শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭, ০৩:১২:১৫

চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে যে কোনো বিদেশি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত: বাশার

চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে যে কোনো বিদেশি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত: বাশার

স্পোর্টস ডেস্ক: ২০০৬ সালে খেলা নিজেদের সর্বশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়া হাবিবুল বাশার সুমন ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির একজন অন্যতম শুভেচ্ছাদূত হিসেবে ইতোমধ্যে মনোনীত হয়েছেন। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুভেচ্ছাদূত হাবিবুল বাশার সুমন বিশ্বাস করেন যে বিদেশি দলগুলোর চ্যালেঞ্জ নিতে বাংলাদেশ এখন খুব ভালোভাবে প্রস্তুত আছে।

১১ বছর পর সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকেট পাওয়াকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের  উন্নতির একটি বড় উদাহরণ বলে মনে করেন বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই নির্বাচক। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি আইসিসি.কমকে তিনি বলেন, ‘এ বছরে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে উন্নতির দিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এগিয়ে যাওয়ার একটি বড় পদক্ষেপ যেটা দলের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন এটা আমাদের জন্য একটি সুযোগ বর্তমানে ওয়ানডে ক্রিকেটে আমরা কতটুকু দক্ষ তা প্রদর্শন করার।’

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট খুব দ্রুত সামনে এগিয়ে যাচ্ছে বিশেষকরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। কিন্তু দেশের মাটিতে তাঁরা যেরকম সফলতা পাচ্ছে তার সাথে তাল মিলিয়ে বিদেশের মাটিতে তেমন সফল হতে পারছে না বাংলাদেশ। ২০১৫ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার পর দেশের মাটিতে বাংলাদেশ টানা ওয়ানডে সিরিজ জিতে যথাক্রমে পাকিস্তান (৩-০), ভারত (২-১), দক্ষিণ আফ্রিকা (২-১), জিম্বাবুয়ে (৩-০) ও আফগানিস্তান (২-১) এর বিপক্ষে।

যদিও এই সময়টাতে দেশের বাইরে বাংলাদেশ মাত্র দুটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড (০-৩) ও শ্রীলঙ্কার (১-১) বিপক্ষে কিন্তু বাশার আত্মবিশ্বাসী মে মাসে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের সাথে শুরু হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে ইংল্যান্ডের ভিন্ন কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের। তিনি বলেছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে গত দুই বছর ধরে আমরা পরিকল্পনা করে যাচ্ছি। দেশের বাইরে আমাদের খুব বেশি সাফল্য নেই কিন্তু এবার দেশের বাইরেও সফল হওয়ার জন্য বর্তমানে আমরা প্রস্তুত আছি। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপে আমরা ভালো খেলেছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজ এখন দেশের বাইরেও ভালো ফলাফল করার অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে আমাদের ক্রিকেটারদের।’

তিনি আরো বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য আলাদাভাবে পরিকল্পনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে কারণে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাচ্ছি আমরা। ইংল্যান্ডের ভিন্ন কন্ডিশনে খেলার জন্য এটা দারুণভাবে সাহায্য করবে আমাদের। আপনি এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এক ভিন্ন বাংলাদেশকে দেখতে পাবেন।’

২০০৬ সালে ভারতে নিজেদের খেলা সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি জয় পাওয়া বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্টের শুরুতেই বাদ পড়ে যায়। কিন্তু ২০০৭ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্য পাওয়ার পেছনে সেই টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতাকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন হাবিবুল বাশার সুমন, ‘যদিও আমরা ২০০৬ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন ম্যাচের মধ্যে দুটোতেই হেরেছি কিন্তু আমরা ওই টুর্নামেন্ট থেকে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম যা পরবর্তীতে ২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপে আমাদের সফলতার পেছনে খুব ভালো কাজ করেছিলো।’

বাশার আরো যোগ করেন ২০০৭ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স, যেখানে টুর্নামেন্টের শুরুতে ভারতকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিয়েছিলো তাঁরা। এ জয়কে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের রূপান্তরের অন্যতম একটি উদাহরণ বলে মত তাঁর, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশকিছু ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলে আমরা বেড়ে উঠেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের পথচলা সহজ ছিল না। শুরুর দিকে একটা লম্বা সময় ধরে আমরা সংগ্রাম করেছি। ২০০৪ সাল থেকে আমরা ম্যাচ জিততে শুরু করেছি কিন্তু ধারাবাহিকভাবে নয়। তারপর ২০০৭ বিশ্বকাপের পর আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি যে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে যেকোন দলকে হারানোর সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। আমি মনে করি এই আত্মবিশ্বাসই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবকিছু বদলে দিয়েছে।’

২০০৬ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের হয়ে খেলা শুধু মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান আছেন এবারের আসরের বাংলাদেশ দলে এবং এ দুজনই বাংলাদেশ ক্রিকেটের অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা পালন করছেন। এই দুজনের সম্বন্ধে হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘আমাদের সাম্প্রতিক সাফল্যে মাশরাফি এবং সাকিবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শুধু তাদেরই নয়, অভিজ্ঞ খেলোয়াড় যেমন -মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল এবং মাহমুদউল্লাহও দলের উন্নতিতে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে আমাদের দলে বেশকিছু তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের যত সাফল্য তার মূলে রয়েছে তরুণ ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের যৌথ প্রয়াস।’-খেলাধুলা
২২ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে