স্পোর্টস ডেস্ক : ডেভিড ওয়ার্নারের চোটের খবর পুরোনোই। সর্বশেষ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) নিশ্চিত করেছে, সহ-অধিনায়ককে ছাড়াই বাংলাদেশে আসতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে। ওয়ার্নারের চোট, একের পর এক খেলোয়াড়ের অবসরের মিছিল, জশ হ্যাজেলউড ও মিচেল জনসনকে বিশ্রাম দেওয়ার ভাবনা—বাংলাদেশ সফর যতই ঘনিয়ে আসছে অস্ট্রেলিয়া দলে সমস্যা যেন ততই প্রকট হচ্ছে!
এশেজ সিরিজ হারের পর থেকে বেশ বিপাকে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। হঠাৎ করেই যেন ছন্দ পতন টিম অস্ট্রেলিয়ার। ইংল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারার জেরে মাইকেল ক্লার্কের সরে দাঁড়ানোর পর থেকেই নতুন নতুন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। সর্বশেষ গত সোমবার টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন শেন ওয়াটসন। অথচ বাংলাদেশ সফলে তাকে ওপেনিংয়ে খেলানোর সম্ভাবনাও যাচাই করছিল অসি বোর্ড। এদিকে আগের দিন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে আঙ্গুলে ব্যাথা পেয়ে বিশ্রামে যেতে হচ্ছে ডেভিড ওয়ার্নারকে।
র্যাঙ্কিং, ইতিহাস-ঐতিহ্যে বিস্তর ব্যবধান দুই দলের। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে ২৬বার মুখোমুখি হয়ে কেবল একবারই জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ১০ বছর আগে কার্ডিফে সেই কাব্যিক জয়টাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র সুখস্মৃতি। টেস্টের ফলটা একতরফা। চারবার মুখোমুখি হয়ে প্রতিবারই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের প্রেরণা ২০০৬ সালে সেই ফতুল্লা টেস্ট—ক্রিকেটের বড় সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের একমাত্র দৃষ্টান্ত।
ইতিহাস-পরিসংখ্যান কিংবা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নয়, অস্ট্রেলীয় নির্বাচকদের বড় ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়ে স্কোয়াড নিয়ে। এরই মধ্যে অবসরে গিয়েছেন চার বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে আসা মাইকেল ক্লার্ক। অবসরে যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন ওপেনার ক্রিস রজার্স, উইকেট রক্ষক ব্র্যাড হ্যাডিন, অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন ও পেসার রায়ান হ্যারিস। এর মাঝে ধাক্কা হয়ে এসেছে ওয়ার্নারের চোট।
অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরেও তিনি খেলতে পারবেন না এটা নিশ্চিত করেছে চিকিৎসকরা। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ এমনিতেই প্রচণ্ড শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। বাংলাদেশ সফরের আগে স্টিভেন স্মিথদের এ ব্যাপারে সর্তক করছেন সাবেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা। কিন্তু বাংলাদেশ সফরের জন্য শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ দল গঠনে এক বেশ সমস্যার সম্মুখীন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড। এমন অবস্থায় বুঝি আগে কখনই পড়তে হয়নি অস্ট্রেলিয়াকে। আগামী অক্টোবরে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
ইংল্যান্ডের সঙ্গে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাম হাতের বুড়ো আঙুলে আঘাত পেয়েছিলেন ওয়ার্নার। ব্যাটিংয়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হতে লাগবে ছয় সপ্তাহ। রজার্সের অবসরের পর দলে নতুন একজন ওপেনার আনতেই হতো নির্বাচকদের। এখন ওয়ার্নারের চোটে দুজন আনকোরা ওপেনারকে স্কোয়াডে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে সহ অধিনায়কত্বের জায়গার জন্য সাময়িকভাবে বেছে নিতে হবে কাউকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্যস্ত সূচির কারণে দুই পেসারের বিশ্রামের বিষয়টিও।
বেশ কজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের অবসর, নতুন দুই ওপেনার সন্ধান, উপমহাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে বোলিং আক্রমণ তো আছেই এখন সহ অধিনায়ক নির্বাচনের হ্যাঁপাও পোহাতে হচ্ছে নির্বাচকদের। সব মিলিয়ে বেশ বিপাকেই অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক দল।
তবে তাকে হারানোটা অবশ্যই আমাদের জন্য বড় ধাক্কা। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটির জন্য আমি অধীর আগ্রহেই অপেক্ষা করছি। অস্ট্রেলিয়াকে টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমার তর সইছে না। আশা করছি, সিরিজে দলে কিছু সিনিয়র খেলোয়াড়কে অন্তত পাশে পাব।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ শুরু হবে আগামী ৯ অক্টোবর। সিরিজ সামনে রেখে চলতি মাসের ২৮ তারিখে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন স্মিথরা।
১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে