বল পিটিয়ে রেকর্ডবুক পাল্টে দিলেন মিসবাহ
স্পোর্টস ডেস্ক : মিসবাহ-উল হক যেন প্রতিজ্ঞা-টতিজ্ঞা করেই মাঠে নামছেন। যা-ই করুন না কেন, রেকর্ড বইটা বারবার উল্টে দেখতে বাধ্য করবেন ক্রিকেটের গ্রন্থকীটদের! গত কিছুদিন ধরেই বেশ কিছু রেকর্ড নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে বাধ্য করেছেন। এবার এমন এক ‘কীর্তি’র সন্ধান মিলল, সেটিও বেশ বিরল। তবে এমন কীর্তির পাশেও যে তাঁর নাম উঠবে, সেটা হয়তো মিসবাহ নিজেও ভাবেননি!
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দুই ইনিংসেই যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতেই ৪১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান আবারও বাধ্য করলেন ধুলো জমা ইতিহাসের পাতা ওল্টাতে। ইংরেজিতে বলা হচ্ছে ‘রেয়ার ফিট’। বাংলা করা কঠিন। ‘বিরল কীর্তি’ই ভালো শোনায়। ১৩৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসই এমন নজির যে আসলেই এর আগে ছিল মাত্র দুবার।
দুবাই টেস্টের প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি, দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ১০২ রানে। ৪ উইকেটে ২৮২ রান নিয়ে দিন শেষ করা পাকিস্তান হয়তো আরও বড় সংগ্রহের স্বপ্ন বুনছিল অধিনায়কের ব্যাটে। তা আর হলো কই! দ্বিতীয় দিনের পঞ্চম বলেই আউট মিসবাহ, ওই ১০২ রানেই। দলের রানও তখন আগের দিনের সমানই রয়ে গেছে।
দ্বিতীয় ইনিংসের গল্পটা দেখে একটা শব্দই মনে পড়বে—দে জা ভ্যু।
এবারও মিসবাহর গল্পটা যে একই। তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ৮৭ রানে। পরের দিন সকালেই আউট! এবারও কোনো রান যোগ করতে না পেরেই।
আগের রাতের অপরাজিত ব্যাটসম্যান পরের দিন কোনো রান না করেই আউট—টেস্ট ক্রিকেটে এমনটা হতেই পারে। কিন্তু একই টেস্টের দুই ইনিংসে একই ব্যাটসম্যানের এমনভাবে আউট হওয়া? ১৯৯০-৯১ সালে প্রথম এমন নজিরের সাক্ষী হলেন শ্রীলঙ্কার চম্পকা রমানায়েকে। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হ্যামিলটন টেস্টে দুবারই নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমেছিলেন এই পেসার। 'নাইটওয়াচে'র দায়িত্বটা ঠিকঠাকই পালন করেছেন, তবে দুই ইনিংসেই পরের দিন সকালে আউট হয়েছেন কোনো রান না করেই।
পরের ঘটনাটি এর এক দশক পর, ২০০০-০১। এবারের কীর্তিমানও একজন বোলার—ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেগ স্পিনার দিননাথ রামনারাইন। পোর্ট অব স্পেনে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টেস্টের প্রথম ইনিংসে যখন আট নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এলেন, দ্বিতীয় দিনের খেলার বাকি আর ১৯ বল।
ওই সময়টা ভালোভাবেই পার করে দিলেন রামনারাইন। তবে পরের দিনের ষষ্ঠ বলটিতেই সব প্রতিরোধ শেষ। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য নেমেছিলেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে, চতুর্থ দিনের শেষদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর। ডোনাল্ড-পোলক-এনটিনিদের ৩৬টি বল ঠেকিয়ে ১১ রানও করেছিলেন। রাতে ঘুমের মধ্যে টেস্টে প্রথম ফিফটি-টিফটির স্বপ্নও দেখেছিলেন কি না কে জানে! তবে স্বপ্নটা ধুলোয় মিশে গেল পঞ্চম দিন চতুর্থ ওভারেই।
দুজন সঙ্গী পেলেও একটা জায়গায় তাহলে একাই পড়ে রইলেন মিসবাহ। একই টেস্টে এমনভাবে আউট হওয়া একমাত্র স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান যে তিনিই, বাকি দুজনই টেল এন্ডার।-প্রথম আলো
৫ নভেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর