শুক্রবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ০৭:৪৯:৪২

শীর্ষ দশ ধনী ক্লাবের মালিক যারা

শীর্ষ দশ ধনী ক্লাবের মালিক যারা

স্পোর্টস ডেস্ক: ইউরোপীয় ফুটবলের ক্লাব গুলো এখন টিকে আছে ঐতিহ্যের কারণে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিক ফুটবলে অর্থের ঝনঝনানি এতই বেড়েছে যা ইউরোপীয় ফুটবলকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। অর্থের কাছে এখন যেকোনো ফুটবলাররা পরাজিত হয়ে পড়ে। অনেক সময় এই অর্থের কারণেই প্রিয় ক্লাব ছাড়তেও কোনো খেলোয়াড় একবারও চিন্তা করে না। অনেকেতো আবার খেলার সুযোগ না পেয়েও বছরের পর বছর ডাগ আউটে বসে দিন কাটাচ্ছেন। 

এত অর্থকড়ি ব্যয় কিংবা ক্লাবের উন্নয়নের পিছনে যাঁরা আসল কারিগর হিসেবে কাজ করেন তারা হলেন ক্লাবের মালিকরা। কিছু অসাধারণ মানুষের জন্য আজ ইউরোপীয় ফুটবল আরও পরিপূর্ণ। আসুন এখন জেনে নেওয়া যাক এমনই কয়েকজন ধনী ক্লাব মালিকের পরিচিতি যাদের সম্পর্কে কিছু কথা না জানলে অনেক কিছু হয়তো অজানা থেকে যাবে।
ক্লাব: রিয়াল মাদ্রিদ, প্রেসিডেন্ট: ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ

রিয়াল মাদ্রিদের মূল মালিকানা দলের শেয়ারহোল্ডারা। তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের মাধ্যমেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে ক্লাব ফুটবলে অন্যতম রাজকীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। বর্তমানে ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট। তবে তিনিও রিয়াল মাদ্রিদের শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে একজন। তাই তাঁকে মালিক হিসেবেও গণ্য করা যায়। টেনিস তারকা রাফায়েল নাদালও রিয়াল মাদ্রিদের একজন শেয়ারহোল্ডার।
ক্লাব: বার্সেলোনা, প্রেসিডেন্ট: জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ

রিয়াল মাদ্রিদের মত বার্সেলোনাও শেয়ারহোল্ডারদের অর্থেই সচল। কাতালান এ ক্লাবটি স্পেন থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের স্বাধীনতা দাবি করছে। অতীত ইতিহাস বলে স্পেনের রাজপরিবারের বর্বরতার কারণে তাদের পছন্দ করতো না কাতালোনিয়ার কেউই। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বার্তামেউ নিজেও একজন বার্সেলোনার শেয়ার হোল্ডার।
ক্লাব: বায়ার্ন মিউনিখ, চেয়ারম্যান: কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে

বর্তমান প্রেসিডেন্ট রুমেনেগ হলেও জার্মানীর ইতিহাসের সেরা এ ক্লাবের মালিক সেই শেয়ারহোল্ডাররা। এক কথায় জার্মানীর ক্লাব ফুটবলকে এক ঘোড়ার রেসে পরিণত করতে কাড়িকাড়ি টাকা-পয়সা যোগান দিচ্ছেন এই শেয়ারহোল্ডাররা। বায়ার্ন মিউনিখের মূল মন্ত্রই হচ্ছে জার্মান খেলোয়াড় খেলানো। তাদের এমনভাবে সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় যেন সহজে জার্মান ছেড়ে অন্য ক্লাবের হয়ে খেলতে যেতে না চায়।
ক্লাব: এসি মিলান, মালিক: লি ইয়ংহং

বছর দুয়েক আগেই সাবেক মালিক আদ্রিয়ানো গ্যালিয়ানির কাছ থেকে চাইনিজ ব্যবসায়ী ইয়ংহং লি এসি মিলান ক্লাবটি কিনে নেন ৭৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। এরপর দলকে নতুন করে সাজাতে আরও প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করেন ২০১৭-১৮ দলবদলের বাজারে। সব মিলিয়ে প্রায় এক বিলিয়ন ইউরো খরচ করে নতুন মালিক।
ক্লাব: ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, সিইও: এড উডওয়ার্ড

নিউইয়র্ক ষ্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার অবমুক্ত করে দিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের মাধ্যমে ক্লাবের ৯০ শতাংশ মালিকানা শেয়ারহোল্ডারদের দেয়া হলেও এড উডওয়ার্ড ক্লাবের সিইও এবং একজন শেয়ারহোল্ডারও বটে। যদিও ক্লাবের নীতিনির্ধারণ কিংবা অন্য কোন কাজের সিদ্ধান্ত আসে গ্লেজার ফ্যামিলির পক্ষ থেকে। এ পরিবার ক্লাবের ১০ শতাশ শেয়ারের মালিকও।
ক্লাব: পিএসজি, মালিক: নাসের আল খেলাইফি

কিছুদিন আগেই পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন বার্সেলোনার সাবেক সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র। আর তাকে দলে নিতে পারার মত ক্ষমতা ইউরোপিয়ান ফুটবলে যে কয়টি ক্লাবের আছে তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে পিএসজি। আর পিএসজির প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন নাসের আল খেলাইফি।

যিনি কাতারের অরিক্স কাতার ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির মালিক। এই কোম্পানির প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের মত সম্পত্তি রয়েছে। খেলাইফি কাতারের খেলাধুলার সঙ্গেও জড়িত আছেন। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতিও তিনি। তিনি যে বেশ ক্ষমতাবার সেটার প্রমাণ তিনি নেইমারের মত সুপারস্টার কে কিনেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।
ক্লাব: লিভারপুল, মালিক: ফেনওয়ে স্পোর্টস গ্রুপ

লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের মালিকানা এখন আমেরিকান একটি স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপের হাতে। আমেরিকান মেজর বেসবল লিগের দল বোস্টন রেড সক্সের মালিকানাও এই স্পোর্টস গ্রুপেরই।
ক্লাব: জুভেন্টাস, মালিক: এক্সর এন ভি

ইতালির অন্যতম সেরা ক্লাব জুভেন্টাসের মালিকানা নেদারল্যান্ডভিত্তিক ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি এক্সর এনভির। কিন্তু জুভেন্টাসের পুরো দেখাশোনার ভার ইতালির আগনেল্লি ফ্যামিলির হাতে। এক্সর ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৪০.১ বিলিয়ন ডলারের মত। কিছুদিন আগেই ১০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় রোনালদোকে ভিড়িয়েছে জুভেন্টাস। রোনালদোকে দলে ভেড়ানোর পর থেকে ক্লাবের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে যা ছিল জুভেন্টাসের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ক্লাব: চেলসি, মালিক: রোমান আব্রামোভিচ

রাশিয়ান ধনকুবের আব্রামোভিচ ২০০৩ সালে ১৪০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে কিনে নেন চেলসি ফুটবল ক্লাব। মোট ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সম্পত্তির মালিক এই রাশিয়ান চেলসি কিনে নেবার পরই মূলত চেলসির উত্থান শুরু।
ক্লাব: ম্যানচেস্টার সিটি, মালিক: শেখ মনসুর

মাত্র ২০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবকে কিনে নেন শেখ মনসুর। মালিকানা পরিবর্তনের তাদেরকে রেলিগেটেড হয়ে দ্বিতীয় বিভাগেও খেলতে হয়েছে। কিন্তু মনসুর ক্লাব মালিকানা পাওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে থাকে তাদের ইতিহাস। আবুধাবি ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান মনসুর কোন দিক থেকে ক্লাবকে ঢেলে সাজাতে ধিধা করেননি। এখন দলে খেলছেন ডেভিড সিলভা,ভিন্সেন্ট কোম্পানি, আগুয়েরোদের মত তারকারা। সেই সঙ্গে আছেন বর্তমান সময়ের সেরা কোচ পেপ গার্দিওয়ালা। এ সব কিছুই মনসুরের অবদান। গত মৌসুমেই প্রিমিয়ার লিগ ঘরে তোলে সিটি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে