বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬, ০৭:৫৯:১৬

কেরু ডাকাতের পরকীয়ায় মা, দু’সন্তানসহ ৩ জনকে হত্যা করে যেভাবে

 কেরু ডাকাতের পরকীয়ায় মা, দু’সন্তানসহ ৩ জনকে হত্যা করে যেভাবে

ঢাকা : সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাহসড়কের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডের মোল্লা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের বিপরীতে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ডেইরি ফার্মের কর্মচারীদের শয়ন কক্ষে দুই সহোদরসহ তিন কিশোরকে হত্যার ঘটনা ঘটে।  

এ ঘটনায় দুই সহোদরের মা নাসরিন বেগমকে সাভারের নবীনগর থেকে পুলিশ ও তার কথিত প্রেমিক কেরু ডাকাতকে বৃহস্পতিবার র‌্যাব গ্রেফতার করে।  

নাসরিন বেগম এরই মধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিন কিশোরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মে সাভার হেমায়েতপুরের প্রান্ত ডেইরি ফার্মের শ্রমিকদের থাকার ঘর থেকে দুই সহোদর নাসির (১৫)ও জীবন (১৬) ও তাদের ফুফাত ভাই শাহাদাৎ হোসেনের (১৬) লাশ উদ্ধার করা হয়।  

তিন কিশোর প্রতিদিনের মতো রাতে খাবার খেয়ে ওই কক্ষে ঘুমাতে যায়।  ওইদির সকালে অনেক ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পরে তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।  

এ ঘটনার পর থেকে মায়ের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  হঠাৎ করে নাসরিন বেগম তার বাসা থেকে পালিয়ে যান।  এরপর থেকে তাকে আটক করতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

গত বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় থানা পুলিশ সাভারের নবীনগর থেকে তাকে গ্রেফতার করলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিন কিশোরদের হত্যার কথা স্বীকার করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার এসআই জাকারিয়া হোসেন জানান, নাসরিন বেগমের সঙ্গে সাভারের আমিনবাজারের কেরু ডাকাত নামে একজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এরই মধ্যে নাসরিন বেগম ও কেরু ডাকাতের মধ্যে প্রেমের সূত্র ধরে অবৈধ কার্যকলাপ ছেলে জীবন দেখে ফেলে।  ফলে কেরু ও নাসরিন বেগম তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মতো রাতে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয়।  খাবারের ফলে বিষক্রিয়ায় দুই সহোদর ও তার ফুফাতো ভাই মারা যায়।  অন্যদিকে নাসরিনের স্বামী জিয়াউর রহমান কোনো কারণে রাতে খাবার না খেলে বেঁচে যান।

পুলিশ জানায়, নাসরিন বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিন কিশোরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, নিহত সহোদর নাছির ও জীবন হেমায়েতপুরে একটি গ্যারেজে কাজ করত।  তারা নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার মাগুড়া উত্তর জুমা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।  প্রান্ত ডেইরি ফার্মের কর্মচারী জিয়াউর রহমানের ছেলে তারা।   

অপরজন তাদের ফুফাত ভাই ও একই এলাকার মৃত আতিয়ার হোসেনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন।  শাহাদাৎ হোসেন হোমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার চাইনিজ ইন টাচ্ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টারের কর্মচারী ছিল।
২৮ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে