ নেয়া অন্যদের নাম পরিচয়ও পুলিশ জানতে পেরেছে। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেক কিছুই আমরা পেয়েছি।’

এদিকে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রিগ্যান পুরান ঢাকার হোসেনী দালানে তাজিয়া মিছিলে হামলার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল। রিগ্যান পুলিশকে জানিয়েছে, মিরপুরের শাহ আলীতে একটি আস্তানায় তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর পুলিশ আস্তানাটি সনাক্ত করে ফেলায় পাশের একটি আস্তানায় তারা প্রশিক্ষণ নেয়।

সেখানেও পুলিশের নজরদারির কারণে গাইবান্ধার চরাঞ্চলে একটি আস্তানা করে সেখানে প্রশিক্ষণ শেষ করে তারা। এসব প্রশিক্ষণে নিব্রাস, সেজাদ ও তাওসীফ উপস্থিত ছিলো বলে নিশ্চিত করেছে রিগ্যান।

রিগ্যান পুলিশকে জানিয়েছে, বগুড়ার শিহাব নামে একজনের মাধ্যমে সেসহ আরো অনেকে জঙ্গি পথে আসে। শিহাবও কিছুদিন আগে বগুড়া পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বগুড়া কারাগারে আছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রিগ্যান অনেক কিছুই জানে। তার মাধ্যমে জঙ্গিদের পুরো নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তারা। পাশাপাশি র্যাবের সর্বশেষ প্রকাশ করা নিখোঁজ ৬৮ জনের মধ্যে নিহতদের কেউ কেউ থাকতে পারেন। নিখোঁজদের অধিকাংশই দেশে আছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।-ইত্তেফাক

২৮ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে