স্পোর্টস ডেস্ক : প্রসঙ্গ ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর। এই সফরে আসার ব্যাপারে ইতোমধ্যে নিজের সম্মতি জানিয়েছেন ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক এলেস্টার কুক। এবার তার দলে যোগ দিলেন দলের আরেক নিয়মিত সদস্য, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বেয়ারস্টো জানিয়েছেন, ‘যদি দলে ডাক পান’, তবে বাংলাদেশ সফরে আসার ব্যাপারে আপত্তি করবেন না তিনি। এ বক্তব্যের মাধ্যমে মূলত বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে এক প্রকার হ্যা-ই করে দিলেন বেয়ারস্টো। কেননা সাম্প্রতিক অতীতে ইংল্যান্ড টেস্ট দলে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান তিনি। তাই পারফর্ম্যান্সজনিত কারণে যে তিনি দলে জায়গা হারাবেন না তা বলাই বাহুল্য।
স্কাই স্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বেয়ারস্টো বলেন, “এটা (বাংলাদেশ সফরে আসা) প্রত্যেকের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে আপনি কাউকে জোর করতে পারেন না। তবে আমি যেভাবে বিষয়টা দেখি তা হল, নিরাপত্তা ঝুঁকি তো সবখানেই আছে। আপনি ডানিংটনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যান, কিংবা লন্ডনের রাস্তায় হাঁটেন, নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থাকবেই। এটাই আমাদের জীবন।”
পরবর্তিতে দ্যা টেলিগ্রাফকে দেয়া আরেক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ সফরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেয়ারস্টো। তিনি বলেন, “রেগির (রেগ ডিকাসন, যিনি নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন) উপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। তার সাথে বহু সফরে গিয়েছি আমি। খুব ছোটবেলা থেকেই তার সাথে আমার পরিচয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমি তাকে বিশ্বাস করি। তারপরও প্রতিনিয়ত তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছি, কেননা এটাই মানুষের স্বভাব। প্রশ্ন না করলে আপনি কোন ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন না, মানসিকভাবে শান্তিও পাবেন না।
“পৃথিবীর কোন জায়গায়ই আর নিরাপদ নেই। ধরুন ইংল্যান্ডের কথা, কিংবা অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা বা বাংলাদেশ। এখনো আমার হাতে কিছুটা সময় আছে সিদ্ধান্ত নেয়ার। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী যে শেষ পর্যন্ত এ সফরের ব্যাপারে আমার সিদ্ধান্ত ইতিবাচকই থাকবে। তারপরও এখনই শতভাগ নিশ্চিত করে কিছু বলে দেয়াটা ঠিক হবে না। কেননা এখনো সফরের জন্য দলই ঘোষণা হয়নি। স্কোয়াডে যদি আমার নাম থাকে কেবল তখনই আমার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হবে।”
তবে নিজে সফরের ব্যাপারে মনস্থির করে ফেললেও, অন্যদের সিদ্ধান্তও তার মতই হবে কিনা এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি বেয়ারস্টো। “এটা একটা স্পর্শকাতর ইস্যু। অন্যদের হয়ে আমার কিছু বলাটা ভাল দেখাবে না। অন্য কেউ আমার হয়ে বললেও সেটা আমি মানতাম না। প্রত্যেকেরই অধিকার আছে নিজের পছন্দ মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেয়ার। আর একটা কথা তো সত্য যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া মোটেই সহজ কাজ না। তাই যদি হত তাহলে তো আমরা সোজা বিমানে চড়ে বসতাম, এই বিষয়টা নিয়ে চারিদিকে এত কথাবার্তা হত না।”
এদিকে বেয়ারস্টো নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেও, এখনো দোটানায় ভুগছেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক এয়ন মরগান। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আরও কিছুটা সময় চান তিনি। পাশাপাশি এটাও স্বীকার করেন যে তার এই সিদ্ধান্তহীনতার পেছনে সংবাদমাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা আছে। “আমি এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারিনি। পাকিস্তান সিরিজ শেষ হলে এই বিষয়টা নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবব। আগামী সপ্তাহেই সবকিছু জানিয়ে দেব। আসলে পত্রপত্রিকা, ইন্টারনেটে ব্যাপারটা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে এত কিছু লেখালেখি হচ্ছে যে আমরা বিভ্রান্ত।”
তবে মরগান এ কথাও দাবি করেছেন যে তার সিদ্ধান্তের ওপর দলের বাকিদের সিদ্ধান্তের কোন প্রভাব পড়বে না। তিনি দলের অধিনায়ক হিসেবে যে সিদ্ধান্তই নেন না কেন, দলের বাকিদের সেই পথেই হাঁটতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই, বরং নিজেদের পছন্দকেই গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি। মরগান বলেন, “প্রত্যেকেরই নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। তার উপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখানে কোন প্রকার জোরাজুরির অবকাশ নেই।”
যদি সবকিছু ঠিক থাকে তবে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশগামী বিমান ধরবেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল, আর তাদের ঢাকায় এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। ছয় সপ্তাহের বাংলাদেশ সফরে তারা টাইগারদের সাথে দুইটি টেস্ট আর তিনটি ওয়ানডেতে মোকাবেলা করবে।-বিডি ক্রিকটিম
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর