সোমবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:১৫:০৩

‘খবরদারির অপর নাম ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড’

‘খবরদারির অপর নাম ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড’

স্পোর্টস ডেস্ক: একটা সময় ছিল যখন ক্রিকেটে দুই মোড়ল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড পুরো ক্রিকেটকেই যেন নিজের মতো করে পরিচালনা করতো। কিন্তু সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মোড়লের তালিকায় যোগ হয়েছে নতুন মোড়ল ভারত। তবে মোড়গিরি কাকে বলে তা ইতিমধ্যেই পুরো বিশ্বকে ভালোভাবেই দেখিয়ে দিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপে তার প্রমাণ ক্রিকেট বিশ্ব ভালোভাবেই পেয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জোর করে ভারত যেভাবে জিতেছে তা নিশ্চয় ভুলে যাওয়ার মতো কোন স্মৃতি নয়। এতো গেল ভারতীয় খবরদারীর একটা অংশের ছোট্ট বিবরণ। শুধু তাই নয়, আইসিসি সভাপতি পদে যখন ভারতীয় ব্যক্তি ছিল তখনও ক্রিকেটকে তারা নিজেদের মতো করে পরিচালনা করেছে। তাছাড়া ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এর সভাপতি ভারতীয় ক্রিকেট দল এবং আইপিএলকে যেভাবে কলঙ্কিত করেছে, তাতে ক্রিকেট যে আর ক্রিকেট নেই তা সবারই জানা। আরও স্পষ্ট করে বললে বলতে হয়, শ্রীনির কথা মনে আছে তো? সব দিক বিবেচনা করে তাই তো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল বললেন, ‘খবরদারির অপর নাম ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।’ সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক আরও বলছেন, বর্তমান ক্রিকেট ব্যবস্থায় যে ক্ষমতা পাচ্ছে ভারত, সেটির অপব্যবহার করছে তারা। আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে প্রাপ্ত ক্ষমতাটা ব্যবহার করার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। চ্যাপেলের মতো করে বিসিসিআইকে আরও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিষেন সিং বেদিও। রবিবার দিল্লিতে ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক দ্য হিন্দুস্তান টাইমস আয়োজিত লিডারশিপ সামিটে কথাগুলো বলেছেন বেদি-চ্যাপেল। এই দুই সাবেকের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সাবেক বিচারপতি মুকুল মুডগাল এবং অনেকটাই ‘সাবেক’ হয়ে যাওয়া গৌতম গম্ভীর। তাদের সবারই মতে, বিসিসিআইয়ের পরিচালনায় রাজনীতিকদের অংশগ্রহণ কমাতে হবে। আর্থিক সংগতি বেশি থাকায় আইসিসিতে এমনিতেই ভারতের দাপট ছিল আগে থেকেই। তবে ব্যাপারটা আনুষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে গত বছর ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থায় তিন মোড়ল নীতির প্রবর্তনে। ইয়ান চ্যাপেল মনে করছেন, এই প্রভাবটাকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করছে না ভারত। উদাহরণ হিসেবে ডিসিশান রিভিউ সিস্টেমের (ডিআরএস) প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন ‘বড়’ চ্যাপেল। বিশ্বের অনেকগুলো দেশই ডিআরএস ব্যবহার করলেও ভারত কখনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ডিআরএস ব্যবহার করে না। এটিকে ভারতের ক্ষমতার দাপট হিসেবেই দেখছেন চ্যাপেল। নিজেও খুব একটা ডিআরএসের গুণগ্রাহী নন। তবু, অন্য সব দেশ যেটি মানছে, সেটি ভারত কেন মানবে না এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন চ্যাপেল, ‘ভারতের এখন অনেক ক্ষমতা। তবে ক্ষমতার সঙ্গে অনেক দায়িত্বও এসে পড়ে। আমি নিজে ডিআরএস পছন্দ করি না, এটাকে বরং ফালতু পদ্ধতি বলেই মনে করি। কিন্তু সেটা অন্য তর্ক। ব্যাপার হচ্ছে, হয় সবাই এটা ব্যবহার করবে, নতুবা কেউই করবে না।’ ভারতের ক্রিকেটে বদলের রূপরেখাও ঠিক করে দিয়েছেন চ্যাপেল, ‘বিসিসিআইতে অনেক বেশিই রাজনীতিবিদ আছে। এঁদেরকে সরিয়ে দেওয়াটা শুরু হিসেবে মন্দ হয় না।’ সেটি না হয় করা গেল। রাজনীতিবিদদের জায়গায় কে আসবেন? সেটিও বলে দিয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান, ‘ক্রিকেট দলে যেমন শুধু ১১ জন বোলার বা ব্যাটসম্যান থাকে না। তেমনি এখানেও শুধু ক্রিকেটার বা শুধু প্রশাসক থাকলে হবে না। একটা প্রশাসনিক বোর্ড ঠিক করা অনেকটা ক্রিকেটে দল নির্বাচনের মতো।’ ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভীরও মানছেন ভালো একটা সমন্বয়ের কথা। তবে তার চেয়েও ভালো লোক নিয়ে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন গম্ভীর, ‘দেখুন ফিফা যাঁরা চালায় তাঁরা সবাই বেশ পেশাদার। কিন্তু সেখানেও কী দুর্নীতি হচ্ছে সেটি তো দেখতেই পাচ্ছেন। তাই যা গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো, সঠিক লোকদের সঠিক জায়গায় নিয়ে আসা।’ সাবেক ভারত অধিনায়ক বিষেন সিং বেদীও বলছেন, বিসিসিআইতে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। পেশাদারি বিচারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে ১০-এ শূন্য দেবেন জানিয়ে বেদি বললেন, ‘বিশ্বাসযোগ্যতা বলতে বিসিসিআইতে কিছু নেই। জবাবদিহিও নেই বললে চলে।’ ভারতীয় দলের প্রভাবশালী ক্রিকেটারদের এসব বিষয়ে আরও জোরালো বক্তব্য রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি। ৭ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/জুবায়ের/রাসেল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে