প্রোটিয়াদের কাছে হেরে যা বললেন ধোনি
স্পোর্টস ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে হেরে পিচকে দুষলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের মিডল অর্ডারে কার্যকর ব্যাটসম্যান প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৯২ রানে অপরাজিত থেকে ভারতের জয়ের নায়ক ছিলেন ধোনি।
দুর্দান্ত ওই ইনিংসের কারণে সমালোচকদের মুখ কিছুটা বন্ধ ছিল। কিন্তু তৃতীয় ওয়ানডেতে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৮ রানে হারের পর তা আবার শাণিত হয়েছে। জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে হেরে গেছে এদিন ভারত। ওয়ানডেতে তাদের টেস্ট স্টাইলের ব্যাটিং অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু ঠেকেছে। কিন্তু ধোনি বলছেন, এছাড়া উপায় ছিল না। মন্থর গতির পিচের কারণে তারা ব্যাট চালিয়ে খেলতে পারেননি।
এছাড়া আউটফিল্ড বড় হওয়ায় সাহস করে শট খেলতে পারেননি ভারতের ব্যাটসম্যানরা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ এ পিছিয়ে পড়ে সাংবাদিকদের সামনে মেজাজ হারান ধোনি। মিস্টার কুলখ্যাত এ অধিনায়ক গত তিন বছরে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাটালেও এই দ্বিতীয়বার মেজাজ হারালেন। এর আগে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে পিছয়ে পড়ার পর এমন মেজাজ দেখিয়েছিলেন। আর এদিন তার মেজাজে যেন আগুন ধরিয়ে দেয় ‘আতশবাজি’।
স্বাগতিক ভারতের জয়েই মাঠে আতশবাজি ফোটার কথা। কিন্তু হলো উল্টোটা। হেরে খারাপ মেজাজ নিয়ে যখন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন ঠিক তখনই রাজকোটের স্টেডিয়ামে দেখা যায়, আতশবাজির রোশনাই। ভারতের জয় আশা করে আগ থেকেই তারা এ আতশবাজি জমা করে রেখেছিল। কিন্তু ভারত হেরে গেলেও তা তা নষ্ট হতে দেয়নি। এতে সাংবাদিকদের সামনে থেকে প্রথমবার উঠে যান ধোনি।
কিন্তু পরে যখন ফেরেন তখনও তার মেজাজে ছিল আগুন। কিছুক্ষণ চুপ থেকে একে একে সাংবাদিকদের বাউন্সার সামলাতে থাকেন তিনি। হারের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘প্রথম দশ ওভারে আমরা যথেষ্ট রান পাইনি। পরের দিকে উইকেট মন্থর হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে বড় শট খেলা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। বিরাট (কোহলি) আর আমি সেট হয়ে গিয়েও বল ঠিকমতো শাঝ ব্যাটে পাচ্ছিলাম না।
আউটফিল্ডও তো বেশ বড় এখানে। বোলারদের পেস কাজে লাগানো যাচ্ছিল না। ২৭১ রান সামনে নিয়ে এদিন শুরু থেকেই উইকেট ধরে রেখে মন্থর গতিতে ব্যাট করে ভারতীয়রা। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে তারা ১৯৩ রান তুলে ফেলে। কিন্তু ততক্ষণে পার হয়ে যায় ৪২ ওভার। এ সময় টেস্ট ও ওয়ানডের অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও ধোনির ব্যাটিং দেখে অনেকে মনে করছিলেন, ভারত কি উইকেট পুজো করবে, যে রেখে দিচ্ছে! কেন তারা মেরে খেলছেন না? অবশ্য এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ধোনি। তৃতীয় উইকেটে তারা ৮০ রান যোগ করেন ১৮.৪ ওভার খেলে। ওভারপ্রতি নেন ৪.২৮ রান।
এর আগে উদ্বোধনী জুটিতে শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা ওভারপ্রতি ৩.৮৪ করে রান নিয়ে ১০.৪ ওভার খেলে যোগ করেন ৪১ রান। ধাওয়ান ১৩ রানে ফেরেন ২৯ রানের মোকাবিলায়। এদিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ৩০০ বলের ১৬০ বলে কোন রান নিতে পারেনি। এমন ধীরগতির ব্যাটিংয়ের পরও উইকেট হাতে থাকায় জয়ের আশা দেখছিল ভারত। কিন্তু ধোনি ৪৭ ও কোহলি ৭৭ রানে ফেরার পর মরনে মরকেলের তোপে পড়ে অন্যরা। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান তুলতে পারে তারা। প্রোটিয়া বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ব্যাট চালিয়ে খেলতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ব্যাট চালিয়ে খেলতে গেলেই আউট হয়েছে।
ধোনি ও কোহলির জুটি ভাঙতেই যে ভারত চাপের মুখে ভেঙে পড়ে তা স্বীকার করলেন অধিনায়ক। বলেন, ‘এই চাপ তো সামলাতে হবেই। না পারলে এ রকমই সমস্যায় পড়তে হবে।’ পাওয়ার প্লে’র (৪০ ওভার পর্যন্ত) নতুন নিয়মও যে তাদের কিছুটা সমস্যায় ফেলছে, তাও বলেন ধোনি। বলেন, ‘সার্কেলের মধ্যে একজন বাড়তি ফিল্ডার থাকলে (পাঁচটা) স্কোর করা একটু কঠিন। সেক্ষেত্রে বড় শট খেলতে হয়। কিন্তু এই উইকেটে যে বড় শট খেলা সহজ ছিল না তা তো আগেই বললাম। উইকেটটা যে ক্রমশ এমন ব্যবহার করবে, তা আগে ভাবিনি।’
২০ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আসিফ/এআর
�