টাইগারদের ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচ রিপোর্ট
স্পোর্টস ডেস্ক: ফতুল্লায় চতুর্থ রাউন্ডের প্রথম দিনে খুলনার অবস্থা আগের ম্যাচের প্রথম ইনিংসের চেয়েও খারাপ। আগের ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে খুলনার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল ২১১ রানে। অথচ ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে তাদের প্রথম ইনিংস শেষ মাত্র ১১৭ রানে। আবদুর রাজ্জাকের দলকে ধসিয়ে দেওয়ার মূল কাজটা করেছেন খুলনারই পেসার মাসুম খান। চতুর্থ রাউন্ডের সব ভেন্যুরই প্রথম দিনটিতে ছিল বোলারদের জয়জয়কার!
ফতুল্লায় ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথম ব্যাট করা খুলনার শুরুতেই থরহরি কম্প দশা! লাঞ্চের আগেই ৭৮ রানে নেই ৫ উইকেট। জাতীয় লিগে ইমরুল কায়েস ও এনামুল হকের দুর্গতি চলছেই। মাসুমের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে এনামুল করেছেন ১১ রান। এক প্রান্ত আগলে রেখে খানিক লড়াই অবশ্য ইমরুল চালিয়েছিলেন, তবে তা মেটাতে পারেনি পরিস্থিতির দাবি। মাসুমের বলে ফিরে যাওয়ার আগে জাতীয় দলের বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ২৭। এমনই ব্যাটিং দুর্দশা, ইমরুলের এই রানই সর্বোচ্চ হয়ে রইল খুলনার ইনিংসে। রাজ্জাকের দলের টপ অর্ডারে ছোবল দিয়ে শুরু হয়েছিল মাসুমের। রাজ্জাক ও মুস্তাফিজুর রহমানকে তুলে নিয়ে লেজটাও মুড়ে দিয়েছেন ঢাকার হয়ে খেলা এ ডানহাতি পেসার। ৮.৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। জবাব দিতে নেমে ঢাকাও অবশ্য বিপদে! ৩ উইকেটে ৭৭ রানে দিন শেষ করেছে তারা। জয়রাজ শেখ অপরাজিত ৪৯ রানে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রাজশাহীর অবস্থাও তথৈবচ। চট্টগ্রামের বিপক্ষে অবশ্য শুরুটা ভালোই হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের দলের। তবে দুটি ধাক্কায় ধসে গেছে রাজশাহীর ইনিংস। টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া রাজশাহী চা-বিরতিতে যায় ১ উইকেটে ৯২ রান তুলে। এরপরই তারা খেই হারিয়ে ফেলে। মাত্র ২ রানের ব্যবধানে ফিরে যান জুনায়েদ সিদ্দিক ও ফরহাদ হোসেন। এক প্রান্ত আগলে লড়তে থাকা নাজমুল হোসেনকেও আউট করেছেন ইফতেখার সাজ্জাদ। চট্টগ্রামের অফ স্পিনারের শিকার হওয়ার আগে নাজমুল করেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬৩। ৩ উইকেটে ১৪১ থেকে ৭ উইকেটে ১৬৮—২৭ রানেই ৪ উইকেট পড়েছে রাজশাহীর। ইফতেখারের ঘূর্ণিতে নাকাল রাজশাহীর ইনিংস শেষ ২০৮ রানেই। ওই ইফতেখারেরই সর্বোচ্চ ৫ উইকেট।
জবাবে চট্টগ্রামের শুরুটা হয়েছে বেশ। দুই ভাই তামিম ও নাফিস ইকবাল নিরাপদেই কাটিয়ে দিয়েছেন দিনটি। প্রথম দিন শেষে চট্টগ্রাম বিনা উইকেটে ৪৩। তামিম অপরাজিত ৩৫ রানে।
বগুড়ায় শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামেও বোলারদের দাপট। টসে জিতে বরিশালকে ব্যাট করতে পাঠান সিলেট অধিনায়ক অলক কাপালি। বরিশালকে শুরুতেই চেপে ধরেন সিলেটের বোলাররা। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমদের ভেলকিতে বরিশাল গুটিয়ে গেছে ১৫৫ রানে। সর্বোচ্চ ৩৬ এসেছে আল আমিনের ব্যাট থেকে। ৩৫তম ওভারে পরপর দুই বলে সোহাগ গাজী ও মনির হোসেনকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন নাসুম। শেষ পর্যন্ত তা পাননি। তবে দলের পক্ষে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেট করেছে ১ উইকেটে ৪৫ রান।
প্রথম দিনে কিছুটা ‘ব্যতিক্রম’ ঢাকা মহানগর। অন্তত অলআউট হয়নি! খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে রংপুরের বিপক্ষে দিন শেষে মাহমুদউল্লাহর দলের রান ৭ উইকেটে ২১১। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ওপেনার শামসুর রহমানের সঙ্গে ফিফটি করেছেন আসিফ আহমেদও। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন রংপুরের দুই স্পিনার সঞ্জিত সাহা ও তানভীর হায়দার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা-ঢাকা বিভাগ, ফতুল্লা
খুলনা ১ম ইনিংস: ৩৯.৪ ওভারে ১১৭ (ইমরুল ২৭, নুরুল ২৬, আবুবকর ১৩*, রাজ্জাক ১৩; মাসুম ৪/১১, আলী আহমেদ ২/৪৫)।
ঢাকা ১ম ইনিংস: ২৪.১ ওভারে ৭৭/৩ (জয়রাজ ৪৯*, মজিদ ১০; মুস্তাফিজ ২/৩৪, জিয়াউর ১/৯)।
রাজশাহী-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৭২ ওভারে ২০৮ (নাজমুল ৬৩, জুনায়েদ ৩৩, সাকির হোসেন ২৮; ইফতেখার ৫/৬৩, মেহেদী হাসান ২/৪৮)।
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১৪ ওভারে ৪৩/০ (তামিম ৩৫*, নাফিস ৭*)।
বরিশাল-সিলেট, বগুড়া
বরিশাল ১ম ইনিংস: ৫৫ ওভারে ১৫৫ (আল আমিন ৩৬, সালেহ ২১, কবির ২১*; নাসুম ৪/৩২, খালেদ ২/২৮, কাপালি ২/৩৩)।
সিলেট ১ম ইনিংস: ২০ ওভারে ৪৫/১ (ইমতিয়াজ ২৫*, সায়েম ১১*)।
ঢাকা মহানগর-রংপুর, খুলনা
মহানগর ১ম ইনিংস: ৯২ ওভারে ২১১/৭ (শামসুর ৫১, আসিফ ৫৬, মেহেদী মারুফ ২২; সঞ্জিত ৩/৪৩, তানভীর ৩/৭৩, সাজেদুল ১/২১)।
১৮ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ