নেইমারের চার গোল মেসির অনুপস্থিতি বুঝতেই দেয়নি
স্পোর্টস ডেস্ক: ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন নেইমারের দূর্দান্ত পারফরমেন্সে রায়ো ভায়োকানোর বিপক্ষে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ৫-২ গোলের বড় ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা। লা লিগায় শনিবার রাতের ম্যাচটিতে নেইমার চার গোল করে ইনজুরি আক্রান্ত লিয়নেল মেসির অনুপস্থিতি বুঝতে দেননি।
এদিকে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর রেকর্ডে লেভান্তেকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বার্সেলোনাকে পিছনে ফেলে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ৮ ম্যাচে উভয় দলেরই সংগ্রহে রয়েছে ১৮ পয়েন্ট। রিয়ালের হয়ে ৩১০ ম্যাচে ৩২৪তম গোল করে রোনাল্ডো সাবেক তারকা রাউল গঞ্জালেসের রেকর্ড ছাড়িয়ে এখন স্প্যানিশ জায়ান্টদের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হবার কৃতিত্ব অর্জণ করেছেন।
ক্যাম্প ন্যুতে জাভি গুয়েরার গোলে রায়ো ১৪ মিনিটে আকস্মিক ভাবে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২২ ও ৩২ মিনিটে পরপর দুটি পেনাল্টিতে গোল করে নেইমার বিরতির আগে বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন। বিরতির পরে পরপর দুই মিনিটে দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণের পাশাপাশি নেইমার সুস্পষ্টভাবেই বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন। লুইস সুয়ারেজ ৭৬ মিনিটে পঞ্চম গোলটি করলে বড় জয়ের অপেক্ষায় ছিল বার্সা। ৮৬ মিনিটে জোজাবেড এক গোল পরিশোধ করলে ৫-২ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এর মাধ্যমে শেষ ম্যাচে সেভিয়ার কাছে ২-১ গোলে পরাজয়ের পরে আবারো জয়ের ধারায় ফিরলো লুইস এনরিকের দল।
ম্যাচ শেষে নেইমার বলেছেন, ‘এই জয়ে আমি দারুন খুশী। বিশেষ করে আমরা যেভাবে খেলেছি তা ছিল অসাধারণ। দলের প্রত্যেকেই অভিনন্দন পাবার যোগ্য। তবে জয়টা কঠিন ছিল, রায়োতে বেশ কয়েকজন ভাল খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের কষ্ট হয়েছে তবে আমরা নিজেদের কাজটা করতে পেরেছি।’
ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য বার্সেলোনা এগিয়ে যাবার দারুন দুটি সুযোগ পেয়েছিল। রায়ো ভায়োকানোর অনেকটা বিধ্বস্ত রক্ষনভাগের ভুলের সুবাদে ইভান রাকিটিচ ও সুয়ারেজের সামনে সুযোগ এসেছিল দলকে এগিয়ে দেবার। কিন্তু সফরকারী গোলরক্ষক টোনোর দূর্দান্ত দুটি প্রচেষ্টায় ১০ মিনিটে দুটি নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় কাতালানরা। উল্টো ১৪ মিনিটে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে বঞ্চিত বেবের ক্রস থেকে গুয়েরা গোল করে রায়োকে এগিয়ে দেন। বার্সেলোনা অবশ্য গোল পরিশোধে খুব একটা সময় নেয়নি। ডিফেন্ডার দিয়েগো লোরেন্তের ফাউলের সুবাদেও প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে নেইমার টোনোকে উল্টোদিকে পাঠিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান। মিনিটখানেক পরেই নেইমার ব্যবধান দ্বিগুন করেছিলেন। কিন্তু অফ-সাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। ৩২ মিনিটে আরেকটি পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন নেইমার।
বিরতির পরে বার্সা গোলরক্ষক ক্লডিও ব্র্যাভো গুয়েরার দুটি আক্রমন রুখে দেয় রিয়ালকে রক্ষা করেন। এরপর অবশ্য নেইমার ও সুয়ারেজের কাছে পরাস্ত হয় রায়ো। ৬৯ ও ৭০ মিনিটে নেইমার ও ৭৬ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে রায়োর পরাজয় সময়ে ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়।
সানতিয়াগো বার্নাব্যুতে কালকের ম্যাচের পুরো গুরুত্বটাই ছিল রোনাল্ডোকে ঘিড়ে। সমর্থকদের অবশ্য হতাশ করেননি সিআর সেভেন। মার্সেলোর ২৭ মিনিটের গোলে এগিয়ে যাবার তিন মিনিট পরে রোনাল্ডো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। সেই সাথে মাদ্রিদের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হবার রেকর্ড গড়েন। ৮১ মিনিটে জেসি রড্রিগুয়েজের গোলে ৩-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে গ্যালাকটিকোরা। ইনজুরির কারনে কাল মাঠে ছিলেন না সার্জিও রামোস, লুকা মোদ্রিচ, হামেস রদ্রিগেজ ও করিম বেনজেমা। কিন্তু রাফায়েল বেনিতেজের শিষ্যদের সহজ জয় তুলে নিতে তারকাদেও অনুপস্থিতি কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
১৯ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ