বুধবার, ০৫ অক্টোবর, ২০১৬, ০৬:৫৭:৫৭

প্রেমের বাইশ গজে নট আউট হাবিবুল বাশার

প্রেমের বাইশ গজে নট আউট হাবিবুল বাশার

হাসান ইমাম : বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। বর্তমান জাতীয় দলের নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার স্ত্রী শাওন বাশার। এই জুটির দাম্পত্য জীবনের ১৯ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে তারও আগে থেকে ছিল দুজনের সম্পর্ক। সেই প্রেম করছেন এখনো। অধুনার অপর পক্ষ বিভাগে এবার মুখোমুখি এই দম্পতি। জানালেন তাদের প্রেম থেকে সংসারের অনেক কিছুই।

গল্পের শেষটা হয়ে যেতে পারত কিশোর বয়সে। প্রেমিকার বড় ভাইয়ের হাতে ধরা পড়ার পরেই। সেদিন আবার প্রেমিকের জন্মদিন ছিল। প্রেমিকা শাওন তখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সুমন সবে কলেজে। সুমনকে জন্মদিনের উপহার দিতে গেছেন শাওন, এক বন্ধুর বাড়িতে। দেখা করে মাত্র উপহারটা সুমনের হাতে দিয়েছেন। ঠিক তখনই দরজায় ঠক ঠক। কম বয়সের জুটি ভয়ে কাঠ। যা ভাবা ঠিক তাই। শাওন দরজার নিচ দিয়েই দেখলেন বড় ভাইয়ের পা! হাতেনাতে ধরা...।

সেদিন শাওনের ভাই বেশ শাসিয়েছিলেন সুমনকে—‘ফের যদি আমাদের পাড়ায় দেখেছি, ঠ্যাং ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেব।’

এমন আরও নানা স্মৃতি খেলার মাঠের সফল অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের জীবনে। কিশোর বয়স থেকে আজ পর্যন্ত এভাবেই চলছে স্ত্রী শাওন এবং তার প্রেম। ১ অক্টোবর ঢাকার লালমাটিয়ায় নিজেদের বাসায় অধুনার সামনে বসে এই দম্পতি ফিরে গেলেন কৈশোরের প্রেমের দিনগুলোতে। যখন তারা থাকতেন কুষ্টিয়ায়। প্রাণোচ্ছল সেই আড্ডায় দুজনেই সামলালেন ব্যাটিং পিচ। স্পিন থেকে ফাস্ট বল সবটাই খেললেন সমান দক্ষতায়।

শাওনের এসএসসি পরীক্ষার পরেই পারিবারিক আয়োজনে হলো বাগদান। বিয়ের আয়োজন তারও দুবছর পর, ১৯৯৭ সালের ২৫ এপ্রিল। তখন হাবিবুল বাশার জাতীয় দলের খেলোয়াড়। ১৯ বছর পার করেছেন একসঙ্গে। একজন আরেকজনকে কতটা বোঝেন? ‘বিয়ের বছর থেকেই ক্যারিয়ারে নানা উত্থান-পতন। সেই সময়েও আমাকে কোনো দিন বিরক্ত করেনি শাওন। বাড়ি নিয়ে আমাকে সেভাবে ভাবতে হয়নি কখনো। বোঝাপড়াটা ঠিক না থাকলে তো আর সেটা সম্ভব হতো না।’ বললেন হাবিবুল বাশার।

শাওন বাশার যোগ করলেন, ‘আমি সব সময় চেয়েছি ওর বন্ধু হয়ে থাকতে। বোঝাপড়া আছে বলেই এখনো আমাদের ব্যাংক হিসাব, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল সবই এক।’

ফেসবুকও এক! তারকা স্বামীর ইনবক্সে কোনো রোমান্টিক বার্তা...। আড়চোখে তাকালেন দুজন দুজনের দিকে। এরপর হা হা হাসি।
শাওন বলেন, ‘আসে না আবার? তবে এখন এসব বার্তা দেখে দুজনেই অনেক মজা পাই। কিশোর বয়স থেকে একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি। বিশ্বাসের জায়গাটা তাই বেশ পোক্ত। দুই সন্তানকেও তাই ওর (হাবিবুল বাশারকে দেখিয়ে) মতো করে বড় করতে চাই।’

একে অপরকে নিয়ে যা বললেন

অপর পক্ষ বিভাগে স্বামী–স্ত্রীর পরস্পরের পছন্দ–অপছন্দ নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন করা হয়। সুমন–শাওন দম্পতি ঠিকঠাক দিলেন সবগুলো উত্তর।

কার ​কোথায় ঘুরতে ভালো লাগে—আলাদা করে দুজকেই জিজ্ঞাসা করা হলো। হাবিবুল বাশার তখন বললেন, আমার প্রিয় জায়গা কক্সবাজার কিন্তু শাওনের ভালো লাগে কলকাতা।

উত্তর শুনেই স্বামীর দিকে খানিকটা কপট চোখ রাঙালেন শাওন। হাবিবুল বাশার বললেন, ‘তার (শাওন) ঘোরার জন্য প্রিয় লন্ডন শহর। তবে অপশন দিলে কলকাতাই বেছে নেবে। কারণ কেনাকাটা।’

এত ভালোবাসার মধ্যে আবার অভিযোগও আছে দুজনের। এই যেমন বিয়ের তারিখ, ছেলেদের জন্মদিনের মতো নানা বিষয় ভুলে যান হাবিবুল বাশার।

আবার শাওন সম্পর্কে সুমনের অভিযোগ তিনি অনেক রাগী। রাগলে কিছুই মাথায় থাকে না। তবে এত বছর একসঙ্গে থেকে রাগ ভাঙানোর কৌশলও বেশ রপ্ত করেছেন। কীভাবে? প্রেমের বাইশ গজে নট আউট থাকার সেই কৌশলটা নাহয় রহস্যই থাক। প্রথম আলো

৪ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে