বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:৩৯:১২

ইংল্যান্ড অাগে ব্যাটিং করলে ১৫০ রানের বেশি করতে পারতো না: আশরাফুল

ইংল্যান্ড অাগে ব্যাটিং করলে ১৫০ রানের বেশি করতে পারতো না: আশরাফুল

স্পোর্টস ডেস্ক: আগেরদিনই বলেছিলাম টস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে এই ম্যাচে। ঠিকই সেটা দেখা গেলো। বৃষ্টিতে দুইদিন উইকেট ঢাকা থাকার সঙ্গে ভেজা আউটফিল্ড- সুতরাং, যারাই টসে জিতবে, ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা তাদেরই খুব বেশি। এ কারণেই আগেরদিন টস গুরুত্বপূর্ণ বলেছিলাম। দুর্ভাগ্য আমাদের, পরপর তিনটি ম্যাচেই টস হেরে গেছি। এই ম্যাচেও টস হারের মধ্য দিয়ে দুর্ভাগ্যের শুরু হয়েছে।

তবুও আমরা দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছি। উইকেট দেখে শুরুতে মনে হয়েছিল, এখানে ২২০-২৩০ রানই যথেষ্ট। সে জায়গায় আমরা ২৭৭ রান করেছি। অবশ্যই এটা ভালো ব্যাটিংয়ের ফল। তামিম-ইকমরুল-সাব্বির উইকেটে সেট হওয়ার পর লম্বা ইনিংস খেলতে না পেরে আউট হয়ে গেছে। তাদের একজনও যদি ইনিংসটা ক্যারি করতে পারতো এবং একটা লম্বা ইনিংস খেলতে পারতো, তাহলে নিশ্চিত আমাদের রান ৩০০ পার হয়ে যেতো।

তবুও আমি বলবো তামিম-ইমরুল-সাব্বির দারুণ ব্যাট করেছে। শেষ দিকে এসে তো মুশফিক আর সাব্বির মিলে চমৎকার ব্যাটিং করেছে। শেষ ১২ ওভারে কোনো উইকেট পড়তে দেয়নি তারা দু’জন। তাদের ৮৫ রানের জুটিটাই বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়েছে। গতকালই বলেছিলাম, মুশফিক দ্রুতই রানে ফিরবে। কারণ, আগের ইনিংসগুলোতে সে রান করতে পারেনি ঠিক; কিন্তু আত্মবিশ্বাস ছিল অনেক। সেই আত্মবিশ্বাসটা আজই কাজে লাগিয়েছে। অপরাজিত ৬৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছে সে। তার সঙ্গে মোসাদ্দেকও দারুণ ব্যাটিং করেছে। ৩৯ বলে ৩৮ রানের অপরাজিত রান করে প্রমাণ করেছে সে, বড় রেসের ঘোড়া।

যদিও আমাদের ইনিংসে ইংলিশদের স্পিনাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছে। বিশেষ করে আদিল রশিদ আর মঈন আলি। আদিল রশিদের বল আমাদের ব্যাটসম্যানরা অনেকটাই বুঝতে পারেনি। যে কারণে তাকে চারটি উইকেট দিয়ে এসেছে তারা। ইংলিশ স্পিনারদের বোলিং দেখে আমি তো ভেবেছিলাম আমাদের স্পিনারদের সামনে দাঁড়াতেই পারবে না ইংল্যান্ড।

কিন্তু আমার সেই আশায় গুড়েবালি। উইকেটের এতটা পরিবর্তন আমি আমার পুরো ক্যারিয়ারে দেখিনি। প্রথমে ইংল্যান্ডের স্পিনাররা এতো ভালো বল করার পর আমাদের স্পিনাররা বল করতে গিয়ে দেখা গেলো ওই উইকেটে তাদের জন্য কোনো কিছুই নেই। বল টার্ন করে না, সুইং হয় না, শট পিচ হয়ে যায়- মোট কথা আমাদের স্পিনাররা কিছুই পায়নি এই উইকেট থেকে। ফলে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা খেলতে পেরেছে বেশ স্বাচ্ছন্দে।

উইকেটের চরিত্রগত পরিবর্তন হয়। আমার ১৬ বছরের কারিয়ারে অনেক উইকেট এমন দেখেছি। শুরুতে একরকম থাকে, পরে কিছুটা পরিবর্তন হয়। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এতোটা পরিবর্তন আমি জীবনে দেখিনি। আমার ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে এমন রাতারাতি উইকেট পরিবর্তন হয়ে যেতে দেখিনি। ২৭৭ রান ডিফেন্ড করার মতো বোলার আমাদের হাতে ছিল। কিন্তু উইকেটের কোনো সহযোগিতায়ই পায়নি বোলাররা।

তার ওপর মাশরাফির বোলিং পরিচালনা নিয়ে আমার কিছুটা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আগের ম্যাচে সাকিবকে দিয়ে বোলিং ওপেন করিয়েছিল মাশরাফি। এই ম্যাচে ওপেন করানো হয়ে শফিউলকে দিয়ে। এটা আমার মনে হয় ভুল হইছে। কারণ, সাকিবকে অবশ্যই তারা সমীহ করে। প্রথমে সাকিব বোলিংয়ে আসলে সেই সমীহটা আাদায় করতে পারতো এবং একপাশ থেকে চেপে ধরতে পারতো; কিন্তু মাশরাফি-শফিউলে যখন তাদের ভয়টা কেটে গেলো এবং উইকেটে সেট হয়ে গেলো, তাদের আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গেছে। যে কারণে উইকেট ফেলতে কষ্ট হয়েছে আমাদের বোলারদের। তবে উইকেটের চরিত্র পরিবর্তন হওয়ার কারণে বোঝা গেছে আমাদের ২০/৩০টা রান কম হয়ে গেছে।

যদি কোনোভাবে ইংল্যান্ড আজ আগে ব্যাটিং করতো, তাহলে কোনোভাবেই তারা ১৫০ রানের বেশি করতে পারতো না।-জাগো নিউজ
১৩ অক্টোবর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে