মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:১২:২৬

দলে না থাকায় রাজ্জাকের প্রশ্ন: আমার কী আপরাধ?

দলে না থাকায় রাজ্জাকের প্রশ্ন: আমার কী আপরাধ?

স্পোর্টস ডেস্ক : আবদুর রাজ্জাক দলে নেই। জাতীয় দলে একটা সময় গুরুভার থাকতো এই রাজ্জাকের হাতে। দলে না থাকায় রাজ্জাকের প্রশ্ন: আমার কী আপরাধ? বাংলাদেশে আসছে আফগানিস্তান।

আফগানিস্তানের পরে আসবে ইংল্যান্ড। এই দুই দেশের বিপক্ষে রাজ্জাককে হয়তো দেখা যাবে না। কবে তিনি দলে ফিরতে পারবেন এ প্রশ্ন নিয়ে রাজ্জাকের আপেক্ষ। তবে এখনো হাল ছাড়েননি তিনি।

আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ড সিরিজের প্রস্তুতিতে সেখানে ব্যস্ত থাকেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা। মাশরাফি-সাকিবদের অনুশীলন শেষ হওয়ার পর যেখানে নিজের বোলিং ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পান রাজ্জাক।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যাঁকে ছাড়া একটা সময় বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ চিন্তাই করা যেত না, সেই রাজ্জাকের জন্য বাংলাদেশ দলের দরজা অনেক দিন ধরেই বন্ধ।

সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে। একই বছরের সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর থেকে ওয়ানডেতেও তিনি ব্রাত্য। রাজ্জাকের ভবিষ্যৎ আসলে কী? ক্যারিয়ারের সমাপ্তিরেখাটা কি ছুঁয়ে ফেলেছেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি?

গত কিছুদিনে আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে রাজ্জাক-প্রসঙ্গ। কাল বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া উড়ে গেছেন বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। তাঁকে নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণেই সাকিব আল হাসানের সম্ভাব্য সঙ্গী হিসেবে হঠাৎই ৩০ জনের প্রাথমিক দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেনকে।

যার মানে রাজ্জাক আবারও উপেক্ষিতই থেকে গেলেন। কেন, সেই উত্তরটা খুঁজছেন তিনি নিজেও, ‘আমার কী সমস্যা, সেটা কেউ আমাকে বলে না। জানি না, আমার অপরাধ কী বা আমার কোথায় ঘাটতি আছে। গত কয়েক মৌসুমে জাতীয় লিগ, বিসিএল, প্রিমিয়ার লিগে তো মনে হয় না খারাপ খেলেছি।’

গত দুই মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে রাজ্জাকের পরিসংখ্যান যথেষ্ট উজ্জ্বল। বিসিএলের গত মৌসুমে ৬ ম্যাচে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৩৮ উইকেট। আগের মৌসুমে বিসিএলে ৩ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে ছিলেন শীর্ষে। গত মৌসুমে জাতীয় লিগে ৬ ম্যাচে ২৮ উইকেট নিয়েছেন। আগের মৌসুমে জাতীয় লিগে ৭ ম্যাচে ৪১ উইকেট নিয়েছেন, এর চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন মাত্র একজনই। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১১ ম্যাচে পেয়েছেন ১৮ উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স জাতীয় দলের দুয়ার খোলার অন্যতম চাবি হলেও রাজ্জাকের ভাগ্যে অবশ্য শিকে ছেঁড়েনি। একটু ক্ষোভ তাই আছেই, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে আমার যে পারফরম্যান্স, তাতে তো আমাকে ডাকার কথা। আমার সঙ্গে যা হয়েছে, এটা আমার পাওনা ছিল না।’

বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন অবশ্য জাতীয় দলে রাজ্জাক-অধ্যায় শেষ বলে ঘোষণা করে দিচ্ছেন না। তাঁর কথায় বরং আশা খুঁজে পেতে পারেন ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার, ‘এই সিরিজের (আফগানিস্তান) জন্য তাঁকে আমরা চিন্তা করছি না। তবে আমাদের ভাবনায় সে আছে। যেকোনো সময় ওকেও ডাকা হবে। রাজ্জাক একজন সিনিয়র খেলোয়াড়। তাঁর সার্ভিস আমরা আগেও পেয়েছি, ভবিষ্যতেও পেতে চাই। এখানে অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টের কিছু চাহিদা আছে। সেই চাহিদাও আমাদের দেখতে হয়।’

মিনহাজুল যে ‘চাহিদা’র কথা বললেন, সেটিই আসলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে এখানে। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সুদৃষ্টিতে তিনি নেই বলে মোটামুটি সবারই জানা। জাতীয় দলের দরজা তার জন্য তাই আর খুলবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্টই সংশয় আছে। অক্টোবরে ইংল্যান্ড সিরিজেও হয়তো দর্শকই হয়ে থাকতে হবে তাঁকে। যদিও ওয়ানডেতে ইংলিশদের বিপক্ষে রাজ্জাকের পরিসংখ্যানটা উজ্জ্বলই। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১২ উইকেট, যেটি বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এসব পরিসংখ্যান অবশ্য রাজ্জাকের দীর্ঘশ্বাসই বাড়ায়। মানুষ থাকতে চায় বর্তমানে। রাজ্জাকের জন্য সেই বর্তমানটা বড় নিষ্ঠুর। ভবিষ্যতে যে চোখ রাখবেন, সেটিও পারছেন কোথায়!
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে