স্পোর্টস ডেস্ক : বিশেষ সাধারণ সভা শেষ করে ক্রিকেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি) সভাপতির নির্দিষ্ট ঘরে ঢুকলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। জগমোহন ডালমিয়া যে চেয়ারটায় বসতেন, তার পাশে রাখা চেয়ারটায় বসলেন। সিএবি কর্তাদের শুভেচ্ছার বন্যা। কেউ পরিয়ে দিচ্ছিলেন মালা, কেউ তুলে দিলেন পুষ্পস্তবক। একটুও বিব্রত নন। টিম ইন্ডিয়াকে যেভাবে সামলাতেন, ঠিক তেমনভাবেই হাসিমুখে সামলে নিলেন পরিস্থিতি।
মাত্র ১০ মিনিটেই শেষ বিশেষ সাধারণসভা। সিএবি সভাপতি হিসেবে সরকারিভাবে সিলমোহর পড়লো সৌরভ গাঙ্গুলির ওপর, যুগ্ম–সচিব হিসেবে অভিষেক ডালমিয়া। দুই পদে এই দু’জনের ছাড়া আর কোনও মনোনয়ন জমা না পড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হল না। সৌরভ গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে লড়াই? না, সেই সাহস দেখাতে পারেনি সিএবি–র কোনও সদস্যই। তার বিরুদ্ধে আড়ালে–আবডালে অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন, কিন্তু সামনাসামনি আসার সাহস কারও নেই।
ক্রিকেট প্রশাসনে একেবারেই অনভিজ্ঞ নন। সচিব হিসেবে কাটিয়ে ফেলেছেন প্রায় একটি বছর। তবে এত তাড়াতাড়ি সিএবি সভাপতির চেয়ারে বসবেন, ভাবেননি সৌরভ। সভাপতি হিসেবে সরকাররিভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বলে গেলেন, ‘এই দায়িত্বটা আমার কাছে অপ্রত্যাশিত। ১১ মাস আগে একজন আমাকে বলেছিলেন, একদিন আমি সিএবি–র সভাপতি হব। সেদিন খুব অবাক হয়েছিলাম। যেমন অবাক হতাম, কেউ যদি আমাকে লর্ডসে নামার আগে বলতো সেঞ্চুরি পাব। আমি কোনও দিনই ভাবিনি ভারতের অধিনায়ক হব। তেমনই কোনও দিনই ভাবিনি সিএবি সভাপতি হব। এটা আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। সচিব হিসেবে অনেক কিছু শিখেছি, সভাপতি হিসেবেও শিখবো। নতুন সিস্টেমে মানিয়ে নিতে হবে।’
সভাপতির চেয়ারে বসাটা সৌরভের কাছে গর্বের মুহূর্ত হলেও, এ রকম পরিস্থিতিতে বসতে হোক, তিনি চাননি। জগমোহন ডালমিয়ার অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন তার মূল দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন সৌরভ। ভারতীয় দলের নেতৃত্ব, না সিএবি সভাপতির দায়িত্ব, কোনটা কঠিন কাজ? সৌরভ বলছিলেন, ‘ভারতীয় দলে ১৫ জন ক্রিকেটারকে সামলাতে হয়েছিল, এখানে ১২১ জনের সঙ্গে ডিল করতে হবে।’ ক্রিকেটার জীবনে রোল মডেল হিসেবে তার মুখে অনেকের কথা শোনা গেছে। প্রশাসক হিসেবে উঠে এল তার পূর্বসূরির কথা।
সৌরভ বলছিলেন, ‘ডালমিয়াকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। শুধু একজন প্রশাসক ছিলেন না, ফাদার ফিগার বলা যায়।’ সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই তিন মাসের মধ্যে ইডেনের উন্নতি করার অঙ্গীকার সৌরভের। ক্যাপ্টেন হিসেবে কড়া হাতে যেমন ভারতীয় দলকে সামলেছিলেন, সিএবি–কেও তেমনভাবে চালাতে চান, তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন সৌরভ। বলছিলেন, ‘আমার কাছে স্বচ্ছতা অগ্রাধিকার পাবে। কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করলে রেহাই নেই। ক্রিকেটের উন্নতির যে কাজে হাত দিয়েছি, তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই প্রধান লক্ষ্য।’
পাশে বসা নতুন যুগ্ম–সচিব অভিষেক ডালমিয়াকে দেখিয়ে বলে গেলেন, ‘আমার দলের ভাইস–ক্যাপ্টেন রাহুল দ্রাবিড়কে পেয়ে গেছি। টিম হিসেবে সিএবি–কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ রাজস্থান ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সিএবি–র প্রশাসনে অভিষেক হল অভিষেক ডালমিয়ার। বাবা প্রশাসক হিসেবে দারুণ সফল। এটা কি বাড়তি চাপ ? অভিষেক বলছিলেন, ‘বাবাকে কখনও স্পর্শ করতে পারব না। সে–স্বপ্নও দেখি না। বাংলার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। মাথার ওপরে মহারাজদা রয়েছে। জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি। সমস্যা হবে না।’
১৬ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি