রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০১:১৬:৫২

ক্যামব্রিজের ছাত্র থেকে নিঁখুত পেশাদার ক্রিকেটার

ক্যামব্রিজের ছাত্র থেকে নিঁখুত পেশাদার ক্রিকেটার

স্পোর্টস ডেস্ক : ‘ক্রিকেটই আমার চূড়ান্ত পরিণতি নয়। এটাকে ঘিরে আমি আমার জীবনে পরিচালনা করছি না। ক্রিকেট আমার জীবনের ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।’

একজন আন্তর্জাতিক পেশাদার ক্রিকেটারের মুখ থেকে আপনি হয়তো এমন কথা কখনো শুনবেন না। কিন্তু জাফর আনসারি বলতে পারেন। কারণ সাধারণ ক্রিকেটারের মতো সাদামাটা জীবন নয় তার। সবার থেকে একটু ভিন্ন তার জীবন।

বাংলাদেশ সফরে ইংল্যান্ড টেস্ট দলে ডাক পাওয়া তিনজন নতুন মুখের একজন আনসারি। সারের হয়ে গতকাল ওয়ারইয়কশায়ারের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হয়েছেন এই অল-রাউন্ড। তাতে কী? ইংলিশ ক্লাবটির হয়ে দীর্ঘদিন ২২ জার্সিটা গায়ে চাপিয়ে আনসারি জয় করে নিয়েছেন ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) মন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকটা হয়েছিল গত বছরের মে মাসে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র ওয়ানডেতে দলে ডাক পেয়েছিলেন আনসারি। পরের মাসে টেস্ট অভিষেকটাও হয়ে যেতে পারত পাকিস্তানের বিপক্ষে। কিন্তু দুর্ভাগ্য! যেদিন জাতীয় দলে খেলতে ডাক এল, সেদিনই সারের হয়ে খেলতে গিয়ে বাঁ হাতের বুড়ো আঙ্গুল ভেঙে ফেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিমানে চাপা হয়নি তার।

তবে আনসারির উপর নজর রাখছিল ইসিবি। এক বছর কঠোর পরিশ্রমের পর আবার দলে ডাক পেলেন তিনি। ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৫, ১৭ ও ১৯ প্রতিটি যুবদলে খেলেছেন আনসারি। কতটা প্রতিভাবান এই ২৪ বছর বয়সী, সেটা বোঝা যায় সতীর্থ গ্যারেথ বেটির কথায়, ‘আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আনসারি এই মুহূর্তে আমাদের দেশের সেরা তরুণ স্পিনার। আশা করি সে ইংল্যান্ডের হয়ে দারুণ ক্যারিয়ার গড়বে।’

কিন্তু এতো ক্রিকেটারের সাদামাটা জীবনই! বৈচিত্র্য কোথায়? না, তার ক্রিকেটের বাইরের জীবনটায় একটু চোখ ভোলান।

জন্ম ইংল্যান্ডের অ্যাসকটে হলেও আনসারির শরীরে বইছে পাকিস্তানি বাবার রক্ত। লাহোর ছেড়ে নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান তার অধ্যাপক বাবা খিজার হুমায়ুন আনসারি। এরপর ইংলিশ এক কন্যাকে বিয়ে করে সেখানেই নতুন জীবন শুরু করেন তিনি। ২০০২ সালে নৃ-গোষ্ঠীগত সম্পর্কের উপর গবেষণার জন্য ইংল্যান্ডের সম্মানজনক ওবিই পুরস্কার পান হুমায়ুন। বাবার মেধাটা পেয়ে যান ছেলেও।

বিখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রদের একজন আনসারি। ঝুলিতে আছে ‘ডাবল-ফার্স্ট’ ডিগ্রি। বর্তমানে ৪০ হাজার শব্দের একটি অভিসন্দর্ভ লিখছেন তিনি। বিষয়: ষাটের দশকে আমেরিকান সিভিল রাইটস আন্দোলনে জড়িত অখ্যাত একটি গোষ্ঠী ‘ডিকান ফর ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস’।

শুধু তাই নয়। জ্যোত্স্না-স্নাত কোন রাতে আনসারির পিয়ানোর সুরে ভাবুক বনে যেতে পারেন যে কেউ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কিংবা পরিবারে পিয়ানোবাদক হিসেবে বেশ নাম-ডাক আছে তার। তাই আনসারি বলতে পারেন, ‘আমি প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম, একই সঙ্গে ক্যামব্রিজের ছাত্র ও একজন নিঁখুত পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমি শ্রেষ্ঠতর হতে পারি। দেখাতে চেয়েছিলাম, দু’টোই করা যায়। আমি যখন ক্রিকেটে এসেছিলাম, কখনও এটা আমার অগ্রাধিকারের তালিকায় ছিল না! —ক্রিকইনফো/ডেইলি মেইল/ইত্তেফাক
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে