অগ্নি পান্ডে, ইন্দোর থেকে: সিরিজে সমতা ফিরেছে। নিজের ব্যাট আবার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কথা বলেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও একটি চিন্তা কিছুতেই সরছে না। যা নিয়ে ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি বেশ চিন্তিত তা হল তার দলের সাত নম্বর জায়গাটি। ইন্দোর থেকে রাজকোটে তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক খেলতে যাবার আগে নিজের চিন্তা ব্যক্ত করেছেন ধোনি।
ভারত অধিনায়ক কোনওরকম রাখঢাক না করেই বলছেন, ‘আমার ব্যাটিং লাইনআপের সাত নম্বর জায়গাটি নিয়ে আমি চিন্তিত। কোনওভাবেই এখনও চূড়ান্ত কম্বিনেশন তৈরি করা যাচ্ছে না। তাই সাত নম্বর জায়গাটি নিয়ে যাবতীয় চিন্তা রয়েছে। আমরা পরিকল্পনার মধে্য দিয়ে যাচ্ছি। এখন পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে। আশা করা যায় দ্রুত ঠিক করে ফেলা যাবে।’ আসলে সামনে কুড়ি–বিশের বিশ্বকাপ। তার আগে ভারতীয় দল পরিচালন সমিতি ব্যাটিং অর্ডারের সাত নম্বর জায়গাটি ঠিক করে নেবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। ধোনি যা অস্বীকার করছেন না। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেই যা চূড়ান্ত করার অপেক্ষায় ধোনি।
দলে সাত নম্বর জায়গার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে ধোনি নিজের ক্রিকেটীয় তত্ত্ব খাড়া করেছেন। ধোনির তত্ত্ব যা আধুনিক ক্রিকেটীয় তত্ত্বের সঙ্গে খাপ খায়। ভারত–অধিনায়ক মনে করেন আগেরকার মতো ৬ ব্যাটসম্যান ও ৫ বোলারের খেলার তত্ত্ব এই সময়ের ক্রিকেটে অচল। ধোনি পরিষ্কার জানালেন, ‘দেখুন, আধুনিক ক্রিকেটে সাত নম্বর জায়গা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমন একজন ক্রিকেটার দরকার যে বলের পাশাপাশি সাত নম্বরে ব্যাটটাও ভাল করে করতে পারবে। আগেকার মতো ৬ ব্যাটসম্যান ও ৫ বোলারের খেলার পদ্ধতি চলে না, অচল। সেটা খাতায়–কলমের জন্য ঠিক আছে। বাস্তবে নয়।’
তা হলে ভারতীয় ক্রিকেটে সাত নম্বর জায়গা ভরাট কে করতে পারেন এই মুহূর্তে? এক লহমায় ধোনি তিনটি নাম উচ্চারণ করলেন। ‘স্টুয়ার্ট বিনি, রবীন্দ্র জাদেজা আর অক্ষর প্যাটেল রয়েছে এই জায়গা পূরণ করার জন্য। তবে আশা করা যায় ভবিষ্যতে নিশ্চয় আরও কিছু ক্রিকেটার উঠে আসবে। দেখা যাক যত তাড়াতাড়ি আমরা জায়গাটি ভরাট করতে পারব ততই আমাদের ভাল।’
দলের ওপেনিং জুটি একসঙ্গে রান পাচ্ছে না। রোহিত শর্মা রানের মধে্য থাকলেও রানের মধে্য নেই শিখর ধাওয়ান। স্বীকার করে নিচ্ছেন মাহি। ‘আমাদের ওপেনিং জুটি সবসময় ধারাবাহিক নয়। কখনও রান পায় আবার কখনও পায় না। রোহিত রান পাচ্ছে। শিখর পাচ্ছে না। তবে ওর যা প্রতিভা তা বিচার করলে দেখা যাবে শিখর রান পাবে। এখন ২০–২৫ করছে। সেটা বড় রানে নিয়ে যেতে পারছে না। তবে ছোট ইনিংসের মধে্য একটা আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আসলে আমরা ওপেনিংয়ে ডানহাতি–বাঁহাতি কম্বিনেশন ধরে রাখতে চাই। যা খুব কাজে দেয়।’ চলতি সিরিজে আম্পায়ারিং নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তা ভারতীয় আম্পায়ার বিনীত কুলকার্নিকে নিয়েই বেশি।
ইতিমধ্যে ভারতীয় দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুলকার্নির বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেবে ভারতীয় বোর্ডকে। বুধ–রাতে ইন্দোরে সেই বিতর্কিত আম্পায়ার বিনীত কুলকার্নি বল ব্যাটে না লাগা সত্ত্বেও আউট দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বেহারদিেয়নকে। ম্যাচে যে সময়ে বেহারদিয়েনকে আউট দেওয়া হয় সে সময়ে ম্যাচের রঙটাই বদলে যায় ভারতীয় শিবিরের দিকে। ধোনি নিজের পরিষ্কার মত থেকে সরছেন না। ধরমশালায় প্রথম টি-২০ ম্যাচের পরও ধোনি সরব হন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে। ধোনি ইন্দোরে রাখঢাক না করে বলেই ফেলেন, ‘খারাপ–ভাল নিেয়ই চলে। তবে মুশকিল হল খারাপ সিদ্ধান্ত যখন আমাদের দিকে যায় তখন মিডিয়া যেন খুশি হয়। আর যখন বিপক্ষের দিকে যায় তখন সবাই মুখ খোলেন। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল আমার জানা নেই।’
আসলে বাইশ গজের ৯২ রানের ইনিংসটি ভারতীয় অধিনায়ককে আরও আক্রমণাত্মক করে দিয়েছে। যা এখন শুধু মাঠের ভেতরে নয় মাঠের বাইরেও দেখা যাচ্ছে। যা খানিকটা অচেনাই বটে। এইরকম মেজাজ নিয়েই ধোনি দলবল নিয়ে উড়ে গেলেন রাজকোটে।
১৬ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি