বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:৫৯:১৭

‘লড়াকু আফগানিস্তান ক্রিকেট দলকে স্বাগতম’

‘লড়াকু আফগানিস্তান ক্রিকেট দলকে স্বাগতম’

স্পোর্টস ডেস্ক: আফগানিস্তানের ক্রিকেট দল ঢাকায় এসেছে, ওদের স্বাগত। এই দলটাকে আমার ভালো লাগে। ওদের প্রতি বিশেষ একটা অনুভূতি আছে আমার। একটা যুদ্ধবিগ্রহের দেশ, যাদের ক্রিকেট অবকাঠামো বলতে তেমন কিছু নেই, কিন্তু অদম্য মনোবল আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে তারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। বাংলাদেশের পর বিশ্ব ক্রিকেটে যে দেশটির অপার সম্ভাবনা, সেই দেশটি আফগানিস্তান।

ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা নিয়েও তারা দিনদিন ওঠে আসছে। কয়েক মাস আগে তারা জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছে, গত টি-২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও হারিয়ে দিয়েছিল। টি-২০ ক্রিকেটে ওদের র‌্যাংকিং বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে। ওরা ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছে। আফগানদের চোখ টেস্ট ক্রিকেটে। আমার মনে হয়, ওদের সেই লক্ষ পূরণ হবে। আফগানদের এই ওঠে আসা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্যও সুখবর। আফগান বীরদের জন্য শুভ কামনা রইল।

আফগানিস্তান এর আগেও বাংলাদেশে এসেছে, কিন্তু সেটা কোনো না কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে এবারই প্রথম বাংলাদেশে এসেছে তারা। আমি মনে করি, এই সিরিজটা বেশ উপভোগ্য হবে। সন্দেহ নেই, শক্তির বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তান পিছিয়ে, বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে। কিন্তু ওদের অদম্য মনোবল তিন ম্যাচের সিরিজটাকে বেশ জমিয়ে তুলবে বলেই আমার মনে হয়। দুই দেশ এ পর্যন্ত ২টি ওয়ানডে খেলেছে পরস্পরের সঙ্গে। যার একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ, অন্যটি আফগানিস্তান। মনে হয় দুই দেশের পরিসংখ্যাটা হাড্ডাহাড্ডি।

আমি বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাব, কারণ ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজটা আয়োজন করছে। এটা দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। দীর্ঘ ১০ মাস ওয়ানডে ক্রিকেটের বাইরে টাইগাররা। টেস্ট খেলতে যাচ্ছে এক বছরেরও বেশি সময় পর। এত দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকাটা ভালো অভিজ্ঞতা হতে পারে না। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে তাই এই সিরিজটা বেশ ফলদায়ক হবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটা হবে ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য ভালো প্রস্তুতি।

তবে আফগানিস্তানকে মোটেও হাল্কাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সেটা নেবেও না। বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই সিরিজটা বাংলাদেশ নেবে বলে মনে করছি। কারণ ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আফগানদের বিপক্ষে ভালো করে মনোবলটা চাঙ্গা করে রাখা জরুরি। বাংলাদেশ সেটাই করবে।

আমার মনে হয়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করাটাই ভালো। কারণ ওরা যে কোনো কিছু করে ফেলতে পারে। বড় দলকে হারানোর যোগ্যতা আছে, সেটা তো মাঝেমধ্যেই তারা দেখিয়ে দিচ্ছে। শারীরিক গঠন এবং স্ট্যামিনায় ওরা আমাদের খেলোয়াড়দের চেয়ে অনেক এগিয়ে। আফগানদের ফাস্ট বোলিংও বেশ শক্তিশালী। ভালো কয়েকজন ব্যাটসম্যানও আছে দলটিতে। ওদের ব্যাটিং টেকনিকে একসময় ঘাটতি ছিল, সেটাও এখন অনেকটা কাটিয়ে ওঠেছে তারা। ইনজামাম-উল হক কোচ হওয়ার পর ওদের ব্যাটিং টেকনিকের অনেক উন্নতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো একটি সিরিজের অপেক্ষা করছি আমি।

দ্বিস্তরের টেস্ট নিয়ে দু-একটা কথা না বললেই নয়। যেটা গত কয়েক মাস ধরে আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়েছিল। শুরুতেই বাংলাদেশ এর বিরোধিতা করে আসছিল। শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েও বাংলাদেশের পাশে ছিল। তবে কাজের কাজ হয়েছে ভারতের বিরোধিতার ফলে। ভারতের শক্ত অবস্থানের পরই আইসিসি দ্বিস্তরের টেস্ট ধারণা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দারুণ খবর বটে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে আমি সাধুবাদ জানাই। বহু দিন পর বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ভারতীয় বোর্ড।
খন্দকার জামিল উদ্দিন : সাবেক সিসিডিএম চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক। -ঢাকা টাইমস
২২ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে