ঢাকা : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে ও কল্যাণপুরের জাহাজি বাড়িতে অভিযানে নিহত জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া নিয়ে টনক নড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। বাড়ির মালিকদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি আরোপ করায় অনেক বাড়ির ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারা।
অনেক এলাকায় বাড়ি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোনো বাড়িতেই ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে। ফলে নতুন করে আবাসন সংকটে পড়েছেন ব্যাচেলররা।
রাজধানীতে পড়তে আসা, চাকরিজীবী ও নানা কারণে আসা হাজার হাজার ব্যাচেলর কোথায় থাকবেন- এমন প্রশ্ন রাজধানীতে বসবাসকারী বেশির ভাগ ব্যাচেলরের।
গুলশান ও কল্যাণপুরে অভিযানের পর পুলিশ ঢাকা শহরের বিভিন্ন মেসগুলোতে নজরদারি এবং তল্লাশি জোরদার করেছে। সন্দেহভাজন জঙ্গীদের খোঁজে গতরাতে পুলিশ ঢাকার ১১টি মেসে তল্লাশি চালায়, যদিও কাউকে আটক করা হয়নি।
তার দু’দিন আগে কল্যাণপুরে একটি ফ্ল্যাটে পুলিশি অভিযানে ৯ জঙ্গী নিহত হয়। পুলিশি অভিযানের আশঙ্কায় শহরের অনেক বাড়ির মালিক তাদের মেসে থাকা ভাড়াটিয়াদের ওপর নজরদারিও বাড়িয়েছেন। এসব মেসে থাকা ছাত্র এবং চাকরীজীবীরা এমন অবস্থায় তাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মেসগুলোতে যে নজরদারি জোরদার হয়েছে সেটি বেশ টের পাওয়া যায়। বিভিন্ন মেস ঘুরে দেখা গেল, সম্ভাব্য পুলিশি অভিযানের আশঙ্কায় চিন্তিত এগুলোর বাসিন্দারা।
অনেক বাসিন্দা মনে করেন, যেভাবে মেসগুলোতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে তাতে করে বাড়িয়াওয়ালারা মেস বাড়া দেবার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। কারণ পুলিশি অভিযান একটি ‘বাড়তি ঝামেলা’ তৈরি করে বলে তারা মনে করেন।
ঢাকার বকশিবাজারে একটি মেসে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন কবির। তার সাথে একই বাসায় আরো চারজন থাকেন। এদের সবাই বিভিন্ন ধরনের চাকরি করছেন।
তিনি বলেন, চিন্তাটা এখন আরো বাড়ছে। আমাদের চেয়ে বেশি চিন্তা করে মালিকরা। তারা মনে করেন ব্যাচেলরদের রাখছি, কোনো সমস্যা আছে কি-না।
এমনিতেই ঢাকা শহরের বাড়ির মালিকরা ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিতে চায় না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আরো কঠিন হয়ে গেছে।
ঢাকা শহরের মেসগুলোতে কত লোক বসবাস করে তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। প্রতি মাসেই বিভিন্ন মেসে নতুন ভাড়াটে আসা-যাওয়া করে। সেক্ষেত্রে পুরনো ভাড়াটেরা নতুনদের সম্পর্কে আগে থেকেই পুরোপুরি তথ্য জানতে পারেন না ।
পুলিশ মনে করে, জঙ্গিরা সংগঠিত হবার জন্য কখনো কখনো বাসা ভাড়া নেয়। মেসগুলোতে বসবাসরত ছাত্রদের দলে ভেড়ানোর জন্য টার্গেট করা হতে পারে। সেজন্যই পুলিশ নজরদারি বাড়িয়েছে।
পুলিশ বলছে, মেস ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তারা কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করেননি। সব ধরনের ভাড়াটেদের তথ্য থানায় জমা দেয়ার জন্য বাড়ির মালিকদের তাগাদা দেয়া হয়েছে।
২৯ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম