বুধবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:২০:৪৬

ফেসবুকে কেমন চলে বাংলার টাইগারদের গর্জন?

ফেসবুকে কেমন চলে বাংলার টাইগারদের গর্জন?

আরিফুর রাজু:

নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম,
বন্ধুর কাছে মনের কথা কেমনে পৌঁছাইতাম?

শুনেই হয়তোবা হাসছেন, মন চলে গেছে সেই আশি দশকের বাংলা সিনেমার দিকে। তখনকার সময়ে এক জন অন্য জনের সাথে যোগাযোগের জন্য কতই না কষ্ট করতে হত তা আমরা শুনেছি ইতিহাস অথবা দাদা-নানীদের মুখে। জেনেছি নিজেকে প্রচারের জন্য মানুষ কিভাবে সিঙায় ফুঁ দিয়ে এক স্থানে সবাইকে একত্রিত করা হত।


আর বর্তমানে একবিংশ শতাব্দিতে এসে আপনি  কথা বলবেন দূরে থাকা কোন স্বজনের সাথে? সেকেন্ডের ব্যাপার মাত্র! একটি ফোন কলের মাধ্যমেই তার সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন নিমেশে। বর্তমান ডিজিটাল সময়টা অসম্ভবকে করেছে সম্ভব, দূরকে করেছে অনেকটা কাছের। মানুষ প্রচারের জন্য এখন আর সিঙায় ফুঁ দিয়ে লোক সমাগম অথবা নিজেকে জানান দিতে হয় না। কেবল ভার্চুয়াল জগতে উপস্থিতিই আপনাকে নিয়ে যেতে পারে জনপ্রিয়তার অন্য এক র্শীষে।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছু। এই ধরুন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের কথা। ১৯৭৯ সালে আইসিসি ট্রপিতে অংশ গ্রহনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। তখনকার সময়ের জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা মাঠে নিজেদের সরব উপস্থিত জানান দিলেও তার বাহিরে যে ভার্চুয়াল একটা জীবন আছে তা হয়তো অনেকের জানাই ছিল না। জানা থাকবে কি করে বর্তমান সময়ের মত তৎকালীন সময়ে তাদের ছিল কোন উন্নত মানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। উৎপত্তি ঘটেনি ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইনস্ট্রোগ্রামের।

বর্তমান সময়ের ক্রীড়া তারকারা মাঠে যেমন জনপ্রিয় ঠিক তেমনই মাঠের বাহিরেও সমভাবে জনপ্রিয়। মাঠে চার-ছক্কা আর বোলিং তান্ডবের ন্যায় ভার্চুয়াল জগতেও চলে তাদের আরেক তান্ডব। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশাল অংশ জুড়ে আধিপত্য বিস্তার করছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। খেলার মাঠের ন্যায় এখানেও চলে তাদের নীরব জনপ্রিয়তার যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি খেলার মাঠের মত প্রভাব বিস্তার করে ভার্চুয়াল যোদ্ধাদের সঙ্গে।

ফেসবুকের এই জনপ্রিয়তার যুদ্ধে এগিযে রয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটের নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ফেসবুক কতৃক ভ্যারিফাইড করা ফেসবুকে তার বর্তমান ফ্যান সংখ্যা ৬,৭৮৬,২৬৯  জন। না মানার উপায় নেই যে বিশাল ফ্যান নিযে তার ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ।  লক্ষ্যনীয় যে, তিনি ফেসবুক ফেইজে ছবি আপলোড ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তার মতামত এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরেন। এর পরের অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ফেসবুকে পেইজে তার ফ্যান সংখ্যা ৫,৫৫,২৬৮৮ জন। পিছিয়ে নেই নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজাও। ভ্যারিফাইড করা তার ফেসবুকে ফ্যান সংখ্যা ৪,২৩১,২৯৫ জন। আর নাসির হোসেনের ফ্যানের সংখ্যাও চোখে পড়ার মত। ৪,০৭৯,৩৬২ জন ফ্যান নিয়ে পথ পাড়ি দিচ্ছেন তিনি। উদীয়মান কাটার মুস্তাফিজের ভারতের সঙ্গে বোলিং ঝলকের পর থেকে হু হু করে বেড়েই চলছে তার ফ্যানের সংখ্যা। ক্রিকেটের  ‘বিস্ময়কর বালক’ মুস্তাফিজ অতি অল্প সময়ে বিশাল একটি অংশ দখল করে আছেন ভার্চুয়াল জগতে। তার বর্তমান পেইজের ফ্যানের সংখ্যা ৩,১৯৫২৪ জন। আর অনান্য বোলাদের মধ্যে রুবেল হোসেনের পেইজে ফ্যানের সংখ্যা ১৩,৭১৮২ জন।মজার ব্যাপার হল রুবল হোসেন নামে অনেক গুলো পেইজের ভিড়ে অনেকে আসল রুবেল হোসেনকে খুঁজে পেতে কষ্ট হতো। সেই ফ্যানদের কথা বিবেচনা করে ফেসবুক কতৃপক্ষ তার আইডিটি ভ্যারিফাইড করে ভক্তদের চিনতে সুবিধা করে দিয়েছেন। আরেক গতির দানব তাসকিন আহমেদের ফ্যান সংখ্যাও চোখে পড়ার মত ৮,৫০৪৬৭ জন।
 
আসলে কে কার থেকে এগিয়ে সেটি মুখ্য বিষয় নয়, বিষয় হলো সমযের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটার ভার্চুয়াল জগতে তাদের উপস্থিতিটা। মূলত তাদের এই উপস্থিতিটা ভক্ত-সমর্থকদের বাড়তি এক অনুপ্রেরণা এবং একই পরিবারের হয়ে চলতে সাহায্য করা। তারকার সাথে একই সার্কেলে হয়ে ভার্চুয়ালে পথ চলা। এটি একজন ভক্তের জন্য কম কিসে? বাংলার বাঘদের এই অগ্রযাত্রা অব্যহত থাকুক ধীরে ধীরে বিশ্বের বুকে আরো অনেক বেশি পরিচয় করিয়ে দেক লাল সবুজের পতাকাটাকে। এই কামনা সবারই।

উল্লেখ্য, টাইগারদের পেইজের ফ্যানদের সংখ্যা সর্বশেষ আজকের গননা অনুযায়ী বসানো হয়েছে।

৭ অক্টোবর ২০১৫,এমটি নিউজ/আরিফুর/রাজু

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে