মাটিতে চাদর বিছিয়ে ঘুমাতেন জাহির খান!
স্পোর্টস ডেস্ক : বুধবার রাতে ফোন পাওয়ার পর থেকে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে তার৷ থেকে থেকেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে পুরনো ঘটনা৷ মনে পড়ে যাচ্ছে সতেরোর এক ছেলের কথা৷ যাকে চোখের সামনে একটু একটু করে বড় হতে দেখেছেন তিনি৷ দেখেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেতে৷ দেখেছেন বিপক্ষের মেরুদন্ড ভেঙে গুড়িয়ে দিতে সুধীর নায়েক৷
অনুভূতির ঘূর্ণি আছড়ে পড়েছে যার হৃদয়ে! কেন এতটা আবেগপ্রবণ সুধীর নায়েক? জাহির খানের জন্য৷ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন৷ সিদ্ধান্ত সবাইকে জানানোর একদিন আগে, সুধীর নায়েককে জানিয়েছেন তিনি৷ ১৯৯৬ সালে ক্রস ময়দানের ন্যাশনাল ক্রিকেট ক্লাবে জাহিরকে নিয়ে এসেছিলেন এই নায়েকই৷ মহারাষ্ট্রে অখ্যাত শহর শ্রীরামপুর থেকে উঠে আসা জাহিরের, শুরুর দিনগুলো কেমন কেটেছিল, তা তার থেকে ভাল তাই কেই বা জানে?
সুধীর নায়েক স্মৃতিচারণ করেছেন৷ জানিয়েছেন, সেই সময় প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয়েছিল জাহিরকে৷ নায়েক বলেন, ‘সেই সময় জাহির থাকতো ওর বাবার কাকিমার সঙ্গে৷ উনি সৈফী হাসপাতালের কাজ করতেন৷ হাসপাতালের ভেতর একটা ছোট্ট ঘরে তিনি থাকতেন৷ সঙ্গে থাকতো জাহির৷ প্রথম সাত-আট মাস অবস্হা এতই খারাপ ছিল যে, জাহির ভাল করে শোয়ার মতো জায়গাও পেত না৷ একটা চাদর বিছিয়ে কোনওরকমে শুয়ে থাকত৷ একটা বালিশও ছিল না! সকালে কিছু না খেয়েই কত ম্যাচ যে খেলতে গিয়েছে! বেশিরভাগ সময় ন্যাশনাল সিসি টেন্টে কাটাত নয়, অনুশীলনের পর গ্রান্ট রোডে টেনিস বল ক্রিকেট খেলত৷ সারা দিন এভাবেই কাটিয়ে দিত! সৈফী হাসপাতালে ও খালি ঘুমোতে যেত রাতে৷’
এখানেই শেষ নয়, নায়েক শুনিয়েছেন আরও অনেক কাহিনী৷ ‘জানেন, একদিন জাহিরের বাবা এসে আমাকে বললেন, মুম্বাইয়ে ছেলের থাকার খরচ চালানো তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে৷ ছেলেকে আর খাওয়াতে রাজি নয় তার কাকিমা৷ উনি, আমার কাছে এসেছিলেন সাহায্য চাইতে৷ ওই সময় হেমন্ত ওয়াইনগানকারের কাছে ওকে নিয়ে যাই৷ ওয়াইনগারকার মফতলালে কাজ করতেন৷ সেদিনই মফতলালের তরফে একটি চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ মাস মাইনে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে জানান হয়৷ হেমন্ত, মফতলাল গেস্ট হাউসে জাহিরের থাকার বন্দোবস্ত করে দেন৷ সেদিন ওর মুখে যে হাসি দেখেছিলাম, তা আজও ভুলিনি৷’
১৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি
�