স্পোর্টস ডেস্ক: মনে করুন তো, ওয়ানডেতে এমন বাংলাদেশকে শেষ কবে দেখা গেছে? পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বাগতিকদের ৩০০ রানের নিচে আটকে ফেলা সম্ভব হয়েছিল বোলারদের কারণে। কিন্তু সিরিজজুড়ে ব্যাটিং দাপট দেখানো বাংলাদেশ ২৮১ রানের টার্গেটেই যে ভেঙে পড়বে তা কে জানত? ১১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর এখন ১১৮ রানে ৬ উইকেট নেই বাংলাদেশের! সেট হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা। অলৌকিক কিছু না ঘটলে এই ম্যাচের ফলাফল কী হবে তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু শ্রীলংকাকে উইকেট বিলিয়ে বাংলাদেশকে হারানোর পথে নিয়ে গিয়েছে টাইগাররা! ইতিমধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। জয়ের এখনও দরকার ২২ ওভারে ১৪৮ রান।
২৮০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১১ রানেই গুরুত্বপূর্ণ ৩ ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন অনেকদিন পর দলে ফেরা নুয়ান কুলাসেকারা। ৪ রানে ক্যাচ দিয়ে তামিম ইকবালের বিদায়ের পর বাজে শট খেলতে গিয়ে ০ রানে ফিরে যান সাব্বির রহমান। ১ রানের ব্যবধানে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার হন 'মি. ডিপেন্ডেবল' খ্যাত মুশফিকুর রহিম। এই জোড়া ধাক্কা সামলানোর আগেই এলবিডাব্লিউ মুশফিকুর রহিম (০)! রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি কোনো। এরপরই দলের হাল ধরেন ওপেনার সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান।
আশাকে হতাশায় পরিণত করে আরও একবার উইকেটে থিতু হয়ে আউট হলেন সৌম্য সরকার। ৩ উইকেট পতনের পরও তার ব্যাটে দেখা যাচ্ছিল স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি। মনে হচ্ছিল বিপদ কেটে গেছে। চতুর্থ উইকেটে জুটিও হয়ে গেছে ৭৭ রানের। কিন্তু সেই মুহূর্তে দিলরুয়ান পেরেরার বলে ৪৪ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৮ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন সৌম্য। তবে স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন সাকিব আল হাসান। তার কিছু পরেই দলীয় ১১১ রানে বোল্ড হয়ে যান মোসাদ্দেক (৯)। সাকিবও ৫৪ রান করে উইকেটে থাকার আর প্রয়োজন বোধ করলেন না। দিলরুয়ান পেরেরার বলে বাজে শটে আউট হওয়ার সাথে ৬ষ্ঠ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ নম্বর ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেরার ব্যাটিং তাণ্ডবে ৯ উইকেটে ২৮০ রান তোলে স্বাগতিকরা। দাপুটে ব্যাটিংয়ে ওপেনিং জুটিতে ৭৬ রান আসার পর কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু এনে দেন তরুণ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে ৩৪ রান করে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের তালুবন্দি হলেন দানুশকা গুনাথিলাকা। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বিপজ্জনক উপুল থারাঙ্গাকে বোল্ড করে দেন তাসকিন আহমেদ। দিনেশ চান্দিমালও ৩৫ বলে ২১ রান করে মুশফিকের ক্ষিপ্রতায় রান আউট হয়ে যান। এরপর বদলি ফিল্ডার শুভাগতর থ্রোতে সেই মুশফিকের নৈপুণ্যে রান আউটের স্বাদ পান শ্রীবর্ধনা (১২)।
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ৬৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল মেন্ডিস। শেষ পর্যন্ত ৫৪ রানেই মুস্তাফিজের অফ কাটারে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ে থামতে হয় তাকে। নিয়মিত উইকেট হারানোর মাঝে দলের হাল ধরেন ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নামা থিসারা পেরেরা। তার ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ৫২ রানের ঝোড়ো ইনিংস থামে মাশরাফির বলে তাসকিনের তালুবন্দি হয়ে। অষ্টম উইকেটে জুটি হয় ৪৫ রানের। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট তুলে নেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২ উইকেট নিয়েছেন ফর্মে ফেরার চেষ্টায় থাকা কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান।
০১ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি