বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭, ০১:৩৫:২০

ক্রিকেটার সানির সঙ্গে মেয়ের বিয়ের কথা জানেন না নাসরিনের বাবা

ক্রিকেটার সানির সঙ্গে মেয়ের বিয়ের কথা জানেন না নাসরিনের বাবা

স্পোর্টস ডেস্ক:  ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ও দায়ের করা মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না নাসরিন সুলতানার বাবা মো. মনিরুল ইসলাম। এমনকি এসব ঘটনায় দয়ের করা মামলার বিষয়েও তিনি জানেন না।

মনিরুল ইসলাম থাকেন মোহাম্মদপুর থানা এলাকার কাটাসুরে।  বাড়িটি তার শশুরের। তার স্ত্রী রোকসানা বেগম উত্তরাধীকার সূত্রে এই বাড়ির দুটি কক্ষ পান। সেখানে চার মেয়ে ও স্বামী স্ত্রী থাকেন। বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। নাসরিন সুলতানা স্থানীয় একটি কলেজে ইংরেজিতে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। ছোট মেয়ে একটি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষে পড়ছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাসায় গিয়ে দেখা যায়, দুই কক্ষের একটিতে তালা দেওয়া। অন্য একটিতে মনিরুল ইসলাম বিশ্রাম করছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা আদালতে গিয়েছেন বলে জানান নাসরিন সুলতানার মামি বানু বেগম।

আরাফাত সানির বিরুদ্ধে নাসরিন সুলতানার মামলা ও তাকে স্বামী দাবি করা প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার বাবা প্রথমেই অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাই কি হচ্ছে, সে খবরও আমার জানা নাই। অন্য সবার মতো আমিও পত্রিকা পড়ে জেনেছি।’

পরিবারের থেকে পরামর্শ চাওয়া বা এ জাতীয় কোনো ঘটনা শেয়ার করা হয়েছিল কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের (আরাফাত সানী ও নাসরিন) যে আগে সর্ম্পক ছিল সেটাই তো আমি জানতাম না। এমনকি মামলাও যে করা হয়েছে সে বিষয়ে মেয়ে আমাকে কিছু বলেনি।’

কথা বলার সময় বিমর্ষ দেখাচ্ছিল মনিরুল ইসলামকে। তিনি বলেন, ‘এর আগে আমি আরাফাত সানিকে কখনও এই বাসায় দেখিনি। তাই তার বিষয়ে কিছু বলতেও পারছি না।’

আগে একটি ওষুধ কোম্পানির গাড়ি চালাতেন মনিরুল ইসলাম। সেখান থেকে সম্প্রতি চাকরি চলে গেছে তার। এখন অন্য একটি কোম্পানিতে গাড়ি চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বাসায় খুব একটা থাকি না। শুধু দুপুরে বাসায় বিশ্রাম নিতে আসি। সকালে বাসার সবাই ছিল। এখন এসে দেখছি কেউ নেই। মনে হয় তারা আদালতে গেছে।’

তবে নাসরিনদের এই বাসায় আরাফাত সানিকে কয়েকবার দেখেছেন বলে দাবি করেছেন নাসরিনের মামি বানু বেগম। তিনি বলেন, ‘বছর খানেক আগে আমি ছেলেটারে (সানি) সর্বশেষ বাসায় আসতে দেখেছি। এরও আগে মাঝে মধ্যে সে এই বাসায় আসতো।’

নাসরিন-সানীর বিয়ের ব্যাপারে কিছু জানেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক দিন আগে টিভিতে খেলা দেখার সময় নাসরিন আমাকে বলেছিল, ছেলেটা দেখতে কেমন। তখন আমি বলেছিলাম- সে তো বল খেলে। দেখতে ভালই। এর পরে নাসরিন আমাকে আর কিছু জানায়নি। এখন টিভিতে খবরে জানলাম তারা নাকি বিয়ে করেছিল।’

নাসরিনের পাশের কক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, ‘আরাফাত সানী ও নাসরিনের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল সেই বিষয়ে আমি কিছুটা জানতাম। অনেক আগে সে এই বিষয়ে আমাকে কিছুটা বলেছিল। গত কয়েকমাস ধরে নাসরিন ফোনে কথা বলার সময় কান্নাকাটি করত। তবে কান্নকাটির ব্যাপারে আমি তাকে কখনও কিছু জিজ্ঞাস করিনি।’

নাসরিনদের বাসার ঠিক বিপরীতে দোকানে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য ও সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবসা করেন বাবু। আরাফাত সানিকে এই গলিতে কখনও দেখেছেন কি-না জানতে চাইলে বলেন, ‘সাত বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কিন্তু আরাফাত সানিকে কখনও দেখিনি।’

মোহাম্মদপুর থানায় সানির বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ইয়াহিয়া বলেন, ‘আরাফাত সানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এখন সেগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।’ এর বেশি তদন্ত কর্মকর্তা কিছু জানাতে চাননি।

তবে নাসরিন-সানির বিয়ের যে কাবিননামা আদালতে পেশ করা হয়েছে তাতে উল্লেখিত ঠিকানায় একটি মাংসের দোকান পাওয়া গেছে- এই বিষয়ে দৃষ্টিপাত করলে ইয়াহিয়া বলেন, ‘প্রথমত মামলার বাদি পক্ষ আদালতে যে কাবিননামা দিয়েছেন সেটি সার্টিফায়িং কপি। সেটা দিয়ে কোন কিছু জাজমেন্ট হয় না। তারা থানায় বিয়ের কোন কাবিননামা দেননি। তাই এই বিষয়ে আমরা কোন ভেরিফিকেশন করতে পারি নি। আর এই মামলা তো তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নাসরিন সুলতানার মোবাইল ফোন জব্দ করে সিআইডিতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। অন্য দিকে সানির মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে। সেটিও পাঠানো হবে।’

গত ৫ জানুয়ারি আরাফাত সানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী হিসেবে দাবিদার নাসরিন সুলতানা। অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ জানুয়ারি সকালে সাভার আমিনবাজারের বাসা থেকে আরাফাত সানীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে তাকে আদালতে নেওয়া হয়। পুলিশ আরাফাত সানীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত তাকে একদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে তার জামিন চাওয়া হলে বিচারক নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে আরাফাত সানি ও তার মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবির অভিযোগ এনে ২৩ জানুয়ারি সোমবার আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন নাসরিন সুলতানা।

এদিকে প্রথম থেকেই আরাফাত সানি ও তার মা নার্গিস আক্তার ‘এ ঘটনা সাজানো’ বলে অভিযোগ করে আসছেন।-জাগো নিউজ
২৫জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে