বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫, ০৫:৩৫:২২

'মুগ্ধ হয়ে ধোনির ব্যাটিং ও অধিনায়কত্ব দেখলো বিশ্ব'

'মুগ্ধ হয়ে ধোনির ব্যাটিং ও অধিনায়কত্ব দেখলো বিশ্ব'

দীপ দাশগুপ্ত : মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ইনিংসটা মাঠে বসে দেখার পর যে ঠিক কী লেখা উচিত, বুঝে উঠতে পারছি না। ক্রিকেটটা একটু-আধটু খেলেছি বলে জানি, টিম যদি ক্রমাগত হারে আর তার ক্যাপ্টেন যদি নিজেও ডুবে থাকে অফ ফর্মে কী অসহনীয় পরিস্থিতি আসতে পারে। ভেবে দেখুন, গত এক বছরে ওকে কী কী কথা শুনতে হয়েছে। লোকে বলেছে, এমএসকে দিয়ে আর হবে না। ব্যাটিংটা গিয়েছে। বলেছে, যার টিমে থাকা নিয়েই প্রশ্ন, সে কী অধিনায়কত্ব করবে? নাম করছি না। কিন্তু ধোনির পুরনো সতীর্থদের কয়েক জনও ছাড়েনি ওকে।

কোথাও যেন গিয়ে দাদা-র (সৌরভ গাঙ্গুলী) কামব্যাক যুদ্ধের সঙ্গে একটা মিল খুঁজে পেলাম। দাদার ফেরার যুদ্ধটা আমার খুব কাছ থেকে দেখা। দেখেছি, কী ভাবে দাঁতে দাঁত চেপে পাল্টা লড়াই দিতে শুরু করেছিল। ক্যাপ্টেন্সি গিয়েছে, টিমে নিজের জায়গাটা ধরে রাখার জন্য আপ্রাণ লড়তে হচ্ছে। তার পরেও কিন্তু জোহানেসবার্গে ৫১ করে গিয়েছে দাদা। এমএসও আজ যেটা খেলল, তা দেখলে দাদার ওই ইনিংসের মনে পড়ে যেতে বাধ্য। তফাতের মধ্যে এমএস এখনও অধিনায়ক। কিন্তু সমালোচনায় বিদ্ধ অধিনায়ক। কিন্তু লড়ুয়ে মনোভাবটা যেন একই দেখলাম।

আমার কথা ছেড়ে দিন। কমেন্ট্রি করতে করতে দেখছিলাম, পুরো কমেন্ট্রি বক্সটাই মুগ্ধ হয়ে ধোনির ব্যাটিং, অধিনায়কত্ব দেখছে। ভিভিএস (লক্ষ্মণ) অসম্ভব প্রশংসা করছে। সঞ্জয় (মঞ্জরেকর) মুগ্ধ হয়ে দেখছে। আমরা সবাই বলাবলি করছিলাম যে, যা মাঠে আজ ঘটছে, তা একমাত্র এমএস-ই ঘটাতে পারে। এটাই ওর স্টাইল। এটাই ওর ঘরানা। সমালোচকদের প্রথমে বলতে দেবে। তার পর এমন জবাব দেবে যে, কারওর কিছু বলারই থাকবে না।

অতি বড় ধোনি-সমালোচকও কি আজকের পর বলতে পারবে যে, ওকে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টানার দরকার নেই? কেউ বলতে পারবে যে, বিরাট কোহলিকে যখন টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি দেওয়া হয়েছে তখন বাকি দু’টোও দেওয়া হচ্ছে না কেন? বোলিং পরিবর্তন থেকে ফিল্ড সাজানো— কোথাওই তো বিন্দুমাত্র ভুলভ্রান্তি করতে দেখলাম না। প্লাস ধরতে হবে, কিপিং। তিনটে ক্যাচের সঙ্গে একটা স্টাম্পিংও করেছে ও।

একজন উইকেটকিপার হিসেবেই এর পর ওর টিমে জায়গা হয় না কি? আরও একটা ব্যাপার নিয়ে কথা বলা এখনই বন্ধ করা উচিত বলে মনে করি। ফিনিশার ধোনি। ফিনিশার মানে এটা নয় যে, ধুমধাড়াক্কা মেরে শেষ করে এলাম। ফিনিশার মানে এটাও যে পঁয়ত্রিশ ওভারে নেমে পনেরোটা ওভার নির্ঝঞ্ঝাটে সামলে দিয়ে আসবে। ও যদি স্টাইলটা পাল্টে ফেলে, অন্যায়টা কোথায়? এমনও নয় যে, বিশ্বে ও-ই সর্বপ্রথম করছে।

মাইকেল বিভানকে নিশ্চয়ই এখনও সবাই পুরোপুরি ভুলে যায়নি!

লেখক : ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার

১৫ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে