রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ০৪:২৪:৪৭

এবারের আইপিএলের চমক রশিদ খান

এবারের আইপিএলের চমক রশিদ খান

স্পোর্টস ডেস্ক: বেড়ে উঠেছেন বুলেট-বোমার মধ্যে। ১৯৯৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নানগাহারে যখন তাঁর জন্ম, আফগানিস্তানে তখন তালেবান শাসনের দোর্দণ্ড প্রতাপ। নিজের দেশে শান্তি বলতে যা বোঝায়, সেটি কখনোই চোখে দেখেননি। তার পরেও প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি আর ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসাই রশিদ খানকে এই জায়গায় এনেছে। এবারের আইপিএলের বড় চমক এই লেগ স্পিনার। তাঁকে নিয়ে কৌতূহল ভারতীয় মিডিয়ারও। এবারের আইপিএলের চমক বলা হচ্ছে তাঁকে, গতবার যেটি ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের দলেই খেলেন রশিদ।

গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেই নজর কেড়েছিলেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সুযোগ পেয়েছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসে। দলে বড় বড় তারকার ভিড়ে মনোযোগটা কেড়ে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট নিয়ে। বড় মঞ্চে ধারাবাহিকভাবে ভালো করার পুরস্কার হিসেবেই গত আইপিএলের নিলামে বেশ বড় দাম পেয়েছেন। আর ৪ কোটি রুপি দামটা যে এমনি এমনি পাননি, সেটা শুরু থেকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলা রশিদ এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ১১ উইকেট। উইকেটের চেয়েও কখনো কখনো আলোচনায় তাঁর কৃপণ বোলিং, টি-টোয়েন্টিতে যেটা বেশি দামি। গত দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১৬ ও ১৭ রান দিয়ে নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

আইপিএলে হায়দরাবাদের অন্যতম ভরসা হয়েছেন অভিষেকেই। দেশের ভরসা কিন্তু রশিদ অভিষেকের পর থেকেই। ২০১৫ সালের অক্টোবরে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে অভিষেক তাঁর। ২৬ ওয়ানডে খেলে ৫৩ উইকেট নিয়েছেন। সর্বশেষ ১০ ওয়ানডেতে তাঁর উইকেট-সংখ্যা ২৬! ২৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪০ উইকেটও তাঁর দারুণ ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত। শেষ ১০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রশিদ নিয়েছেন ২৩ উইকেট।

চারদিক থেকে সাফল্য আসছে। অর্জনের খাতাগুলোও খুলছে খুব দ্রুত। রশিদ কী ভাবছেন নিজেকে নিয়ে। ১৮ বছর বয়সেই দারুণ পরিণত তাঁর ভাবনা। পুরো বিষয়টিকেই তিনি তাঁর দেশের অর্জনই মনে করেন, ‘এই অর্জন তাদের (সমর্থক) কাছে অনেক কিছুই। এমন একটা মঞ্চে এসে পারফর্ম করাটা কিন্তু তাদের কাছে ইতিবাচক বার্তাই পৌঁছে দিচ্ছে।’
বার্তাটা খুব পরিষ্কার—কঠোর পরিশ্রম করো। নিজের সেরাটা উজাড় করে দাও। তবেই না নিজের লক্ষ্যটা অর্জন করা সম্ভব! রশিদও তাঁর জীবনে এই মন্ত্রেই অনুপ্রাণিত। লক্ষ্যে স্থির থেকে প্রচণ্ড পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আর সে কারণেই যে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলেছেন।

আইপিএলে তিনি একা নন; আছেন তাঁর দেশের মোহাম্মদ নবীও। তিনিও আছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদেই। দুই আফগান ক্রিকেটারের আইপিএল অভিযান দেশের মানুষের কাছে যে কত বড় ব্যাপার, জানিয়েছেন সেটিও, ‘গোটা আফগানিস্তান আইপিএল উপভোগ করে। আমাদের খেলা থাকলে আমাদের জন্য প্রার্থনা করে। আমাদের তারা ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করে। আমি মনে করি, তাদের প্রার্থনার কারণেই আমরা ভালো করছি।’ সূত্র: এনডিটিভি।
৩০ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে