৩২ ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দিয়েছেন সেই কিংবদন্তি
স্পোর্টস ডেস্ক : শেষ ওভারটিতে দিয়ে ফেললেন আ-ট রান। এর আগের দুই ওভারে তিন। শেষ তিন ওভারে ১১ রান দেওয়ার আগে কাল স্টুয়ার্ট ব্রডের বোলিং ফিগার দেখাচ্ছিল: ১০-৮-২-১।
দশ ওভারের আটটিতেই মেডেন, রান দিয়েছেন দুই। ইংলিশ পেসারের ইকোনমি রেট ০.২! ৩২ ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দিয়েছেন বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের এক কিংবদন্তি।
শেষের তিনটা ওভার করতে না হলে কমপক্ষে দশ ওভার কিংবা ৬০ বল করা ইনিংসগুলোর সবচেয়ে কৃপণ বোলিংয়ের রেকর্ডেই ঢুকে যেতেন ব্রড! শূন্য দশমিক ২ হয়ে যেত টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় কৃপণতম বোলিংয়ের রেকর্ড। একে কে আছেন? কে আবার, বাপু নাদকার্নি!
রমেশচন্দ্র গঙ্গারাম নাদকার্নি। পুরো নাম যত অকৃপণ লম্বা, ততটাই কিপ্টে ছিলেন তিনি বোলিংয়ে। বাঁ হাতি স্পিনে ৪১ টেস্টে মাত্র ৮৮ উইকেট নিয়েও ক্রিকেট ইতিহাসে বিখ্যাত হয়েছে আছেন শুধুমাত্র কৃপণ বোলিংয়ের কারণে। উইকেট নিয়েই বোলারদের বিখ্যাত হবে—কে বলেছে!
এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হয়ে আছে ১৯৬৪ সালে ইংল্যান্ডের ভারত সফরের প্রথম দুটো টেস্ট। সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে একটিও উইকেট পেলেন না। কিন্তু ওই উইকেট-না-পাওয়া ইনিংসটাই বিখ্যাত করে দিল তাঁকে। ৩২ ওভার বোলিং করে দিলেন মাত্র ৫ রান! ২৭টাই মেডেন! এর মধ্যে টানা ২১ ওভারই মেডেন! ১১৪ মিনিটের বোলিং স্পেলে টানা ১৩১টি ডট বল!
০.১৫ ইকোনমি রেটটা আজও ৫১ বছর ধরে আজও টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে কৃপণ বোলিংয়ের রেকর্ড হয়ে আছে। পরে টেস্টে ১৪ ওভার বোলিং করে দিয়েছিলেন ৩ রান। ০.২১ ইকোনমি রেট নিয়ে এটি কৃপণ বোলিংয়ের রেকর্ডে আছে তিনে।
ওই সিরিজের শেষ টেস্টে ৫২ ও ১২২ রানের অপরাজিত দুটো ইনিংস মনে করিয়ে দিচ্ছে তাঁর অলরাউন্ডার পরিচয়টি। তবে ব্যাটিংয়ে রান কিংবা বোলিংয়ে উইকেট নেওয়া নয়, বাপুকে ইতিহাস মনে রেখেছে নিখুঁত লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিরামহীন বোলিং করে যাওয়ার সামর্থ্যের কারণে।
নেটে গুড লেংথে একটা পয়সা রেখে সেই পয়সার ওপর বল ফেলে পেলে অনুশীলন করতেন। এই একাগ্রতায় নাদকার্নি ছিলেন যেন সাক্ষাৎ অর্জুন। হালের মারকাটারি ক্রিকেটে এমন বোলারদের দেখা পাওয়া বিরল। তবে গত বছর কেপ টাউন টেস্টে নাথান লায়ন ২২ ওভারের ১৭টাতেই মেডেন নিয়ে মাত্র ১০ রান দিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিল ০.৪৫।
ইকোনমি রেটের রেকর্ডটার শীর্ষ স্পিনারদের দাপট থাকলেও গতকাল ব্রড দেখিয়ে দিয়েছেন, নিখুঁত লাইনের নিশানাবাজিতে পেসাররাও অর্জুন হয়ে উঠতে পারেন বৈকি।-প্রথম আলো
৬ নভেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর